০৫:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র: ভূমিকম্পই যাকে পুরাতন করে দেয় ভারতের চাল রপ্তানি সীমিতকরণে বিশ্ব বাজারে মূল্যবৃদ্ধি: বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়বে? উপকূলীয় পানির লবণাক্ততা সংকট নিরসনে তরুণদের উদ্ভাবনী দৌড় গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের প্রবেশ থেকে জিম্মিদের মৃত্যুর শেষ দৃশ্য বাংলাদেশে কাঁঠালের উৎপাদন বেশি হলেও রপ্তানি কেন নয়? খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে ‘দলবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ নিয়ে যা জানা যাচ্ছে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়: প্রভাব ও প্রেক্ষাপট প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৬) গোপালগঞ্জের ঘটনায় নিহতদের ময়নাতদন্ত কেন হয়নি, আইনে কী আছে? মানুষ আর মাছের দূরত্ব: এক মাছ বিক্রেতার জীবনের লড়াই

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৬)

অচল সিকি

‘আহারে! তবু যদি রাজধানীতে সাহেবের গাড়ি-বাড়ি আর দু’দশটা দাসী-

বাঁদী থাকতো!’

‘তা না থাকুক, তুমি তো আছো। দু’দশটা বছর তোমার কাঁধে চেপে অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারবো।’

শালবন পার হয়ে ওরা এইবার সরু পিচের রাস্তায় উঠলো। দুপুরের রোদ ধু ধু করছে। কাঠ কুড়োনো রোদে ঝলসানো কালো কালো ছেলেরা হাঁ করে দেখছে ওদের। জেবুন্নেসা বললে, ‘কি কুক্ষণেই এই ভূতে ধরেছিলো, তোমার এই শালবন বিহারে ভুলেও যদি আর কখনো আসি। উহ্, মানুষ আবার এতো হাঁটতে পারে!’

পা টনটন করছিলো এনামুলেরও। পাহাড়ি অঞ্চলে ওদের এ ছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিলো না, একমাত্র সান্ত্বনা এটাই। যাদের সঙ্গে নিজেদের

গাড়ি-ঘোড়া থাকে তাদের কথা আলাদা। ওদের যখন সে সামর্থ্য নেই তখন আবার খেদ কেন।

চারিদিকে আগুনের হলকা ছুটছে। চৈত্র মাস। লালমাটির চিড়বিড়ে ধুলোয় আশ্যাওড়ার পাতাগুলো ঢেকে গিয়েছে। দু’একটি নাম-না-জানা পাখি অন্তহীন খাঁ খাঁ পার্বত্য উষ্ণতার গায়ে মাঝে মাঝে ঠাণ্ডা সবুজ দাগ কেটে উড়ে যাচ্ছে। জেবুন্নেসার মুখের দিকে তাকিয়ে এক সময় ভারি মায়া হলো এনামুলের, তেতে পুড়ে লাল হয়ে গিয়েছে বেচারির মুখ। এতো ঘামা ঘেমেছে যে দেখে মনে হয় যেন এইমাত্র নেয়ে উঠেছে। এনামুল নরোম করে ওর হাত ধরলো। বললে, ‘গাছতলায় বসে একটু জিরিয়ে নেবে রানী।’

‘থামলে আর হাঁটতে পারবো না, একটানা যতো দূর পারা যায় চলো।’

‘ঠিক কথা! দ্যাখো না, কথায় কথায় নিছক কম পথ হাঁটিনি আমরা!’

এরপর রীতিমতো পাল্লা দিয়ে হাঁটতে শুরু করলো দু’জন।

 

পুরাতন ব্রহ্মপুত্র: ভূমিকম্পই যাকে পুরাতন করে দেয়

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৬)

১২:০০:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

অচল সিকি

‘আহারে! তবু যদি রাজধানীতে সাহেবের গাড়ি-বাড়ি আর দু’দশটা দাসী-

বাঁদী থাকতো!’

‘তা না থাকুক, তুমি তো আছো। দু’দশটা বছর তোমার কাঁধে চেপে অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারবো।’

শালবন পার হয়ে ওরা এইবার সরু পিচের রাস্তায় উঠলো। দুপুরের রোদ ধু ধু করছে। কাঠ কুড়োনো রোদে ঝলসানো কালো কালো ছেলেরা হাঁ করে দেখছে ওদের। জেবুন্নেসা বললে, ‘কি কুক্ষণেই এই ভূতে ধরেছিলো, তোমার এই শালবন বিহারে ভুলেও যদি আর কখনো আসি। উহ্, মানুষ আবার এতো হাঁটতে পারে!’

পা টনটন করছিলো এনামুলেরও। পাহাড়ি অঞ্চলে ওদের এ ছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিলো না, একমাত্র সান্ত্বনা এটাই। যাদের সঙ্গে নিজেদের

গাড়ি-ঘোড়া থাকে তাদের কথা আলাদা। ওদের যখন সে সামর্থ্য নেই তখন আবার খেদ কেন।

চারিদিকে আগুনের হলকা ছুটছে। চৈত্র মাস। লালমাটির চিড়বিড়ে ধুলোয় আশ্যাওড়ার পাতাগুলো ঢেকে গিয়েছে। দু’একটি নাম-না-জানা পাখি অন্তহীন খাঁ খাঁ পার্বত্য উষ্ণতার গায়ে মাঝে মাঝে ঠাণ্ডা সবুজ দাগ কেটে উড়ে যাচ্ছে। জেবুন্নেসার মুখের দিকে তাকিয়ে এক সময় ভারি মায়া হলো এনামুলের, তেতে পুড়ে লাল হয়ে গিয়েছে বেচারির মুখ। এতো ঘামা ঘেমেছে যে দেখে মনে হয় যেন এইমাত্র নেয়ে উঠেছে। এনামুল নরোম করে ওর হাত ধরলো। বললে, ‘গাছতলায় বসে একটু জিরিয়ে নেবে রানী।’

‘থামলে আর হাঁটতে পারবো না, একটানা যতো দূর পারা যায় চলো।’

‘ঠিক কথা! দ্যাখো না, কথায় কথায় নিছক কম পথ হাঁটিনি আমরা!’

এরপর রীতিমতো পাল্লা দিয়ে হাঁটতে শুরু করলো দু’জন।