০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৪৬)

অচল সিকি

তোমার মতো মুরোদের মানুষ গাঁ-গেরামের কুমড়ো ক্ষেতে কতো কাত হয়ে পড়ে আছে, দেখোগে-‘

‘আমার মতো মাসে দেড়শো টাকার সিগ্রেটখানেওলা একটাও দেখাতে পারবে?’

‘ইশ। ভারি গর্বের কথা আর কি! যার নেই উত্তরপূর্ব, তার মনে সদাই সুখ। তোমার চেয়ে যেকোনো সাধারণ পানবিড়িওলা বেশি রোজগার করে তা মনে রেখো। নেশাখুরির কথা শুনলে পিত্তি জ্বলে যায়।’

‘আহা আমি তো আর অস্বীকার করছি না। তোমার জন্যে আমার পানবিড়িওলা হয়ে জন্মানোই উচিত ছিলো।’

‘জন্মোছো কসাই হয়ে-‘

‘গরু-ছাগলের সঙ্গে সম্পর্ক।’

‘দ্যাখো, মুখ সামলে কথা বোলো!’

‘কেন, মারবে নাকি?’

‘শুধু বাজে কথা, শুধু বাজে কথা! আমাকে তো এখনো চেনোনি, আমি সব পারি-‘

‘তা পারো।’

‘তা পারো, মানে?’

‘জঘন্য কথা আমার ঠোঁটে আসে না রানী?’

‘মাগো!’

‘আমি ভদ্রঘরের সন্তান, অর্থাৎ এনামুল সৈয়দ, অর্থাৎ-‘

‘অর্থাৎ- ফর্থাৎ বুঝি না, সন্দেহ আছে তোমার সৈয়দে! সন্দেহ আছে বলেই শেষে লেখো। এরকম লোকের ঘর করা শক্ত, অতিষ্ঠ করে তুলেছে, বাবারে বাবা, ঢাকায় ফিরেই আমি ডাইভোর্স নেবো।’

‘তবু ভালো, নেবে-‘

‘দেবো!’

‘চেষ্টা করে দেখলে খুশি হবো!’

‘বেশ, খুশি হয়ো!’

এনামুল এবার ওর একটা হাত ধরলো, বুঝলো বেশি হয়ে যাচ্ছে; স্ত্রীলোকের মেজাজ, এর চেয়ে কাচের পিরিচ নিয়ে খেলা অনেক সুবিধের, অনেক কম ভয়ের। বললে, ‘সত্যি বলছি, রাগলে অদ্ভুত লাগে তোমাকে। মুখের চেহারা ভোজবাজির মতো পাল্টে গেছে! আহা এই রঙ যদি সবসময় থাকতো।’

 

 

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৪৬)

১২:০০:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

অচল সিকি

তোমার মতো মুরোদের মানুষ গাঁ-গেরামের কুমড়ো ক্ষেতে কতো কাত হয়ে পড়ে আছে, দেখোগে-‘

‘আমার মতো মাসে দেড়শো টাকার সিগ্রেটখানেওলা একটাও দেখাতে পারবে?’

‘ইশ। ভারি গর্বের কথা আর কি! যার নেই উত্তরপূর্ব, তার মনে সদাই সুখ। তোমার চেয়ে যেকোনো সাধারণ পানবিড়িওলা বেশি রোজগার করে তা মনে রেখো। নেশাখুরির কথা শুনলে পিত্তি জ্বলে যায়।’

‘আহা আমি তো আর অস্বীকার করছি না। তোমার জন্যে আমার পানবিড়িওলা হয়ে জন্মানোই উচিত ছিলো।’

‘জন্মোছো কসাই হয়ে-‘

‘গরু-ছাগলের সঙ্গে সম্পর্ক।’

‘দ্যাখো, মুখ সামলে কথা বোলো!’

‘কেন, মারবে নাকি?’

‘শুধু বাজে কথা, শুধু বাজে কথা! আমাকে তো এখনো চেনোনি, আমি সব পারি-‘

‘তা পারো।’

‘তা পারো, মানে?’

‘জঘন্য কথা আমার ঠোঁটে আসে না রানী?’

‘মাগো!’

‘আমি ভদ্রঘরের সন্তান, অর্থাৎ এনামুল সৈয়দ, অর্থাৎ-‘

‘অর্থাৎ- ফর্থাৎ বুঝি না, সন্দেহ আছে তোমার সৈয়দে! সন্দেহ আছে বলেই শেষে লেখো। এরকম লোকের ঘর করা শক্ত, অতিষ্ঠ করে তুলেছে, বাবারে বাবা, ঢাকায় ফিরেই আমি ডাইভোর্স নেবো।’

‘তবু ভালো, নেবে-‘

‘দেবো!’

‘চেষ্টা করে দেখলে খুশি হবো!’

‘বেশ, খুশি হয়ো!’

এনামুল এবার ওর একটা হাত ধরলো, বুঝলো বেশি হয়ে যাচ্ছে; স্ত্রীলোকের মেজাজ, এর চেয়ে কাচের পিরিচ নিয়ে খেলা অনেক সুবিধের, অনেক কম ভয়ের। বললে, ‘সত্যি বলছি, রাগলে অদ্ভুত লাগে তোমাকে। মুখের চেহারা ভোজবাজির মতো পাল্টে গেছে! আহা এই রঙ যদি সবসময় থাকতো।’