অচল সিকি
জেবুন্নেসা বললে, ‘এতো সিরিয়াস হচ্ছো কেন? এমনিই বললাম-‘
চা-বিস্কুট বাবদ আট আনা হলো ওদের। এনামুল দিতে যাচ্ছিলো, জেবুন্নেসা বাধা দিলো। বললে, ‘থাক, খুব হয়েছে, আর কেদ্দানি দেখাতে হবে না, আমি দিচ্ছি! দু’দিন পরেই তো হাত পাতবে!’
বুড়ো বললে, ‘আন্নেরা ক্যামনে যাইতেন, ধুপখান কি!’
কি!’ জেবুন্নেসা বললে, ‘একটু কষ্ট হবে বৈকি, কিন্তু এছাড়া আর উপায়ইবা
অন্যসব দিন দু’একটা রিকশা দেখা যায়। কপাল খারাপ তাদের, আজ একটাকেও দেখা গেল না।
এনামুল উঠে দাঁড়িয়ে বললে, ‘নানামিয়া তাহলে চলি, আবার যদি আসি তাহলে, নিশ্চয়ই এখানে চা খাবো-‘
‘আল্লা ভরসা-‘
হাঁটতে হাঁটতে এনামুল বললে, ‘এখন কিন্তু খুব একটা খারাপ লাগছে না। ভালোই হয়েছে জিরিয়ে নিয়ে। আসলে হাঁটতে হাঁটতে খিদেও কম লাগেনি।
চা খেয়ে মরে গেছে খিদেটা, তুমি কি বলো?’
জেবুন্নেসা বললে, ‘এই ধরনের বেড়ানোয় এরপর থেকে সঙ্গে খাবার থাকবে। কতোবার বললাম, সঙ্গে টিফিন ক্যারিয়ার নিই, কানে তুললে না কথাটা। তোমার মতো ছাইপাঁশ গেলা বাহাদুর তো আর সবাই নয়-‘
‘কিন্তু এই রকম হওয়া উচিত।’
‘ভারি আমার-‘
‘কি থামলে কেন, তোমাকে কিন্তু খুব সুন্দর দেখাচ্ছে রানী।’
‘দেখাচ্ছে মানে কি? আমি সুন্দরী নই এই কথা তো?’
‘বাকা কথা বললে আমি রানী বলে চিৎকার করবো-‘
‘ইশ।’
‘রানী-রানী-রানী-ই-ই-ই-ই-ই-‘
সত্যি-সত্যিই চিৎকার করে উঠলো এনামুল।
‘এই, তোমার কি মাথাটাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি? করছো কি তুমি?’
‘চারিদিক ফাঁকা, কোথাও কেউ নেই, লজ্জা কি-‘
‘একটা কথা বলবে?’
মাহমুদুল হক 



















