ব্রাজিলকে ৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের, রাজনৈতিকভাবে বলসোনারোর পক্ষে অবস্থান?
বিবিসি,
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের উপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ব্রাজিল মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর উপর ‘আক্রমণ’ চালাচ্ছে এবং সাবেক কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে ‘উইচ হান্ট’ চালাচ্ছে, যিনি ২০২২ সালের নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি।
এই ঘোষণাটি ব্রাজিলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকে মনে করছেন, এটি বলসোনারোর প্রতি ট্রাম্পের খোলাখুলি সমর্থনের ইঙ্গিত। বলসোনারোর পুত্র এডুয়ার্দো যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহলে সমর্থন জোগাড়ে সক্রিয়।
ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ট্রাম্পের মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়ে বলেছেন, “ব্রাজিল একটি সার্বভৌম দেশ এবং কোনও বিদেশি তত্ত্বাবধান মেনে নেবে না।”
বাণিজ্য ঘাটতির দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের অন্যতম বড় অংশীদার। এই শুল্ক যুদ্ধ ব্রাজিলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত কমলা, কফি ও গরুর মাংসের মতো কৃষিপণ্য রপ্তানিতে।
রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি আরও জটিল। ট্রাম্পের হুমকি বলসোনারোর সমর্থকদের কাছে একটি আশীর্বাদ হয়ে এলেও এটি লুলার পক্ষে জাতীয়তাবাদী আবেগ উস্কে দিতে পারে।
থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়ার সীমান্ত বিরোধে মধ্যস্থতার প্রস্তাব চীনের
রয়টার্স,
চীন থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত বিরোধ মেটাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে এবং উভয় দেশকে শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সানজিয়ামপংসার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই প্রস্তাব দেন।
গত মে মাসে একটি সংঘর্ষে একজন কাম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। কাম্বোডিয়া ইতিমধ্যে বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে তুলেছে।
ওয়াং ই পৃথকভাবে কাম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও দেখা করেন এবং চীন এ বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকবে বলে জানান। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী অপরাধ যেমন অনলাইন জুয়া, জালিয়াতি, চোরাচালান এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি এও বলেন, মার্কিন শুল্ক চাপের মধ্যেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এই জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম এবং চীনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
শুল্ক নিয়ে আলোচনায় ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস
চ্যানেল নিউজ এশিয়া,
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র চলতি মাসে ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা লাজারো। সাক্ষাতে সাম্প্রতিক ২০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনার মূল অংশ হবে।
২০২৪ সালে ফিলিপাইন-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৪.৯ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২১.৮ শতাংশ বেশি।
মার্কোসের সময়ে ফিলিপাইন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত হয়েছে। মার্কিন সেনারা এখন ফিলিপাইনের ঘাঁটিতে অবস্থান করছে, যা চীনকে ক্ষুব্ধ করেছে।
দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে মার্কোসের চীনবিরোধী অবস্থান ওয়াশিংটনের সমর্থন পেয়েছে।
তবে লাজারো বলেছেন, আসিয়ান ও চীনের মধ্যকার সমুদ্রচুক্তি নিয়ে আলোচনা অগ্রসর হচ্ছে না, যা আগামী বছর ফিলিপাইন আসিয়ান চেয়ার হওয়ার সময় চূড়ান্ত করতে চায়।
আল-কায়েদার সঙ্গে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের কোন সক্রিয় সম্পর্ক নেই: জাতিসংঘ প্রতিবেদন
রয়টার্স,
জাতিসংঘের একটি খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বদানকারী ইসলামি গোষ্ঠী হায়াৎ তাহরির আল-শামের (HTS) সঙ্গে আল-কায়েদার কোনো সক্রিয় সম্পর্ক নেই। ২০১৬ সালে HTS আল-কায়েদার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এবং ২০২৪ সালে তারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে।
এই প্রতিবেদন ট্রাম্প প্রশাসনের HTS ও নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার উপর থেকে মার্কিন সন্ত্রাসী তকমা ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পদক্ষেপকে সমর্থন করতে পারে।
চীন ও রাশিয়া HTS-এর মধ্যে বিদেশি জঙ্গিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রায় ৫,০০০ বিদেশি যোদ্ধা এখনো সিরিয়ায় অবস্থান করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু HTS সদস্য এখনো চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী, তবে শারার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস খাত্তাবকে তুলনামূলকভাবে বাস্তববাদী নেতা হিসেবে দেখা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র HTS সদস্যদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা সমর্থন করলেও এতে অভ্যন্তরীণ বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক বিদেশি যোদ্ধা এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে এবং শারার জীবন এখন হুমকির মুখে রয়েছে।
সুদানের দারফুরে এখনও যুদ্ধাপরাধ চলছে: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC)
এপি নিউজ,
দারফুর অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এখনও চলছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উপ-প্রধান কৌঁসুলি নাজহাত শামীম খান বলেছেন, বর্তমানে দারফুরে পরিস্থিতি সহনশীলতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে।
ক্ষুধার্ত মানুষ, চিকিৎসা ও খাদ্য থেকে বঞ্চিত নাগরিক এবং সংঘাত কবলিত এলাকায় নারীদের উপর যৌন সহিংসতা ও অপহরণ এখন নিয়মিত ঘটনা।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (RSF)-এর মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত এবং ১.৩ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সাম্প্রতিক তদন্তে ICC জানিয়েছে, দারফুরের এল ফাশের শহর ও আশেপাশের অঞ্চলে RSF এর আগ্রাসী তৎপরতা স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, দুই দশক আগে দারফুর গণহত্যার জন্য কুখ্যাত জানজাওয়িদ নেতা আলি কুশাইব বর্তমানে ICC-তে বিচারের মুখোমুখি। আইসিসি জানিয়েছে, দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।