০৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
হত্যার নানান রূপঃ অন্ধকারের দিকে গতি মংলা নদী: দুই শতকের ইতিহাস, বাণিজ্য, সভ্যতা আর সংস্কৃতির জলছাপ ‘মব ভায়োলেন্স’ থামানো যাচ্ছে না কেন সেন্ট মার্টিনে স্বাস্থ্যসেবা সংকট তৈরি কি যথাযথ মানবাধিকারের মধ্যে পড়ছে? ২৫ জেলায় আংশিক বন্যা – ক্ষয়ক্ষতি কয়েক হাজার কোটি টাকায় মব হত্যা ঠেকাতে এখনই চাই কঠোর ব্যবস্থা—জিএম কাদের এশিয়ায় ক্যানসার চিকিৎসা: শীর্ষ ৫টি কেন্দ্র ও খরচের বিবরণ গানপ্রেমীদের জন্য প্রিয়াংকার কন্ঠে ‘আজি নেমেছে আঁধার’ এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: জ্বালানির সুইচ নিয়ে ককপিটে বিভ্রান্তি খালি পায়ের ডাক্তার: বাংলাদেশের গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবার নীরব বিপ্লব

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন: ‘ফুয়েল সুইচ’ কেটে দেওয়া অবস্থায় ছিল

Ahmedabad: Wreckage of the crashed Air India plane being lifted through a crane, in Ahmedabad, Gujarat, Saturday, June 14, 2025. The London-bound Air India flight, a Boeing 787 Dreamliner (AI 171) with 242 people on board, crashed into a medical hostel and its canteen complex in the Meghaninagar area on Thursday afternoon, moments after taking off from the Sardar Vallabhbhai Patel International Airport. (Kunal Patil/PTI via AP)

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI171 এর ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)। এতে বলা হয়েছে, ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের ঠিক কয়েক সেকেন্ড পর উভয় ইঞ্জিনেই শক্তি হারিয়ে যায়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো ‘RUN’ থেকে ‘CUTOFF’ অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয় মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে। এতে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হন— এর মধ্যে বিমানে থাকা প্রায় সব ২৪২ জন যাত্রী এবং মাটিতে থাকা কয়েকজন।

AAIB জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি শনাক্ত হয়নি এবং বোয়িং বা ইঞ্জিন নির্মাতা GE এর জন্য কোনো নিরাপত্তা সুপারিশও দেওয়া হয়নি। তদন্ত চলমান রয়েছে, এবং আরও প্রমাণ, রেকর্ড ও দুর্ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

ককপিটের ভয়েস রেকর্ডিং, ফ্লাইট ডেটা এবং ঘটনাস্থলের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি এ প্রতিবেদনটি গত এক দশকের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিক ধারণা দিয়েছে। এটি টাটা গ্রুপের মালিকানায় পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বড় এক সংকট হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

বোয়িং, যার ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেল প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হলো এ দুর্ঘটনায়, এ বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেনি। এয়ার ইন্ডিয়াও এ প্রতিবেদন নিয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

লন্ডনগামী এ বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের পরপরই এয়ারপোর্টের কাছে ঘনবসতিপূর্ণ একটি আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে। কেবল একজন যাত্রী— ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাসকুমার রমেশ— বিমানের দেহে ছিঁড়ে যাওয়া অংশ দিয়ে বেরিয়ে বেঁচে যান।

প্রাথমিক প্রতিবেদনের প্রধান কিছু বিষয়

ফুয়েল কেটে দেওয়া: বিমানের ব্ল্যাক বক্সের তথ্য অনুযায়ী, উভয় ইঞ্জিনের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ ‘RUN’ থেকে ‘CUTOFF’ অবস্থায় সরানো হয়— একটির পর আরেকটি, মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে। এতে উড্ডয়নের প্রাথমিক ধাপে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ককপিটের বিভ্রান্তি: ভয়েস রেকর্ডিং থেকে পাওয়া রেকর্ডে শোনা যায়, এক পাইলট অন্যজনকে জিজ্ঞেস করছে, “তুমি কেন কেটে দিলে?” অন্যজন জবাব দেয়, “আমি দিইনি।” কারা ক্যাপ্টেন বা কো-পাইলট, তা স্পষ্ট নয়।

ইঞ্জিন প্রতিক্রিয়া: সুইচগুলো আবার ‘RUN’ অবস্থায় আনা হলে ইঞ্জিন ১ কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়। ইঞ্জিন ২ পুনরায় প্রজ্বলিত হলেও পর্যাপ্ত শক্তি ফেরাতে পারেনি, যার ফলে গতিশক্তি হারিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

বার্ড-স্ট্রাইক নয়: এয়ারপোর্টের সিসিটিভি ফুটেজে বিমানের রুটে কোনো উল্লেখযোগ্য পাখির উপস্থিতি দেখা যায়নি। ফলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা বার্ড-স্ট্রাইকের সম্ভাবনা বাতিল করা হয়েছে।

শক্তি হারানোর প্রমাণ: টেকঅফের পরপরই বিমানের Ram Air Turbine (RAT) মোতায়েন হয়— যা পুরো শক্তি হারালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হয়ে আসে।

ফ্ল্যাপ ও গিয়ার স্বাভাবিক: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড্ডয়নের সময় ফ্ল্যাপ পাঁচ ডিগ্রিতে এবং ল্যান্ডিং গিয়ার স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল।

তোড়াজোড় বা নাশকতার প্রমাণ নেই: কোনো ধরনের নাশকতার প্রমাণ মেলেনি। প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের FAA এর একটি পরামর্শের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বোয়িং এর কিছু মডেলে ফুয়েল সুইচ লকিং মেকানিজমে সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল— তবে সে সময় এটি বাধ্যতামূলক পরিদর্শন হিসেবে নির্ধারিত হয়নি এবং এয়ার ইন্ডিয়া এ ধরনের পরিদর্শন করেনি।

দুর্ঘটনার সময়রেখা: বিমানটি আকাশে ছিল মাত্র ৩২ সেকেন্ড এবং ০.৯ নটিক্যাল মাইল দূরত্ব অতিক্রম করেই দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে স্থানীয় সময়ে বাইরামজি জিজিবয় মেডিকেল কলেজ হোস্টেল কমপ্লেক্সে বিধ্বস্ত হয়।

এখনো কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েনি

AAIB বলেছে, এখনো বোয়িং বা GE এর জন্য কোনো সুপারিশ করা হচ্ছে না, যা বোঝায় যে বিমানের কাঠামো বা সিস্টেমে কোনো স্পষ্ট ত্রুটি এখনো পাওয়া যায়নি।

তদন্ত চলমান রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের ধ্বংসাবশেষ আলাদা করে রাখা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশবিশেষ পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত আছে। মূলত ককপিটের পদ্ধতি, মানবিক ভুল বা ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ সংক্রান্ত যান্ত্রিক গোলযোগের দিকেই তদন্তের ফোকাস থাকবে।

ভুক্তভোগী ও পরবর্তী পরিস্থিতি

বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে নিহতদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ, ১ জন কানাডিয়ান এবং ১২ জন ক্রু। এটি গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এতে পাইলট প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ প্রোটোকল এবং নিরাপত্তা তদারকি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। AAIB এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রকাশিত হওয়ার কথা।

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ দুর্ঘটনা – প্রধান তথ্য

ফ্লাইটের বিবরণ: এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল ১২ জুন।

মৃত্যু: ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন নিহত হন; মাটিতে থাকা কয়েকজনকে নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬০।

দুর্ঘটনাস্থল: বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি জরুরি ‘মেডে’ বার্তা পাঠানোর পরপরই BJ মেডিকেল কলেজ ও সিভিল হাসপাতালের ডাক্তারদের আবাসনে বিধ্বস্ত হয়।

একমাত্র জীবিত: ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাসকুমার রমেশ অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।

যাত্রীদের জাতীয়তা: বিমানে ছিলেন ১৬৯ ভারতীয়, ৫৩ ব্রিটিশ, ৭ পর্তুগিজ, ১ কানাডিয়ান এবং ১২ ক্রু।

তদন্ত: ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) এ দুর্ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্ত পরিচালনা করছে।

হত্যার নানান রূপঃ অন্ধকারের দিকে গতি

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন: ‘ফুয়েল সুইচ’ কেটে দেওয়া অবস্থায় ছিল

০৩:২০:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI171 এর ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)। এতে বলা হয়েছে, ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের ঠিক কয়েক সেকেন্ড পর উভয় ইঞ্জিনেই শক্তি হারিয়ে যায়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো ‘RUN’ থেকে ‘CUTOFF’ অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয় মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে। এতে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হন— এর মধ্যে বিমানে থাকা প্রায় সব ২৪২ জন যাত্রী এবং মাটিতে থাকা কয়েকজন।

AAIB জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি শনাক্ত হয়নি এবং বোয়িং বা ইঞ্জিন নির্মাতা GE এর জন্য কোনো নিরাপত্তা সুপারিশও দেওয়া হয়নি। তদন্ত চলমান রয়েছে, এবং আরও প্রমাণ, রেকর্ড ও দুর্ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

ককপিটের ভয়েস রেকর্ডিং, ফ্লাইট ডেটা এবং ঘটনাস্থলের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি এ প্রতিবেদনটি গত এক দশকের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিক ধারণা দিয়েছে। এটি টাটা গ্রুপের মালিকানায় পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বড় এক সংকট হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

বোয়িং, যার ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেল প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হলো এ দুর্ঘটনায়, এ বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেনি। এয়ার ইন্ডিয়াও এ প্রতিবেদন নিয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

লন্ডনগামী এ বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের পরপরই এয়ারপোর্টের কাছে ঘনবসতিপূর্ণ একটি আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে। কেবল একজন যাত্রী— ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাসকুমার রমেশ— বিমানের দেহে ছিঁড়ে যাওয়া অংশ দিয়ে বেরিয়ে বেঁচে যান।

প্রাথমিক প্রতিবেদনের প্রধান কিছু বিষয়

ফুয়েল কেটে দেওয়া: বিমানের ব্ল্যাক বক্সের তথ্য অনুযায়ী, উভয় ইঞ্জিনের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ ‘RUN’ থেকে ‘CUTOFF’ অবস্থায় সরানো হয়— একটির পর আরেকটি, মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে। এতে উড্ডয়নের প্রাথমিক ধাপে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ককপিটের বিভ্রান্তি: ভয়েস রেকর্ডিং থেকে পাওয়া রেকর্ডে শোনা যায়, এক পাইলট অন্যজনকে জিজ্ঞেস করছে, “তুমি কেন কেটে দিলে?” অন্যজন জবাব দেয়, “আমি দিইনি।” কারা ক্যাপ্টেন বা কো-পাইলট, তা স্পষ্ট নয়।

ইঞ্জিন প্রতিক্রিয়া: সুইচগুলো আবার ‘RUN’ অবস্থায় আনা হলে ইঞ্জিন ১ কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়। ইঞ্জিন ২ পুনরায় প্রজ্বলিত হলেও পর্যাপ্ত শক্তি ফেরাতে পারেনি, যার ফলে গতিশক্তি হারিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

বার্ড-স্ট্রাইক নয়: এয়ারপোর্টের সিসিটিভি ফুটেজে বিমানের রুটে কোনো উল্লেখযোগ্য পাখির উপস্থিতি দেখা যায়নি। ফলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা বার্ড-স্ট্রাইকের সম্ভাবনা বাতিল করা হয়েছে।

শক্তি হারানোর প্রমাণ: টেকঅফের পরপরই বিমানের Ram Air Turbine (RAT) মোতায়েন হয়— যা পুরো শক্তি হারালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হয়ে আসে।

ফ্ল্যাপ ও গিয়ার স্বাভাবিক: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড্ডয়নের সময় ফ্ল্যাপ পাঁচ ডিগ্রিতে এবং ল্যান্ডিং গিয়ার স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল।

তোড়াজোড় বা নাশকতার প্রমাণ নেই: কোনো ধরনের নাশকতার প্রমাণ মেলেনি। প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের FAA এর একটি পরামর্শের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বোয়িং এর কিছু মডেলে ফুয়েল সুইচ লকিং মেকানিজমে সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল— তবে সে সময় এটি বাধ্যতামূলক পরিদর্শন হিসেবে নির্ধারিত হয়নি এবং এয়ার ইন্ডিয়া এ ধরনের পরিদর্শন করেনি।

দুর্ঘটনার সময়রেখা: বিমানটি আকাশে ছিল মাত্র ৩২ সেকেন্ড এবং ০.৯ নটিক্যাল মাইল দূরত্ব অতিক্রম করেই দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে স্থানীয় সময়ে বাইরামজি জিজিবয় মেডিকেল কলেজ হোস্টেল কমপ্লেক্সে বিধ্বস্ত হয়।

এখনো কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েনি

AAIB বলেছে, এখনো বোয়িং বা GE এর জন্য কোনো সুপারিশ করা হচ্ছে না, যা বোঝায় যে বিমানের কাঠামো বা সিস্টেমে কোনো স্পষ্ট ত্রুটি এখনো পাওয়া যায়নি।

তদন্ত চলমান রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের ধ্বংসাবশেষ আলাদা করে রাখা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশবিশেষ পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত আছে। মূলত ককপিটের পদ্ধতি, মানবিক ভুল বা ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ সংক্রান্ত যান্ত্রিক গোলযোগের দিকেই তদন্তের ফোকাস থাকবে।

ভুক্তভোগী ও পরবর্তী পরিস্থিতি

বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে নিহতদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ, ১ জন কানাডিয়ান এবং ১২ জন ক্রু। এটি গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এতে পাইলট প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ প্রোটোকল এবং নিরাপত্তা তদারকি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। AAIB এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রকাশিত হওয়ার কথা।

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ দুর্ঘটনা – প্রধান তথ্য

ফ্লাইটের বিবরণ: এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল ১২ জুন।

মৃত্যু: ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন নিহত হন; মাটিতে থাকা কয়েকজনকে নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬০।

দুর্ঘটনাস্থল: বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি জরুরি ‘মেডে’ বার্তা পাঠানোর পরপরই BJ মেডিকেল কলেজ ও সিভিল হাসপাতালের ডাক্তারদের আবাসনে বিধ্বস্ত হয়।

একমাত্র জীবিত: ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাসকুমার রমেশ অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।

যাত্রীদের জাতীয়তা: বিমানে ছিলেন ১৬৯ ভারতীয়, ৫৩ ব্রিটিশ, ৭ পর্তুগিজ, ১ কানাডিয়ান এবং ১২ ক্রু।

তদন্ত: ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) এ দুর্ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্ত পরিচালনা করছে।