সমকালের একটি শিরোনাম “দলে শুদ্ধি অভিযান চালাবে বিএনপি, দুষছে পুলিশকেও”
আজীবন বহিষ্কারসহ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পরও লাগাম টানা যাচ্ছে না বিএনপির একশ্রেণির নেতাকর্মীদের। এই নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, দখল এমনকি খুনের মতো গুরুতর অভিযোগে বিব্রত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী নির্বাচনে এসব ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা নেতাদের। এ অবস্থায় দলের তৃণমূল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
দলীয় সূত্র জানায়, শুদ্ধি অভিযানে ৫ আগস্টের পর দলে আসা সুবিধাভোগী নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি যারা দলের সর্বোচ্চ সতর্কতা উপেক্ষা করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলখ্যাত জেলাগুলোতে এই সাংগঠনিক অভিযানে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত বুধবার সংঘটিত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে দলের লোকজনের নাম আসায় এর দায়ভার দলকেই নিতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে অন্তত ১০ জনকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে দল।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দলের চেইন অব কমান্ড ঠিক রাখতে অচিরেই জেলা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অচিরেই এটা শুরু হবে।
মিটফোর্ডের ঘটনার বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, হত্যার ঘটনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অভিযুক্ত সদস্যদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও বিএনপির ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। এটা পরিকল্পিত ও নোংরা অপরাজনীতি।
মিটফোর্ডের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মিছিল-সভা হয়েছে। গতকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। বিএনপি মনে করছে, এর মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততার চেয়ে বেশি বিশেষ রাজনৈতিক ইন্ধন। তবে দলটি এই ধারাকে মুখোমুখি না হয়ে পর্যবেক্ষণ করবে বলে জানিয়েছে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “অফিস খরচের নামে ২০ শতাংশ বরাদ্দ কর্তন”
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের টিআর-কাবিখা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মির্জা হাকিমুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ২০ শতাংশ অর্থ অফিস খরচের নাম করে রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্দুলবাড়িয়া ইউপির টিআর ও কাবিখা বাবদ ৫০ লাখ ২০ হাজার, উন্নয়ন সহায়তায় ১৫ লাখ ৯ হাজার ৬০০, বিশেষ বরাদ্দে ১০ লাখ ও এডিপি থেকে ৬ লাখসহ মোট ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যান হাকিমুর ভ্যাট-আয়কর বা অফিস খরচের নাম করে ইউপি সদস্যদের চাপ দিয়ে অর্থ আদায় করেছেন। বিশেষ করে টিআর ও কাবিখা প্রকল্প থেকে ২০ শতাংশ টাকা কেটে নিয়েছেন তিনি।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে মেম্বার। আগেও টিআর-কাবিখার কাজ করেছি। অফিস কোনো টাকা নেয়নি। এবার চেয়ারম্যান হাকিমুর রহমান লিটন অফিস খরচের নাম করে প্রত্যেক মেম্বারের কাজ থেকে ২০ শতাংশ করে টাকা নিয়েছেন। এটা সব মেম্বারই জানেন। হয়তো কেউ স্বীকার করবেন, কেউ করবেন না।’
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “হত্যাকারীদের অন্য কোথাও থেকে আনা হয়”
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগের হত্যাকারীকে অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, পুরান ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটে গেছে, যে ছেলেটি মারা গেছে তার সঙ্গে হয়তো যুবদলের সম্পর্ক আছে। যে খুন করছে বা যে হত্যা করছে- আমরা যেটা খবর পেয়েছি, তাকে অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে ধরা হচ্ছে না। গ্রেপ্তার করা হলো অন্যদের। তাকে মনে হয় এখন পর্যন্ত আসামি করা হয়নি। কেন হয়নি, কেন ধরা হচ্ছে না?
শনিবার রাজধানীর গুলশানে লেক শোর গ্র্যান্ড হোটেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সংগঠনের শহীদদের স্মরণে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের বক্তব্য শুনেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাদের বক্তব্যের বিভিন্ন প্রশ্নের তাৎক্ষণিক জবাব দেন। বিভিন্ন দাবি পূরণে প্রতিশ্রুতি দেন।
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে একবারও বলা হয়নি, অমুককে ধরা যাবে, তমুককে ধরা যাবে না। একবারও এই কথা বলা হয়নি। আমরা বরাবরই বলেছি, অন্যায়কারীর আইনের দৃষ্টিতে তার বিচার হবে। দলের সঙ্গে তার কি সম্পর্ক, কিছু যায় আসে না তাতে। তাকে দল কোনো রকম প্রশ্রয় দেবে না। কেউ যদি কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে তাকে প্রশাসন ধরছে না কেন?
তিনি বলেন, এখানে রিজভী সাহেব পরিষ্কার বলেছেন, দলীয় অবস্থান থেকে আমাদের যা যা করা প্রয়োজন, আমরা যেটি যেটি জেনেছি, তদন্তের পরে যাদের যাদের সম্পর্কে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে- আমরা আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাহলে কেন বসে আছেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চালায় কে? বিএনপি তো চালায় না? চালাচ্ছে তো সরকার। তাহলে সরকার কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? সেটি দলের হোক কিংবা অন্য কোনো লোকই হোক। কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, নতুন করে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমাদের সকলকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আমাদের যে আন্দোলন, আমাদের যে যুদ্ধ ছিল- সেই যুদ্ধ কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে ট্রাম্পের ওপর”
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দফায় তিন দিনব্যাপী বাণিজ্য আলোচনা গতকাল শেষ হয়েছে। বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। তবে কয়েকটি বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে বলে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশী পণ্য রফতানিতে উচ্চহারে ধার্য শুল্ক কমানোর বিষয়টি অবশ্য ফলপ্রসূ হয়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করে অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক হ্রাসের বিষয়টি নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর। তিনি চাইলেই কেবল এটি হতে পারে। তাছাড়া শুল্কের বিষয় আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তটিও ট্রাম্পের। তাই এখনো আশা ছাড়ছে না বাংলাদেশ।
ওয়াশিংটনে ৯-১১ জুলাই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়। শুরুর দিন এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর ইউএসটিআরের আমন্ত্রণে ‘এগ্রিমেন্ট অন রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ শীর্ষক দরকষাকষির দ্বিতীয় দফার আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে জানানো হয়, দ্বিতীয় দফায় প্রথম দিন ‘শুল্ক’ আলোচনার পরিসর ছিল বিস্তৃত, যেখানে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে।
দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, ‘শুল্ক’ আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে সেসব বিষয় উপস্থাপন ও যুক্তিতর্ক হয়। বেশকিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অবশ্য অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তৃতীয় ও শেষ দিনের বৈঠক শেষে গতকাল জানানো হয়, দ্বিতীয় দফার ‘বাণিজ্য’ আলোচনার তৃতীয় ও শেষ দিনে আরো কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। তবে কয়েকটি বিষয় এখনো অমীমাংসিত।
সূত্র জানিয়েছে, তিনদিনের আলোচনায় মূলত বাণিজ্যিক বিধিমালার বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। আর এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে। বৈঠকে সরাসরি অংশ নেয়া বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আলোচনা এখন পর্যন্ত একটা পজিটিভ জায়গায় আছে। ফাইনালি (চূড়ান্তভাবে) কী হবে বলা মুশকিল।’