০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৫)

কেরোসিনের টান সহ ও লাকুড় ইত্যাদি সহ নদীর দক্ষিণ নৌকাযোগে উপস্থিত হইলেন।

কিন্তু যে রকম বাত্যার জোর দেখিতেছি নবাবের ছাতে নামা যাইবে কি না সন্দেহ, বাস্তবিক সে সময় ধূ ধূ শব্দে অত্যন্ত বেগে দক্ষিণ প্রভঞ্জন বহিতেছিল। আর ঐ যুব ইউরুপীয়ান বলিয়াছিল যে, আমি ও আমার মা বেলুনে উড়িতে অভ্যস্ত, কিন্তু আমার ভগিনী পরিপক্ব নহে। কখনও কখনও সে উড়িয়াছে বটে, কিন্তু পরিপক্ব হয় নাই। কিন্তু সে নবাবের পারিতোষিকের আশায় উড়িবার সংকল্প করিয়াছে।

আমি ও আমার মা তাহাকে বুঝাইয়া আমরা দুইজন হইতে একজন উড়িবার চেষ্টা করিতেছি, দেখা যাউক কী হয়। নবাব সাহেব ১০,০০০ দশ হাজার টাকার চুক্তিতে ইংলন্ড হইতে আমাদিগকে একবার মাত্র উড়াইবার জন্য আনাইয়াছেন কিন্তু এখন তিনি বলিতেছেন যে, তোমরা নদীর ঐপার হইতে উড়িয়া আসিয়া আমার ছাতে নামিতে হইবে।

সেকালের পত্রিকায় প্রকাশিত জিনেটের মৃত্যুর খবর 

আমার মেয়েছেলেরা দেখিতে চায়, আমরা বলিলাম যেরকম বাত্যার জোর দেখা যাইতেছে, আপনার ছাতে নামিতে পারিব বলিয়া গ্রান্টি দিতে পারি না। তিনি বলিলেন ঐরূপ করিতে পারিলে তোমাদিগকে আরও পুরস্কৃত করিব। আমরা বলিলাম কত টাকা? তিনি বলিলেন ৪৫০০ সাড়ে চারি হাজার টাকা আরও দিব। ইতিমধ্যে আমার ভগ্নি বলিয়া উঠিল আরও ৫০০০, পাঁচ হাজার টাকা দেন, ছাতে নামিতে পারি কি না, আছি উড়িয়া ছাতে নামার চেষ্টা করিব।

এইমাত্র কথা হইয়াছে তখন জনশ্রুতি মধ্যে মুখে ২ এই কথাসমূহ প্রচার হইয়া যাওয়ায় নৌকা করিয়া বহু লোক দক্ষিণ পারে যাইতে আরম্ভ করিল। বের কেহবা নৌকা করিয়া নদীতে নৌকা রাখিয়া তামাসা দেখিবার চেষ্টা পাইতে লাগিল। আমরাও এক নৌকা করিয়া নদীর মধ্যভাগে যাইয়া রহিলাম। ইতিমধ্যে বেলুন পরিচালক ইউরুপীয়ানত্রয় কতিপয় লোকসহ ও বেলুনসহ অন্যান্য আসবাবপত্রাদি লইয়া নদীর দক্ষিন পাড়ে বহুতর কেরোসিনের টান সহ ও লাকুড় ইত্যাদি সহ নদীর দক্ষিণ নৌকাযোগে উপস্থিত হইলেন।

ও বেলুনের চতুঃপার্শ্বস্থ রশি খুট্যসকল বেলুন হইতে একটু দূরে সরাইয়া দুটীসকল মৃত্তিকায় গাড়িতে লাগিল, ও বেলুনটি যেমন ঠিক তাঁবুর মতো দেখা যাইতে লাগিল। তাহার ভিতরে লাকুড়ি, কয়লা ইত্যাদি ঘুম হওয়ার সামগ্রী নিয়া কেরাসিন তৈল ঢালিতে লাগিল, ও অগ্নি প্রজ্জলিত করিল।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৪)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৪)

 

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৫)

০৭:০০:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

কেরোসিনের টান সহ ও লাকুড় ইত্যাদি সহ নদীর দক্ষিণ নৌকাযোগে উপস্থিত হইলেন।

কিন্তু যে রকম বাত্যার জোর দেখিতেছি নবাবের ছাতে নামা যাইবে কি না সন্দেহ, বাস্তবিক সে সময় ধূ ধূ শব্দে অত্যন্ত বেগে দক্ষিণ প্রভঞ্জন বহিতেছিল। আর ঐ যুব ইউরুপীয়ান বলিয়াছিল যে, আমি ও আমার মা বেলুনে উড়িতে অভ্যস্ত, কিন্তু আমার ভগিনী পরিপক্ব নহে। কখনও কখনও সে উড়িয়াছে বটে, কিন্তু পরিপক্ব হয় নাই। কিন্তু সে নবাবের পারিতোষিকের আশায় উড়িবার সংকল্প করিয়াছে।

আমি ও আমার মা তাহাকে বুঝাইয়া আমরা দুইজন হইতে একজন উড়িবার চেষ্টা করিতেছি, দেখা যাউক কী হয়। নবাব সাহেব ১০,০০০ দশ হাজার টাকার চুক্তিতে ইংলন্ড হইতে আমাদিগকে একবার মাত্র উড়াইবার জন্য আনাইয়াছেন কিন্তু এখন তিনি বলিতেছেন যে, তোমরা নদীর ঐপার হইতে উড়িয়া আসিয়া আমার ছাতে নামিতে হইবে।

সেকালের পত্রিকায় প্রকাশিত জিনেটের মৃত্যুর খবর 

আমার মেয়েছেলেরা দেখিতে চায়, আমরা বলিলাম যেরকম বাত্যার জোর দেখা যাইতেছে, আপনার ছাতে নামিতে পারিব বলিয়া গ্রান্টি দিতে পারি না। তিনি বলিলেন ঐরূপ করিতে পারিলে তোমাদিগকে আরও পুরস্কৃত করিব। আমরা বলিলাম কত টাকা? তিনি বলিলেন ৪৫০০ সাড়ে চারি হাজার টাকা আরও দিব। ইতিমধ্যে আমার ভগ্নি বলিয়া উঠিল আরও ৫০০০, পাঁচ হাজার টাকা দেন, ছাতে নামিতে পারি কি না, আছি উড়িয়া ছাতে নামার চেষ্টা করিব।

এইমাত্র কথা হইয়াছে তখন জনশ্রুতি মধ্যে মুখে ২ এই কথাসমূহ প্রচার হইয়া যাওয়ায় নৌকা করিয়া বহু লোক দক্ষিণ পারে যাইতে আরম্ভ করিল। বের কেহবা নৌকা করিয়া নদীতে নৌকা রাখিয়া তামাসা দেখিবার চেষ্টা পাইতে লাগিল। আমরাও এক নৌকা করিয়া নদীর মধ্যভাগে যাইয়া রহিলাম। ইতিমধ্যে বেলুন পরিচালক ইউরুপীয়ানত্রয় কতিপয় লোকসহ ও বেলুনসহ অন্যান্য আসবাবপত্রাদি লইয়া নদীর দক্ষিন পাড়ে বহুতর কেরোসিনের টান সহ ও লাকুড় ইত্যাদি সহ নদীর দক্ষিণ নৌকাযোগে উপস্থিত হইলেন।

ও বেলুনের চতুঃপার্শ্বস্থ রশি খুট্যসকল বেলুন হইতে একটু দূরে সরাইয়া দুটীসকল মৃত্তিকায় গাড়িতে লাগিল, ও বেলুনটি যেমন ঠিক তাঁবুর মতো দেখা যাইতে লাগিল। তাহার ভিতরে লাকুড়ি, কয়লা ইত্যাদি ঘুম হওয়ার সামগ্রী নিয়া কেরাসিন তৈল ঢালিতে লাগিল, ও অগ্নি প্রজ্জলিত করিল।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৪)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৪)