০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৪)

উড়িবে ও কোথা হইতে উড়িবে ও কোথায় নামিবে, এ বিষয়ে নবাব সাহেব কী আজ্ঞা করিয়াছেন জানিতে চাহিল

এ হচ্ছে কাহিনি, এখানে গনিউর রাজার রোজনামচা থেকে জিনেটের বেলুন ভ্রমণের অংশটুকু সংকলিত হলো যেখানে পাঠক এই আকাশচারীর ‘খেলা’ দেখানোর এক কৌতুকময় বিবরণ পাবেন-

“উল্লেখযোগ্য, একটি বিষয় ভ্রমবশত: লিখা হয় নাই বিধায় উক্ত বিষয়টি পুনরুল্লেখ করিতে হইল। পাওপুছা বেটাকে আমি ও নাজিম রেলওয়ে ষ্টেশনে টিকেট করিয়া দেওয়ার জন্য গিয়াছিলাম। তথায় যাইয়া শুনি লোকেরা বলাবলি করিতেছে যে, নবাব সাহেব ইংলন্ড হইতে ১০,০০০ দশ হাজার টাকা চুক্তিতে একজন ইউরুপীয়ান লেডি আনাইয়াছেন। সে ব্যোম যানে অর্থাৎ বেলুনে চড়িয়া লোকদিগকে আশ্চর্য্য তামাসা দেখাইবে।

২/৪ দিবস মধ্যে ঢোল পিটাইয়া কোন্ তারিখে আকাশে উড়িবে, তাহা লোকদিগকে জ্ঞাত করা হইবে। তৎপর পাওপুছা বেটাকে টিকেট করিয়া দিয়া বাসায় চলিয়া আসি। ২/৩ দিবস পরে এক দিবস অপরাহ্নে ঢোলের কথাও সর্বজন জানিতে পায়। এবং যেদিন বেলুনে উড়িবে ঐ দিবস নির্দিষ্ট সময়ের পূর্ব্বেই লোক জমিতে থাকে। লোকে লোকারণ্য হওয়ায় ভিড় ঠেলিয়া যাইতে আমাদের অত্যন্ত কষ্ট হইয়াছিল।

গনিউর রাজা

সমূহ লোক নবাব বাড়ির আহসান মঞ্জিলের ধারে সমবেত হয়। আহসান মঞ্জিলের পূর্বদিকে ও দক্ষিণ দিকেই অধিকাংশ লোকের জনতা হইয়াছিল, তখন নবাব আহসান উল্লা ছাতের উপর আসন গ্রহণ করেন ও দেখিলাম একজনা ইউরুপীয়ান যুবা পুরুষ নবাব সাহেবের কাছে গিয়া হেট উঠাইয়া সেলাম দিল, ও হেন্ডশেকিং করিল।

নবাব সাহেবও দাঁড়াইয়া তাহার সহিত কি কি আলাপ করিলেন ইতিমধ্যে আরও দুইজনা ইউরুপীয়ান লেডি তথায় উপস্থিত হইল, তাহাদের মধ্যে একজনা প্রৌঢ় বয়স্ক ও একজনা বালিকা, একজনের বয়স ৫০/৫৫ হইবে অন্যজনার ১৫/১৬ হইতে পারে, বোধ হইল। প্রায় অর্দ্ধঘণ্টা নবাবের সহিত তাহারা দাঁড়াইয়া কী কী বিষয় আলাপ করিল, আমরা নীচে বহুদূর থাকায় ও জনকোলাহলে কিছুই বুঝিতে পারিলাম না।

অনুমান করিলাম তাহারা কোথা হইতে উড়িবে ও কোথায় নামিবে সে বিষয় আলাপ হইতেছে। অল্পক্ষণ মধ্যেই তাহারা নিচে নামিয়া আসিল, সমবেত লোক হইতে ২/৪ জন শিক্ষিত লোক তাহাদের সহিত যাইয়া মিশিল ও তাহাদের মধ্যে কে উড়িবে ও কোথা হইতে উড়িবে ও কোথায় নামিবে, এ বিষয়ে নবাব সাহেব কী আজ্ঞা করিয়াছেন জানিতে চাহিল, তাহাদের মধ্যে যুবা পুরুষ নাকি বলিল, নদীর দক্ষিণ পার হইতে উড়িবার কথা নবাব বলিয়াছেন।”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৩)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৩)

 

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৪)

০৭:০০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

উড়িবে ও কোথা হইতে উড়িবে ও কোথায় নামিবে, এ বিষয়ে নবাব সাহেব কী আজ্ঞা করিয়াছেন জানিতে চাহিল

এ হচ্ছে কাহিনি, এখানে গনিউর রাজার রোজনামচা থেকে জিনেটের বেলুন ভ্রমণের অংশটুকু সংকলিত হলো যেখানে পাঠক এই আকাশচারীর ‘খেলা’ দেখানোর এক কৌতুকময় বিবরণ পাবেন-

“উল্লেখযোগ্য, একটি বিষয় ভ্রমবশত: লিখা হয় নাই বিধায় উক্ত বিষয়টি পুনরুল্লেখ করিতে হইল। পাওপুছা বেটাকে আমি ও নাজিম রেলওয়ে ষ্টেশনে টিকেট করিয়া দেওয়ার জন্য গিয়াছিলাম। তথায় যাইয়া শুনি লোকেরা বলাবলি করিতেছে যে, নবাব সাহেব ইংলন্ড হইতে ১০,০০০ দশ হাজার টাকা চুক্তিতে একজন ইউরুপীয়ান লেডি আনাইয়াছেন। সে ব্যোম যানে অর্থাৎ বেলুনে চড়িয়া লোকদিগকে আশ্চর্য্য তামাসা দেখাইবে।

২/৪ দিবস মধ্যে ঢোল পিটাইয়া কোন্ তারিখে আকাশে উড়িবে, তাহা লোকদিগকে জ্ঞাত করা হইবে। তৎপর পাওপুছা বেটাকে টিকেট করিয়া দিয়া বাসায় চলিয়া আসি। ২/৩ দিবস পরে এক দিবস অপরাহ্নে ঢোলের কথাও সর্বজন জানিতে পায়। এবং যেদিন বেলুনে উড়িবে ঐ দিবস নির্দিষ্ট সময়ের পূর্ব্বেই লোক জমিতে থাকে। লোকে লোকারণ্য হওয়ায় ভিড় ঠেলিয়া যাইতে আমাদের অত্যন্ত কষ্ট হইয়াছিল।

গনিউর রাজা

সমূহ লোক নবাব বাড়ির আহসান মঞ্জিলের ধারে সমবেত হয়। আহসান মঞ্জিলের পূর্বদিকে ও দক্ষিণ দিকেই অধিকাংশ লোকের জনতা হইয়াছিল, তখন নবাব আহসান উল্লা ছাতের উপর আসন গ্রহণ করেন ও দেখিলাম একজনা ইউরুপীয়ান যুবা পুরুষ নবাব সাহেবের কাছে গিয়া হেট উঠাইয়া সেলাম দিল, ও হেন্ডশেকিং করিল।

নবাব সাহেবও দাঁড়াইয়া তাহার সহিত কি কি আলাপ করিলেন ইতিমধ্যে আরও দুইজনা ইউরুপীয়ান লেডি তথায় উপস্থিত হইল, তাহাদের মধ্যে একজনা প্রৌঢ় বয়স্ক ও একজনা বালিকা, একজনের বয়স ৫০/৫৫ হইবে অন্যজনার ১৫/১৬ হইতে পারে, বোধ হইল। প্রায় অর্দ্ধঘণ্টা নবাবের সহিত তাহারা দাঁড়াইয়া কী কী বিষয় আলাপ করিল, আমরা নীচে বহুদূর থাকায় ও জনকোলাহলে কিছুই বুঝিতে পারিলাম না।

অনুমান করিলাম তাহারা কোথা হইতে উড়িবে ও কোথায় নামিবে সে বিষয় আলাপ হইতেছে। অল্পক্ষণ মধ্যেই তাহারা নিচে নামিয়া আসিল, সমবেত লোক হইতে ২/৪ জন শিক্ষিত লোক তাহাদের সহিত যাইয়া মিশিল ও তাহাদের মধ্যে কে উড়িবে ও কোথা হইতে উড়িবে ও কোথায় নামিবে, এ বিষয়ে নবাব সাহেব কী আজ্ঞা করিয়াছেন জানিতে চাহিল, তাহাদের মধ্যে যুবা পুরুষ নাকি বলিল, নদীর দক্ষিণ পার হইতে উড়িবার কথা নবাব বলিয়াছেন।”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৩)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৩)