‘এই সময়ে তিনজন অর্হৎ সম্পূর্ণ সমাধিস্থ অবস্থায় একটা পর্বতগুহায় আছেন।
এই সংবাদ পেরে হিউ এনচাঙ তুরফান যাওয়ার সংকল্প ত্যাগ করলেন। চীন থেকে পশ্চিম এশিয়া পর্যন্ত যে দুইটা ‘রেশমের বড় সড়ক’ ৩০ আজও আছে তার মধ্যে উত্তরের সড়কটা দিয়ে হিউ এনচাঙ ভারতবর্ষে এসেছিলেন। এখন দক্ষিণের পথটা ধরে অর্থাৎ কাশগর থেকে তকূলমকান্ মরুভূমির পশ্চিম ও দক্ষিণ পথ ধরে খোটান্ লবণরের পথে প্রত্যাগমন করাই স্থির করলেন।
এতএব উত্তরে সামারখণ্ডের দিকে না গিয়ে তিনি এখান থেকেই পূবদিকে গিয়ে পর্বতমালার ভিতরে প্রবেশ করলেন। একদল বণিক এখান থেকে তাঁর সঙ্গী হলেন। তুষারের জন্যে পথ বন্ধ থাকায় বাদাক্শানে তাঁরা একমাসের বেশি ছিলেন- তার পর পামিরের পূর্ব পাশে বন্ধু আর সীতা নদীর (আধুনিক নাম ইয়ারকাও নদী) বিভাজিকায় ওয়াখান্ বা টাশকুরগানে এলেন।
‘এই স্থানের বাট মাইল দক্ষিণ-পূর্বে একটি খাড়া দেওয়ালের মতন পর্বতে দুইটি গুহা। এর প্রত্যেকটিতে এক-একজন অর্থং সমাধিস্থ হয়ে নিশ্চলভাবে উপবিষ্ট। যদিও এরা সাত শ বছর যাবৎ এইভাবে আছেন তবু এদের শরীর খুব শীর্ণ হলেও ধ্বংস হয় নি।’
দস্যুরা চলে গেলে ধর্মগুরু এদেশে দিনকুড়ি থেকে আবার ‘মুস্তাঘ আটা’র উঁচু পর্বতের পশ্চিম পাশ দিয়ে উত্তর দিকে চললেন। এই সময় আবার এক দুর্ঘটনা ঘটল। পথে তাঁরা একদল দস্যুর সাক্ষাৎ পেলেন। সঙ্গী বণিকরা দস্যুদের দেখে ভয়ে পর্বতের দিকে পালিয়ে গেল আর সঙ্গে হাতীগুলো এদিক ওদিক ছুটে গিয়ে জলে ডুবে মারা গেল। তাঁরা আবার অগ্রসর হয়ে ক্রমশঃ কাশগড়ে এবং সেখান থেকে দক্ষিণ-পূবে ইয়ারকাণ্ড এসে পৌঁছলেন।
হিউ এনচাঙ বলেন যে, ইয়ারকাণ্ডের দক্ষিণে একটা খুব উঁচু পর্বতে কতকগুলি গুহা আছে। ভারতের অনেক লোক বোধিপ্রাপ্ত হয়ে শান্তিতে থাকবার জন্যে তাঁদের আলৌকিক শক্তি-বলে এখানে এসে অবস্থান করেন আর তাঁদের মধ্যে অনেকে নির্বাণপ্রাপ্ত হয়েছেন।- ‘এই সময়ে তিনজন অর্হৎ সম্পূর্ণ সমাধিস্থ অবস্থায় একটা পর্বতগুহায় আছেন। তাঁদের চুল দাড়ি ক্রমশঃ বড় হয়ে যায় বলে ভিক্ষুরা মধ্যে মধ্যে গিয়ে ঐগুলি কেটে দিয়ে আসেন।’
(চলবে)