সমকালের একটি শিরোনাম “শুল্কের আলোচনায় পণ্যের মেধাস্বত্বে জোর যুক্তরাষ্ট্রের”
বাংলাদেশে মার্কিন পণ্য নকল করা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে পোশাক নকলকারী শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। এতে মার্কিন শ্রমিকসহ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তাই শুল্ক নিয়ে দরকষাকষিতে মেধাস্বত্ব অধিকারকে (আইপিআর) শক্তিশালী ও কার্যকর করার বিষয়ে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে, সেসব বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটি একমত। তবে কিছু বিষয় এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। শুল্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যায্যতা প্রত্যাশা করে। দুই দেশ আগামী মঙ্গলবার আবার আলোচনায় বসছে।
এই দরকষাকষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মেধাস্বত্ব অধিকারকে শর্ত হিসেবে যোগ করা হয়েছে। ঢাকা ও ওয়াশিংটন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, বাংলাদেশে সহজে নকল পণ্য পাওয়া যায়। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো পোশাক, ভোগ্যপণ্য, চলচ্চিত্র, ওষুধ এবং সফটওয়্যারে মেধাস্বত্ব অধিকার লঙ্ঘনের কথা জানিয়েছে। সরকার মেধাস্বত্ব অধিকার সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে না; এ কাজে পর্যাপ্ত বিনিয়োগও করছে না। তবে আইপিআর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের মতো সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টায় মেধাস্বত্ব অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা ধীরে ধীরে বাড়ছে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “আগুনে পোড়া রোগীর জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে যা করতে হবে”
হাসপাতালে ভর্তি আগুনে পোড়া রোগীদের সেপসিস, একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া, মূত্রনালির সংক্রমণ, শক ইত্যাদি হতে পারে। ফলে তাদের বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা সাধারণ রোগীর চেয়ে বেশি। এসব জীবাণুর অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালসের প্রতি রেজিস্ট্যান্স হার অনেক বেশি। সে জন্য অনেক অ্যান্টিবায়োটিক হাতে থাকলেও সেগুলো সব সময় কার্যকর না-ও হতে পারে।
আগুনে পোড়া রোগীর যত্নে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে হাসপাতালে দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যা—সব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে মেনে চললে তাদের মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে যা করতে হবে
পোড়া রোগীদের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেসব বিষয় মেনে চলতে হবে—
দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া
জীবাণু প্রবেশে বাধা দিতে দ্রুত পোড়া স্থান ঠান্ডা করে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
হাত ধোয়া
রোগীকে স্পর্শ করার আগে ও পরে, রোগীর বিছানা কিংবা আশপাশ স্পর্শ করার পরে, রোগীর শরীরের কোনো তরল স্পর্শ করলে, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর সংস্পর্শে আসা সবাইকে নিয়মিত সঠিক পদ্ধতিতে হাত ধুতে হবে।
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
চিকিৎসক ও নার্সদের অবশ্যই গ্লাভস, গাউন, মাস্ক এবং প্রয়োজনে অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “সরকারের ভেতরেও আরেকটা সরকার আছে”
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরেও আরেকটা সরকার আছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বলেছেন, এখন সরকারের নিরপেক্ষতার প্রশ্নটা, বিশেষ করে দলীয় নিরপেক্ষতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। কারণ, এখন মোটামুটি পরিষ্কার হয়েছে যে, আমরা সরকার বলতে যাদের দেখি আনুষ্ঠানিকভাবে, আসলে তার ভেতরেও আরেকটা সরকার আছে। এটা এখন আর কোনো গোপন বিষয় নয়।
গতকাল দৈনিক প্রথম আলো কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: এক বছরের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এখানে খুবই পরিষ্কার, জনগণ আর কোনো বিষয় নয়। দেশ কোনদিকে যাবে, কীভাবে পরিচালনা হবে, জনগণ কোনো বিষয় নয়। জনগণের নামেই সবকিছু হচ্ছে, তাদের কথা বলেই সবকিছু হচ্ছে, কিন্তু জনগণকে আমরা গণনার বাইরে ফেলে দিয়েছি। আলোচনায় বিশিষ্টজনরা অংশ নেন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বৈষম্যবিরোধী চেতনায় আমরা নতুন সরকার আনলাম। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী চেতনাকে তারা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রতিফলন করতে পারলো না। সরকারের কোনো নৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করা নেই। সর্বজনীন মানবাধিকারের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক বিকাশকে চিন্তা করছে এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর পক্ষে দাঁড়াবে, সেই দুর্বল জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে তার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য পদক্ষেপের ভেতরে গেল না এখন পর্যন্ত। সেহেতু সংস্কারের যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, সংস্কারের সেই সম্ভাবনাটুকু গরিব মানুষ তো পরের কথা, এমনকি উৎপাদনশীল উদ্যোক্তা শ্রেণিও তার ভেতর এলো না।
তিনি বলেন, দু’টি মৌলিক প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। একটি হলো অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থাৎ তার শুরুও আছে এবং একটা সুনির্দিষ্ট সীমিত সময়ের পরে তার শেষ আছে। এই জিনিসটাকে সামনে নিয়ে আসার এখন সময় হয়েছে যে, এটা একটা অনন্তকালীন সরকার নয়, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি হয়, তাহলে প্রথমে এখন যে দু’টি প্রশ্ন সবাইকে বিচলিত করছে, অন্তত আমাকে করে, এক নম্বর প্রশ্ন হলো- সরকারের নিরপেক্ষতা। একটা সরকারের নিরপেক্ষতা বললে তার মৌল আদর্শগত নিরপেক্ষতার কথা বলা হয় না। কারণ, সে পিছিয়ে পড়া মানুষের পক্ষে থাকবে এবং এটার একটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে, যেহেতু দুর্বল জনগোষ্ঠীরা আরও বেশি দুর্বল বোধ করছে, অনেক বেশি বিপন্ন বোধ করছে। একটা স্বৈরাচারী সরকারের আমলে যে রকমভাবে তাদের প্রতি অত্যাচার বা তাদের প্রান্তিকীকরণ হয়েছে, ঠিক একই রকমভাবে নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, জাতিগত সংখ্যালঘু…। লিঙ্গ বৈচিত্র্যের কথা তো বলাই যাচ্ছে না। এটা আরেক সমস্যা হয়ে গেছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “বন্দরসেবার মূল্য বাড়বে গড়ে ৪০%”
দেশের জলসীমায় জাহাজ আসার পর থেকে যেসব সেবা দেয়া হয়, সেগুলোর বিপরীতে নির্দিষ্ট ট্যারিফ বা মাশুল আদায় করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে এ রকম ৫২টি মূল সেবার (লাইন আইটেম) বিপরীতে মাশুল আদায় হলেও নতুন ট্যারিফ প্রস্তাবে সেগুলোকে ২৩টিতে রূপান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে চার ধরনের সেবা বিলুপ্ত করে নতুন আরো পাঁচটি সেবা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পণ্য আমদানি-রফতানিতে প্রয়োজনীয় এসব সেবায় এখন গড়ে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বাড়বে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর প্রস্তাবটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে। সেখানে অনুমোদনের পর গেজেট প্রকাশ হলে বাড়তি মাশুল কার্যকর হবে। এর মাধ্যমে ১৯৮৬ সালের পর এ প্রথম সব ধরনের ট্যারিফ বা মাশুল বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, পণ্যের স্টাফিং এখন ২ দশমিক ৭৩ ডলার। নতুন ট্যারিফ কার্যকর হওয়ার পর এ সেবার মূল্য বেড়ে হবে ৬ দশমিক ৪১ ডলার। বর্তমানে লিফট অফ-লিফট অন ৫ দশমিক ৪৬ ডলারের বিপরীতে হবে ৮ দশমিক ১২ ডলার। একইভাবে নতুন ট্যারিফ বাস্তবায়নের পর পোর্ট ডিউজ দশমিক ৩১ ডলার, পাইলটেজ ১০ হাজার জিআরটি ভেসেলের জন্য ৮০০ ডলার, ট্রাক চার্জেজ ২০ হাজার জিআরটির ওপরে হলে ৩ হাজার ৪১৫ ডলার, গ্যান্টিক্রেন (২০ ফিট) ২০ দশমিক ৮০ ডলার, তবে ২০ ফুটের ওপরে হলে ৩১ দশমিক ২০ ডলার দিতে হবে। স্পেস রেন্ট প্রথম মাসে দশমিক ৯১ ডলার, দ্বিতীয় মাসে ১ দশমিক ১০ ডলার, তৃতীয় মাসে ১ দশমিক ৩৭ ডলার—এভাবে সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকবে। লোডিং ডিসচার্জিংয়ের ক্ষেত্রে এফসিএল ২০ ফুটের কনটেইনার হলে ৬৮ ডলার, ২০ ফুটের ওপর ১০৩ ডলার আর ৪০ ফুটের ওপরে ১১৫ ডলার। খালি কনটেইনারের ক্ষেত্রে ২০ ফুট পর্যন্ত ৩৪ ডলার, ২০ ফুটের ওপরে ৫১ ডলার, ৪০ ফুটের ওপরে হলে ৫৭ ডলার মাশুল আদায় হবে। চারদিন ফ্রিটাইম শেষ হওয়ার পর স্টোর রেন্ট কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে ২৮ দিন পর্যন্ত ২০ ফুট কনটেইনারের জন্য ৬ দশমিক ৯০ ডলার, ৪০ ফুটের জন্য ১৩ দশমিক ৮০ ডলার। ২৮ দিন-পরবর্তী সময়ে ২০ ফুটের কনটেইনারের বিপরীতে ২৭ দশমিক ৬০ ডলার আর ৪০ ফুটের বিপরীতে চার্জ আদায় হবে ৫৫ দশমিক ২০ ডলার।