আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে গাজায় মানবিক সহায়তার করিডোর খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এই করিডোর দিয়ে খাদ্য ও ওষুধসহ অত্যাবশ্যকীয় ত্রাণসামগ্রী গাজায় পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।
মানবিক বিরতি ও ত্রাণ সরবরাহের ঘোষণা
আইডিএফ জানিয়েছে, আল-মাওয়াসি, দেইর আল-বালাহ এবং গাজা সিটিতে প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সামরিক অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। এই বিরতির ফলে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরাপদে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারবে।
এই মানবিক করিডোর প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চালু থাকবে।
ত্রাণ বিতরণ ও ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ
সম্প্রতি ইসরায়েল গাজায় আকাশপথে সাতটি ত্রাণের প্যাকেজ ফেলেছে, যাতে রয়েছে আটা, চিনি ও ক্যানজাত খাবার। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। এদিকে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ পর্যাপ্ত নয়; বরং ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে।
মানবিক সংকট চরমে
দুই মিলিয়ন মানুষের বসবাসকারী গাজায় সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অন্তত ১২৫ জন মানুষ খাদ্যাভাবে মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৮৫ জনই শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস একে ‘মানবসৃষ্ট গণ-অনাহার’ বলে অভিহিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক আহ্বান ও প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা আনরওয়ার প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি জানান, জর্ডান ও মিশরে ছয় হাজার ট্রাক সমপরিমাণ ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে, যা অবিলম্বে গাজায় প্রবেশ করানো প্রয়োজন। তিনি ইসরায়েলকে অবরোধ তুলে নিয়ে স্থলপথে নিরাপদ করিডোর চালুর আহ্বান জানান।
পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ
এদিকে, গাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ পানি বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করেছে আইডিএফ, যা প্রায় নয় লাখ মানুষের চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে। গত মার্চ মাস থেকে গাজায় কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়, যা কিছুটা শিথিল করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি, ২৭ জুলাই ২০২৫