০৯:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
ডব্লিউসিএল সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে না ভারত পদ্মা নদীই কেন ইলিশ মাছের প্রধান আবাসস্থল ? আয়ুব বাচ্চু: বাংলাদেশের রক সংগীতের পথিকৃৎ স্মৃতিশক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে ৭০ বছরে কী করা প্রয়োজন চিকিৎসা শেষে আজ নিজ দেশে ফিরছেন বাংলাদেশে আগত চীনের বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম থাই দূতাবাসের সহানুভূতিশীল উদ্যোগে ঢাকার সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তা কিয়েভে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ছয়জন, শিশুসহ মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে সেনাসদস্যদের অনন্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদান হামলার নিশানায় সাহসী কলম—হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা বঙ্গোপসাগরের তলের প্লেট ও বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি—একটি ভয়াবহ সম্ভাবনার দিকচিত্র

আমেরিকার পরমাণু গবেষণাগারে ভবিষ্যতের অস্ত্র ও শক্তির সন্ধান

ক্যালিফোর্নিয়ায় পরীক্ষাগারে মুহূর্তেই ভয়াবহ শক্তি

ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাশনাল ইগনিশন ফ্যাসিলিটিতে (এনআইএফ) প্রতিটি পরীক্ষা, যাকে বলা হয় “শট”, কয়েক বিলিয়ন ভাগের এক সেকেন্ডের মতো অল্প সময় ধরে চলে। এত কম সময়েও অনেক কিছু ঘটে। সেখানে ১৯২টি লেজার রশ্মি প্রায় ৫০০ ট্রিলিয়ন ওয়াট শক্তি এক জায়গায় ফোকাস করে ফেলে একটি সোনার সিলিন্ডারে। সিলিন্ডারের ভেতরে থাকে হীরার তৈরি ছোট একটি গোলক, যাতে থাকে হাইড্রোজেনের ভারী দুটি রূপ—ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম। তাপ ও চাপে এগুলো একত্র হয়ে হিলিয়াম তৈরি করে এবং প্রচুর শক্তি ছড়িয়ে দেয়।

এই প্রক্রিয়ায় কোনো বিস্ফোরণ ঘটানো ছাড়াই পারমাণবিক বোমার মতো শক্তির পরীক্ষা করা যায়। ১৯৯০-এর দশকে যখন যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু বিস্ফোরণ পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন এই প্রযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

অস্ত্রের নিরাপত্তায় বিজ্ঞানের ব্যবহার

পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও অস্ত্র নিরাপদ ও কার্যকর কি না, তা জানার প্রয়োজন থেকেই তৈরি হয় এনআইএফ ও ‘এল ক্যাপিটান’ নামে অত্যাধুনিক সুপারকম্পিউটার। এই দুই প্রতিষ্ঠান আমেরিকার পুরনো অস্ত্র সংরক্ষণ ও নতুন অস্ত্র তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিযোগী গবেষণাগারগুলোর সমন্বিত কাজ

এনআইএফ অবস্থিত লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে, যা ১৯৫২ সালে নিউ মেক্সিকোর লস অ্যালামোস ল্যাবরেটরির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে তোলা হয়। দুটি ল্যাব ভিন্নভাবে কাজ করলেও তারা মাঝে মাঝে নিজেদের ‘কমপেটিমেট’ বা প্রতিযোগী-সহযোগী হিসেবে দেখে।

লিভারমোর ও লস অ্যালামোস মূলত পরমাণু বোমার অভ্যন্তরের কাঠামো তৈরি করে। আর স্যান্ডিয়া ল্যাব তৈরি করে ট্রিগার, ব্যাটারি, সেন্সরসহ অন্যান্য অংশ এবং এসব মিলিয়ে মিসাইলের সঙ্গে যুক্ত করে। তিনটি ল্যাব একসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (NNSA)-এর অধীনে পরিচালিত হয়, যেখানে হাজার হাজার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী কাজ করেন।

কমপ্যাক্ট ও শক্তিশালী অস্ত্র তৈরির ইতিহাস

লিভারমোরের প্রথম কাজ ছিল হাইড্রোজেন বোমা বানানো, যা ফিশন বোমার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং ছোট। ১৯৫০-এর দশকে নৌবাহিনীর সাবমেরিনে ব্যবহারযোগ্য ছোট অস্ত্র তৈরির দায়িত্ব পায় লিভারমোর। তখন তারা উদ্ভাবন করে ‘পোলারিস’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি, যা যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু ইতিহাসে এক বড় পরিবর্তন আনে বলে জানান ল্যাবের পরিচালক ড. কিম বডিল।

আধুনিক প্রযুক্তিতে অস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ

গবেষকরা এখন পুরনো অস্ত্রগুলো বিশ্লেষণে ব্যস্ত, কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব অস্ত্রে থাকা উপাদান পরিবর্তিত হয়। এনআইএফ-এ এক্স-রে প্রযুক্তি দিয়ে ছোট অংশে প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হয়।

স্যান্ডিয়া ল্যাবে রয়েছে ‘জেড মেশিন’, যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ দিয়ে পারমাণবিক বিস্ফোরণের মতো অবস্থা তৈরি করে। লস অ্যালামোসে প্রচলিত বিস্ফোরক দিয়ে অস্ত্রের নিউক্লিয়ার অংশ ছাড়া বাকি অংশের পরীক্ষা হয়।

সব পরীক্ষার তথ্য ১৯৯২ সালের আগের হাজারো বিস্ফোরণ পরীক্ষার ডেটা ও বর্তমান সুপারকম্পিউটারের সিমুলেশনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।

এল ক্যাপিটান: আধুনিক কম্পিউটিং শক্তির প্রতীক

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে লিভারমোরে চালু হয় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার ‘এল ক্যাপিটান’। এটি প্রতি সেকেন্ডে এক কোয়িনটিলিয়ন (১০¹⁸) ফ্লোটিং পয়েন্ট হিসাব করতে পারে। এটি ১৯৯৫ সালে শুরু হওয়া অস্ত্র-পরীক্ষাবিহীন উন্নয়নের ‘ASC’ প্রোগ্রামের অংশ।

আগে একটি থ্রিডি অস্ত্র সিমুলেশন করতে মাসের পর মাস লাগত, এখন এল ক্যাপিটানে দিনে ২০০টির বেশি উন্নত মানের সিমুলেশন সম্ভব।

বিশেষ চিপ প্রযুক্তির কারণে সাফল্য

এল ক্যাপিটানে AMD কোম্পানির তৈরি বিশেষ ‘অ্যাকসেলারেটেড প্রসেসিং ইউনিট’ (APU) ব্যবহৃত হয়, যেখানে একই চিপে CPU ও GPU একসঙ্গে কাজ করে এবং মেমোরি শেয়ার করে। এতে সময় বাঁচে এবং কম্পিউটার আরও কার্যকর হয়।

নতুন পরমাণু অস্ত্র: W93

এই সুপারকম্পিউটার বর্তমানে ‘W93’ নামে একটি নতুন পরমাণু অস্ত্রের ডিজাইন তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি হবে ১৯৮০-এর দশকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নতুন পারমাণবিক অস্ত্র, যা সাবমেরিন থেকে ছোড়া ব্যালিস্টিক মিসাইলে ব্যবহার করা হবে।

গত পাঁচ-ছয় বছরে লস অ্যালামোসের বাজেট দ্বিগুণ হয়েছে, ফলে প্লুটোনিয়াম ‘পিট’ তৈরি, নতুন বিজ্ঞানী নিয়োগ ও গবেষণার সুযোগ বেড়েছে।

পরমাণু অস্ত্রের নতুন যুগ

ড. ম্যাসনের মতে, এখন চলছে পরমাণু অস্ত্রের চতুর্থ যুগ। প্রথম যুগে অস্ত্র আবিষ্কৃত হয়, দ্বিতীয় যুগে স্নায়ুযুদ্ধের সময় বিস্তার ঘটে, তৃতীয় যুগে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়।

আর এখনকার যুগটা অনেক বেশি উদ্বেগজনক—রাশিয়ার হুমকি, চীনের দ্রুত অস্ত্র তৈরি, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা এবং নতুন নতুন দেশের পারমাণবিক আকাঙ্ক্ষা বিশ্বকে অস্থির করে তুলেছে।

শক্তির ভবিষ্যতেও এনআইএফ-এর ভূমিকা

এনআইএফ শুধু অস্ত্র নয়, পারমাণবিক ফিউশন শক্তি উৎপাদনেও কাজ করছে। ২০২২ সালে তারা প্রথমবারের মতো “ইগনিশন” অর্জন করে—যেখানে ইনপুট শক্তির চেয়ে বেশি শক্তি উৎপন্ন হয়।

এ পর্যন্ত তারা নয়বার এ ধরনের ইগনিশনে সফল হয়েছে এবং প্রতিবারই শক্তির মাত্রা বেড়েছে।

ভয়াবহতা জেনেও দায়িত্ববোধ

এই গবেষণাগারগুলোর প্রধান লক্ষ্য পারমাণবিক অস্ত্র। তবে বিজ্ঞানীরা সবসময়ই সচেতন যে, এগুলো ভয়াবহ ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।

লস অ্যালামোসের পরিচালক ড. ম্যাসন বলেন, “আমরা যে অস্ত্র তৈরি করি তা যদি কোনোদিন ব্যবহারই না হয়, সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

ডব্লিউসিএল সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে না ভারত

আমেরিকার পরমাণু গবেষণাগারে ভবিষ্যতের অস্ত্র ও শক্তির সন্ধান

১২:৫৪:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

ক্যালিফোর্নিয়ায় পরীক্ষাগারে মুহূর্তেই ভয়াবহ শক্তি

ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাশনাল ইগনিশন ফ্যাসিলিটিতে (এনআইএফ) প্রতিটি পরীক্ষা, যাকে বলা হয় “শট”, কয়েক বিলিয়ন ভাগের এক সেকেন্ডের মতো অল্প সময় ধরে চলে। এত কম সময়েও অনেক কিছু ঘটে। সেখানে ১৯২টি লেজার রশ্মি প্রায় ৫০০ ট্রিলিয়ন ওয়াট শক্তি এক জায়গায় ফোকাস করে ফেলে একটি সোনার সিলিন্ডারে। সিলিন্ডারের ভেতরে থাকে হীরার তৈরি ছোট একটি গোলক, যাতে থাকে হাইড্রোজেনের ভারী দুটি রূপ—ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম। তাপ ও চাপে এগুলো একত্র হয়ে হিলিয়াম তৈরি করে এবং প্রচুর শক্তি ছড়িয়ে দেয়।

এই প্রক্রিয়ায় কোনো বিস্ফোরণ ঘটানো ছাড়াই পারমাণবিক বোমার মতো শক্তির পরীক্ষা করা যায়। ১৯৯০-এর দশকে যখন যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু বিস্ফোরণ পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন এই প্রযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

অস্ত্রের নিরাপত্তায় বিজ্ঞানের ব্যবহার

পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও অস্ত্র নিরাপদ ও কার্যকর কি না, তা জানার প্রয়োজন থেকেই তৈরি হয় এনআইএফ ও ‘এল ক্যাপিটান’ নামে অত্যাধুনিক সুপারকম্পিউটার। এই দুই প্রতিষ্ঠান আমেরিকার পুরনো অস্ত্র সংরক্ষণ ও নতুন অস্ত্র তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিযোগী গবেষণাগারগুলোর সমন্বিত কাজ

এনআইএফ অবস্থিত লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে, যা ১৯৫২ সালে নিউ মেক্সিকোর লস অ্যালামোস ল্যাবরেটরির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে তোলা হয়। দুটি ল্যাব ভিন্নভাবে কাজ করলেও তারা মাঝে মাঝে নিজেদের ‘কমপেটিমেট’ বা প্রতিযোগী-সহযোগী হিসেবে দেখে।

লিভারমোর ও লস অ্যালামোস মূলত পরমাণু বোমার অভ্যন্তরের কাঠামো তৈরি করে। আর স্যান্ডিয়া ল্যাব তৈরি করে ট্রিগার, ব্যাটারি, সেন্সরসহ অন্যান্য অংশ এবং এসব মিলিয়ে মিসাইলের সঙ্গে যুক্ত করে। তিনটি ল্যাব একসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (NNSA)-এর অধীনে পরিচালিত হয়, যেখানে হাজার হাজার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী কাজ করেন।

কমপ্যাক্ট ও শক্তিশালী অস্ত্র তৈরির ইতিহাস

লিভারমোরের প্রথম কাজ ছিল হাইড্রোজেন বোমা বানানো, যা ফিশন বোমার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং ছোট। ১৯৫০-এর দশকে নৌবাহিনীর সাবমেরিনে ব্যবহারযোগ্য ছোট অস্ত্র তৈরির দায়িত্ব পায় লিভারমোর। তখন তারা উদ্ভাবন করে ‘পোলারিস’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি, যা যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু ইতিহাসে এক বড় পরিবর্তন আনে বলে জানান ল্যাবের পরিচালক ড. কিম বডিল।

আধুনিক প্রযুক্তিতে অস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ

গবেষকরা এখন পুরনো অস্ত্রগুলো বিশ্লেষণে ব্যস্ত, কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব অস্ত্রে থাকা উপাদান পরিবর্তিত হয়। এনআইএফ-এ এক্স-রে প্রযুক্তি দিয়ে ছোট অংশে প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হয়।

স্যান্ডিয়া ল্যাবে রয়েছে ‘জেড মেশিন’, যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ দিয়ে পারমাণবিক বিস্ফোরণের মতো অবস্থা তৈরি করে। লস অ্যালামোসে প্রচলিত বিস্ফোরক দিয়ে অস্ত্রের নিউক্লিয়ার অংশ ছাড়া বাকি অংশের পরীক্ষা হয়।

সব পরীক্ষার তথ্য ১৯৯২ সালের আগের হাজারো বিস্ফোরণ পরীক্ষার ডেটা ও বর্তমান সুপারকম্পিউটারের সিমুলেশনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।

এল ক্যাপিটান: আধুনিক কম্পিউটিং শক্তির প্রতীক

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে লিভারমোরে চালু হয় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার ‘এল ক্যাপিটান’। এটি প্রতি সেকেন্ডে এক কোয়িনটিলিয়ন (১০¹⁸) ফ্লোটিং পয়েন্ট হিসাব করতে পারে। এটি ১৯৯৫ সালে শুরু হওয়া অস্ত্র-পরীক্ষাবিহীন উন্নয়নের ‘ASC’ প্রোগ্রামের অংশ।

আগে একটি থ্রিডি অস্ত্র সিমুলেশন করতে মাসের পর মাস লাগত, এখন এল ক্যাপিটানে দিনে ২০০টির বেশি উন্নত মানের সিমুলেশন সম্ভব।

বিশেষ চিপ প্রযুক্তির কারণে সাফল্য

এল ক্যাপিটানে AMD কোম্পানির তৈরি বিশেষ ‘অ্যাকসেলারেটেড প্রসেসিং ইউনিট’ (APU) ব্যবহৃত হয়, যেখানে একই চিপে CPU ও GPU একসঙ্গে কাজ করে এবং মেমোরি শেয়ার করে। এতে সময় বাঁচে এবং কম্পিউটার আরও কার্যকর হয়।

নতুন পরমাণু অস্ত্র: W93

এই সুপারকম্পিউটার বর্তমানে ‘W93’ নামে একটি নতুন পরমাণু অস্ত্রের ডিজাইন তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি হবে ১৯৮০-এর দশকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নতুন পারমাণবিক অস্ত্র, যা সাবমেরিন থেকে ছোড়া ব্যালিস্টিক মিসাইলে ব্যবহার করা হবে।

গত পাঁচ-ছয় বছরে লস অ্যালামোসের বাজেট দ্বিগুণ হয়েছে, ফলে প্লুটোনিয়াম ‘পিট’ তৈরি, নতুন বিজ্ঞানী নিয়োগ ও গবেষণার সুযোগ বেড়েছে।

পরমাণু অস্ত্রের নতুন যুগ

ড. ম্যাসনের মতে, এখন চলছে পরমাণু অস্ত্রের চতুর্থ যুগ। প্রথম যুগে অস্ত্র আবিষ্কৃত হয়, দ্বিতীয় যুগে স্নায়ুযুদ্ধের সময় বিস্তার ঘটে, তৃতীয় যুগে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়।

আর এখনকার যুগটা অনেক বেশি উদ্বেগজনক—রাশিয়ার হুমকি, চীনের দ্রুত অস্ত্র তৈরি, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা এবং নতুন নতুন দেশের পারমাণবিক আকাঙ্ক্ষা বিশ্বকে অস্থির করে তুলেছে।

শক্তির ভবিষ্যতেও এনআইএফ-এর ভূমিকা

এনআইএফ শুধু অস্ত্র নয়, পারমাণবিক ফিউশন শক্তি উৎপাদনেও কাজ করছে। ২০২২ সালে তারা প্রথমবারের মতো “ইগনিশন” অর্জন করে—যেখানে ইনপুট শক্তির চেয়ে বেশি শক্তি উৎপন্ন হয়।

এ পর্যন্ত তারা নয়বার এ ধরনের ইগনিশনে সফল হয়েছে এবং প্রতিবারই শক্তির মাত্রা বেড়েছে।

ভয়াবহতা জেনেও দায়িত্ববোধ

এই গবেষণাগারগুলোর প্রধান লক্ষ্য পারমাণবিক অস্ত্র। তবে বিজ্ঞানীরা সবসময়ই সচেতন যে, এগুলো ভয়াবহ ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।

লস অ্যালামোসের পরিচালক ড. ম্যাসন বলেন, “আমরা যে অস্ত্র তৈরি করি তা যদি কোনোদিন ব্যবহারই না হয়, সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”