০৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছে পড়শী রুমীর বাংলাদেশে আবারও বাড়ছে চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ ঢাকায় শহীদ মিনারে এনসিপির সমাবেশের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকছে কী, সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়ে মতবিরোধ কেটেছে? ঘূর্ণিঝড়ের রাতে কক্সবাজারে এক পর্যটকের রুদ্ধশ্বাস অভিজ্ঞতা ডলি জহুর: মঞ্চ, টেলিভিশন ও জীবনের পর্দায় এক নিবেদিত শিল্পীর প্রতিচ্ছবি উত্তরের প্রাণ: ঢেপা নদীর দুই শতকের গল্প সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন: মোদিকে চীনের বিজয় প্যারেডে যাওয়ার আহ্বান, ভারতে তার প্রভাব পাকিস্তানি-চীনা প্রযুক্তিতে ভারতীয় ‘রাফাল’ ভূপাতিত: গোয়েন্দা ত্রুটি ও ‘কিল চেইন’ কৌশল প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৪৮)

জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকছে কী, সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়ে মতবিরোধ কেটেছে?

  • Sarakhon Report
  • ০৫:২০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • 10

প্রায় সাত মাস ধরে নানা আলোচনার পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা করলেও অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এই ঘোষনাপত্র তৈরি করে সরকার। ফলে এতে কী থাকছে, তা এখনো গোপন রয়ে গেছে।

অন্যদিকে, জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনগত ভিত্তি কি হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রস্তুত করে গত মাসে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির মতামত নেওয়া হয়।

পরে সেই খসড়ার ওপর ওই তিনটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জানানোর পর শনিবার এ নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসলো সরকারের পক্ষ থেকে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম একটা খসড়া দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় সেটির ওপর মতামত দিয়েছে বিএনপি।

একইভাবে জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপিও সরকারের দেওয়া ওই খসড়া ঘোষণাপত্রের ওপর তাদের মতামত প্রদান করেছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন দল দুটির শীর্ষ নেতৃত্ব।

তবে, এই জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিতর্ক এড়াতে কঠোর গোপনীয়তার সাথে খসড়াটি চূড়ান্ত করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলোর কাছ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ার বিস্তারিত জানতে পেরেছে বিবিসি বাংলা।

ঘোষণাপত্রে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলোর সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। একই সাথে কোন প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে, সেটিরও উল্লেখ থাকছে ২৬ থেকে ২৭ দফার এই ঘোষণাপত্রে।

যদিও ২০২৫ সালের পাঁচই অগাস্ট ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে, তবে এই জুলাই ঘোষণাপত্র কার্যকরের কথা বলা আছে ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট থেকে

এদিকে জুলাই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের সংবিধানে যুক্ত করা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতবিরোধ চলছে। এ নিয়ে কিছুটা পরষ্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে বিএনপি ও এনসিপি।

শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, এই ঘোষণাপত্র শুধু একটা পলিটিকাল ডকুমেন্ট নয়। এটার যথাযথ সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পোস্টার
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পোস্টার

জুলাই ঘোষণাপত্র কী এবং কেন?

গত বছরের পাঁচই অগাস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রায় পাঁচ মাস পরে ৩১শে ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করলে তখন এ নিয়ে রাজনীতিতে নানা আলোচনা শুরু হয়।

তখন এই বিষয়টিকে একেবারেই ইতিবাচকভাবে নেয়নি বিএনপি। ছাত্রদের এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি বাদ দেওয়ার জন্য সরকারকে এক ধরনের বার্তাও দেওয়া হয়েছিল বিএনপির পক্ষ থেকে।

পরে গত ৩০শে ডিসেম্বর রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

পরে ৩১শে ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সেই কর্মসূচি থেকে সরে আসেন গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতৃত্ব।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “গত জানুয়ারির শেষ দিকে আমাদের একটা ড্রাফট দিয়েছিল মতামতের জন্য। ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে সেটি আইন উপদেষ্টা ও তথ্য উপদেষ্টার কাছে আমি নিজ হাতে হস্তান্তর করেছিলাম”।

তিনি জানান, এরপর আবারো দুই দফায় দু’টি খসড়া প্রস্তাবনায় কিছু সংশোধনী দিয়ে গত ২৯শে জুলাই তা সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “যে আকাঙ্ক্ষা ও স্প্রিট জুলাই গণঅভ্যুত্থান ঘটেছিল, পাঁচই অগাস্ট যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যেমন বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম ওই আকাঙ্ক্ষার একটা দালিলিক প্রমাণ থাকা দরকার। সেই দালিলিক প্রমাণটা হচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র”।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এটার ওপর ওনারা (সরকার) চূড়ান্ত কী সিদ্ধান্ত নেন, আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করছি”।

এর আগে খসড়ায় দফায় দফায় সংশোধন আনার পর চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে কোন কোন বিষয় যুক্ত থাকছে, সেটি নিয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় জাতীয় নাগরিক পার্টি।

দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমাদের দলের পক্ষ থেকে কয়েকবার ড্রাফট (খসড়া) পাঠিয়েছি। সরকার যেটি চূড়ান্ত করেছে সেটি এখনো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি”।

বাংলাদেশের সংবিধান
বাংলাদেশের সংবিধান

কী কী থাকছে জুলাই সনদে?

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে গত কয়েকদিন নানা আলোচনার পর শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর আগামী পাঁচই অগাস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়াও চূড়ান্ত দিনক্ষণ জানায়।

এরপরই এ নিয়ে নানা কৌতূহল দেখা যায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়াটি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে বলে সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে।

খুব গোপনীয়তার সাথে ঘোষণাপত্র তৈরি করা হচ্ছে সেখানে প্রায় ২৬ থেকে ২৭টি দফা থাকতে পারে বলে জানা গেছে।

এই ঘোষণাপত্রের শুরুতে পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বঞ্চনা, শোষণ নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের বিষয়টি উল্লেখ থাকছে।

পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের একদলীয় বাকশাল কায়েমের বিষয়টিরও উল্লেখ থাকছে ঘোষণাপত্রে। সেই সাথে সিপাহি-জনতার বিপ্লবে বাকশালের অবসান কিভাবে হয়েছিল, সেটিও থাকছে জুলাই ঘোষণাপত্রে।

পরের দফায় আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার সংগ্রাম ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানকেও যুক্ত করা হয়েছে।

খসড়ার পরের দফায় ওয়ান ইলেভেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সে সময় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানের এই ঘোষণাপত্রে যুক্ত থাকছে আওয়ামী লীগ শাসনামলের সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনের ভোট আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, বিগত সরকার সেই ভোটের মাধ্যমে এদেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করেছিল।

শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে বিরোধী মত, জনগণকে চরম নির্যাতন-নিপীড়ন, সরকারী চাকুরীতে একচেটিয়া দলীয় নিয়োগ ও কোটাভিত্তিক বৈষম্যের কারণে ছাত্র, চাকুরী প্রত্যাশী ও নাগরিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের বিষয়গুলোও যুক্ত থাকছে এই ঘোষণাপত্রে।

এর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জনতার অভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের প্রেক্ষাপট, আগামীতে বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার, আওয়ামী লীগ আমলের সকল গুম, খুন, দুর্নীতির বিচার ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংস্কার উদ্যোগের বিষয়গুলোও যুক্ত করা হচ্ছে এই জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত ঘোষণায়।

এই ঘোষণাপত্রের সর্বশেষ দফায় বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লবের এই ঘোষণাপত্র ২০২৪ সালের পাঁচই আগস্ট থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছেন, “ঘোষণাপত্র জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটা দালিলিক প্রমাণ। যেখানে উল্লেখ থাকবে কোন কোন ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল”।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন জাতীয় সংসদের চিত্র

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন জাতীয় সংসদের চিত্র

অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, ঐকমত্যের চেষ্টা

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সরকার ঘোষণাপত্রের খসড়া করে। তখন এর ওপর ৩২টি দলের মতামতও গ্রহণ করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তখন একটি খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরিও করেছিল। অন্যদিকে বিএনপিও একটি খসড়া তৈরি করেছিল।

এরপর এ নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তুত করে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির কাছে তা নিয়ে কয়েক দফায় মতামতও চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে নানা মত পার্থক্য থাকায় কয়েক দফায় সংশোধনী প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।

বর্তমানে যে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছে, সেটি নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সালাহউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তারা কি দেয় সেটি দেখি। যে ড্রাফটিতে আমরা সম্মত হয়েছি, সেটা যদি থাকে তাহলে এক রকম, না থাকলে আরেক রকম”।

এনসিপি ও জামায়াতের দুইটি সূত্র বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে, এই ঘোষণাপত্র নিয়ে গত শুক্রবার বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। যেখানে তিনটি দলটি একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

পরে ওই বৈঠকের পরই শুক্রবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান।

জামায়াত ইসলামীর একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, অনানুষ্ঠানিক সেই বৈঠকে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা ছিলেন। সেই বৈঠকেই খসড়া বিষয়গুলো নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। এরপর পাঁচই অগাস্ট সেটি ঘোষণার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছেছে তিন দল।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সরকার এই বিষয়টি নিয়ে বেশি ফরমালি বসে নাই। ইনফরমালি বিভিন্ন জনের সাথে বসে সমঝোতায় আনার চেষ্টা করছে। ঘোষণাপত্রের ফাইনাল কপি পাওয়ার পর এ নিয়ে মন্তব্য করবো”।

তবে, এই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে যুক্ত করা নিয়ে শুরু থেকে দুই ধরনের মত ছিল বিএনপি এবং এনসিপি ও জামায়াতের মধ্যে।

বিএনপি আগেই জানিয়েছিল, জুলাই ঘোষণাকে সংবিধানের চতুর্থ তপশিলে যুক্ত করতে চায় তারা। পুরো ঘোষণাপত্র নয়, অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি হিসেবে একটি অনুচ্ছেদ এবং ঘোষণাপত্রের উল্লেখ থাকবে।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রস্তাব ছিল সংবিধানের প্রস্তাবনায় জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি থাকুক। এবং পুরো ঘোষণাপত্র সংবিধানে যুক্ত করার দাবি ছিল।

আর জামায়াতও চায় এর সাংবিধানিক ভিত্তি, সেটি যেভাবেই হোক তাতে খুব বেশি আপত্তি নেই দলটির।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ঘোষণাপত্রের আইনগত ভিত্তি যদি না থাকে তাহলে আমরা এটাতে স্বাক্ষর করবো কী-না সেটা আমরা চিন্তা ভাবনা করবো। আমরা এটা সরকারকে জানিয়েছি। যদি আইনগত ভিত্তি থাকে তখনই আমরা এতে স্বাক্ষর করবো”।

বিবিসি নিউজ বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছে পড়শী রুমীর

জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকছে কী, সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়ে মতবিরোধ কেটেছে?

০৫:২০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

প্রায় সাত মাস ধরে নানা আলোচনার পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা করলেও অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এই ঘোষনাপত্র তৈরি করে সরকার। ফলে এতে কী থাকছে, তা এখনো গোপন রয়ে গেছে।

অন্যদিকে, জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনগত ভিত্তি কি হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রস্তুত করে গত মাসে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির মতামত নেওয়া হয়।

পরে সেই খসড়ার ওপর ওই তিনটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জানানোর পর শনিবার এ নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসলো সরকারের পক্ষ থেকে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম একটা খসড়া দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় সেটির ওপর মতামত দিয়েছে বিএনপি।

একইভাবে জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপিও সরকারের দেওয়া ওই খসড়া ঘোষণাপত্রের ওপর তাদের মতামত প্রদান করেছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন দল দুটির শীর্ষ নেতৃত্ব।

তবে, এই জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিতর্ক এড়াতে কঠোর গোপনীয়তার সাথে খসড়াটি চূড়ান্ত করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলোর কাছ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ার বিস্তারিত জানতে পেরেছে বিবিসি বাংলা।

ঘোষণাপত্রে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলোর সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। একই সাথে কোন প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে, সেটিরও উল্লেখ থাকছে ২৬ থেকে ২৭ দফার এই ঘোষণাপত্রে।

যদিও ২০২৫ সালের পাঁচই অগাস্ট ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে, তবে এই জুলাই ঘোষণাপত্র কার্যকরের কথা বলা আছে ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট থেকে

এদিকে জুলাই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের সংবিধানে যুক্ত করা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতবিরোধ চলছে। এ নিয়ে কিছুটা পরষ্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে বিএনপি ও এনসিপি।

শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, এই ঘোষণাপত্র শুধু একটা পলিটিকাল ডকুমেন্ট নয়। এটার যথাযথ সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পোস্টার
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পোস্টার

জুলাই ঘোষণাপত্র কী এবং কেন?

গত বছরের পাঁচই অগাস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রায় পাঁচ মাস পরে ৩১শে ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করলে তখন এ নিয়ে রাজনীতিতে নানা আলোচনা শুরু হয়।

তখন এই বিষয়টিকে একেবারেই ইতিবাচকভাবে নেয়নি বিএনপি। ছাত্রদের এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি বাদ দেওয়ার জন্য সরকারকে এক ধরনের বার্তাও দেওয়া হয়েছিল বিএনপির পক্ষ থেকে।

পরে গত ৩০শে ডিসেম্বর রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

পরে ৩১শে ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সেই কর্মসূচি থেকে সরে আসেন গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতৃত্ব।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “গত জানুয়ারির শেষ দিকে আমাদের একটা ড্রাফট দিয়েছিল মতামতের জন্য। ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে সেটি আইন উপদেষ্টা ও তথ্য উপদেষ্টার কাছে আমি নিজ হাতে হস্তান্তর করেছিলাম”।

তিনি জানান, এরপর আবারো দুই দফায় দু’টি খসড়া প্রস্তাবনায় কিছু সংশোধনী দিয়ে গত ২৯শে জুলাই তা সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “যে আকাঙ্ক্ষা ও স্প্রিট জুলাই গণঅভ্যুত্থান ঘটেছিল, পাঁচই অগাস্ট যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যেমন বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম ওই আকাঙ্ক্ষার একটা দালিলিক প্রমাণ থাকা দরকার। সেই দালিলিক প্রমাণটা হচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র”।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এটার ওপর ওনারা (সরকার) চূড়ান্ত কী সিদ্ধান্ত নেন, আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করছি”।

এর আগে খসড়ায় দফায় দফায় সংশোধন আনার পর চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে কোন কোন বিষয় যুক্ত থাকছে, সেটি নিয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় জাতীয় নাগরিক পার্টি।

দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমাদের দলের পক্ষ থেকে কয়েকবার ড্রাফট (খসড়া) পাঠিয়েছি। সরকার যেটি চূড়ান্ত করেছে সেটি এখনো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি”।

বাংলাদেশের সংবিধান
বাংলাদেশের সংবিধান

কী কী থাকছে জুলাই সনদে?

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে গত কয়েকদিন নানা আলোচনার পর শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর আগামী পাঁচই অগাস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়াও চূড়ান্ত দিনক্ষণ জানায়।

এরপরই এ নিয়ে নানা কৌতূহল দেখা যায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়াটি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে বলে সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে।

খুব গোপনীয়তার সাথে ঘোষণাপত্র তৈরি করা হচ্ছে সেখানে প্রায় ২৬ থেকে ২৭টি দফা থাকতে পারে বলে জানা গেছে।

এই ঘোষণাপত্রের শুরুতে পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বঞ্চনা, শোষণ নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের বিষয়টি উল্লেখ থাকছে।

পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের একদলীয় বাকশাল কায়েমের বিষয়টিরও উল্লেখ থাকছে ঘোষণাপত্রে। সেই সাথে সিপাহি-জনতার বিপ্লবে বাকশালের অবসান কিভাবে হয়েছিল, সেটিও থাকছে জুলাই ঘোষণাপত্রে।

পরের দফায় আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার সংগ্রাম ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানকেও যুক্ত করা হয়েছে।

খসড়ার পরের দফায় ওয়ান ইলেভেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সে সময় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানের এই ঘোষণাপত্রে যুক্ত থাকছে আওয়ামী লীগ শাসনামলের সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনের ভোট আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, বিগত সরকার সেই ভোটের মাধ্যমে এদেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করেছিল।

শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে বিরোধী মত, জনগণকে চরম নির্যাতন-নিপীড়ন, সরকারী চাকুরীতে একচেটিয়া দলীয় নিয়োগ ও কোটাভিত্তিক বৈষম্যের কারণে ছাত্র, চাকুরী প্রত্যাশী ও নাগরিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের বিষয়গুলোও যুক্ত থাকছে এই ঘোষণাপত্রে।

এর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জনতার অভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের প্রেক্ষাপট, আগামীতে বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার, আওয়ামী লীগ আমলের সকল গুম, খুন, দুর্নীতির বিচার ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংস্কার উদ্যোগের বিষয়গুলোও যুক্ত করা হচ্ছে এই জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত ঘোষণায়।

এই ঘোষণাপত্রের সর্বশেষ দফায় বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লবের এই ঘোষণাপত্র ২০২৪ সালের পাঁচই আগস্ট থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছেন, “ঘোষণাপত্র জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটা দালিলিক প্রমাণ। যেখানে উল্লেখ থাকবে কোন কোন ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল”।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন জাতীয় সংসদের চিত্র

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন জাতীয় সংসদের চিত্র

অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, ঐকমত্যের চেষ্টা

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সরকার ঘোষণাপত্রের খসড়া করে। তখন এর ওপর ৩২টি দলের মতামতও গ্রহণ করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তখন একটি খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরিও করেছিল। অন্যদিকে বিএনপিও একটি খসড়া তৈরি করেছিল।

এরপর এ নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তুত করে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির কাছে তা নিয়ে কয়েক দফায় মতামতও চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে নানা মত পার্থক্য থাকায় কয়েক দফায় সংশোধনী প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।

বর্তমানে যে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছে, সেটি নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সালাহউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তারা কি দেয় সেটি দেখি। যে ড্রাফটিতে আমরা সম্মত হয়েছি, সেটা যদি থাকে তাহলে এক রকম, না থাকলে আরেক রকম”।

এনসিপি ও জামায়াতের দুইটি সূত্র বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে, এই ঘোষণাপত্র নিয়ে গত শুক্রবার বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। যেখানে তিনটি দলটি একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

পরে ওই বৈঠকের পরই শুক্রবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান।

জামায়াত ইসলামীর একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, অনানুষ্ঠানিক সেই বৈঠকে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা ছিলেন। সেই বৈঠকেই খসড়া বিষয়গুলো নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। এরপর পাঁচই অগাস্ট সেটি ঘোষণার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছেছে তিন দল।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সরকার এই বিষয়টি নিয়ে বেশি ফরমালি বসে নাই। ইনফরমালি বিভিন্ন জনের সাথে বসে সমঝোতায় আনার চেষ্টা করছে। ঘোষণাপত্রের ফাইনাল কপি পাওয়ার পর এ নিয়ে মন্তব্য করবো”।

তবে, এই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে যুক্ত করা নিয়ে শুরু থেকে দুই ধরনের মত ছিল বিএনপি এবং এনসিপি ও জামায়াতের মধ্যে।

বিএনপি আগেই জানিয়েছিল, জুলাই ঘোষণাকে সংবিধানের চতুর্থ তপশিলে যুক্ত করতে চায় তারা। পুরো ঘোষণাপত্র নয়, অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি হিসেবে একটি অনুচ্ছেদ এবং ঘোষণাপত্রের উল্লেখ থাকবে।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রস্তাব ছিল সংবিধানের প্রস্তাবনায় জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি থাকুক। এবং পুরো ঘোষণাপত্র সংবিধানে যুক্ত করার দাবি ছিল।

আর জামায়াতও চায় এর সাংবিধানিক ভিত্তি, সেটি যেভাবেই হোক তাতে খুব বেশি আপত্তি নেই দলটির।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ঘোষণাপত্রের আইনগত ভিত্তি যদি না থাকে তাহলে আমরা এটাতে স্বাক্ষর করবো কী-না সেটা আমরা চিন্তা ভাবনা করবো। আমরা এটা সরকারকে জানিয়েছি। যদি আইনগত ভিত্তি থাকে তখনই আমরা এতে স্বাক্ষর করবো”।

বিবিসি নিউজ বাংলা