অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে নিরপেক্ষ বলা যায় না, বিশেষত যখন দেশটি জাতীয় নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে।
প্রায় তিন মাস আগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানি শুরু করেছে। গত বছর তাঁর শাসনবিরোধী বিক্ষোভ দমনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেকের চোখে এটি আওয়ামী লীগকে ক্ষতি করার আরেকটি প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে দলটির অবদান মুছে ফেলার কৌশল। শেখ হাসিনার প্রশাসনে কখনও কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা দেখা গেলেও, শুধুমাত্র একজন নেতাকে মাত্রাতিরিক্ত লক্ষ্যবস্তু করলে বাংলাদেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করা কাঠামোগত দুর্বলতাগুলো আড়ালেই থেকে যায়।
মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আরও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে যখন দেখা যায় বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং ইউনুসের সাবেক ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা তাদের নতুন রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। কোনো একটি দলের নেতার অনুপস্থিতিতেই যদি বিচার চলতে থাকে, তাতে সেই দলের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার যৌক্তিকতা নেই। অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা ছাড়া শক্ত গণতান্ত্রিক সংস্কার বা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি—এর কোনো লক্ষণই স্পষ্ট নয়। ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে আশা করা যায়, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন নতুন করে টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন শেখ হাসিনার বিচার যেন ভারত-বিরোধী প্রচারণায় রূপ না নেয়।
Sarakhon Report 



















