১২:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও লাভে এগিয়ে টয়োটা, ট্রাম্পের শুল্কের মাঝেও বিক্রিতে রেকর্ড মার্থা ওয়াশিংটন থেকে মেলানিয়া ট্রাম্প: যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডিদের পোশাকে ইতিহাস, রাজনীতি ও শক্তির প্রতিচ্ছবি চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলির ঘটনায় কী জানা যাচ্ছে; দলগুলো কেন ক্যাডার রাখে? ট্রাম্প যখন যুদ্ধ শেষের দম্ভ দেখাচ্ছেন, চীন তখন নীরবে শান্তির পথে কাজ করছে অটিজম চিকিৎসার অপ্রতিষ্ঠিত পথে প্রতিটি পরিবার সাত দশক পর ব্রিটিশ মিউজিক্যালে নতুন জীবন পেল প্রিয় ভালুক সম্পর্কের উষ্ণতা ধরে রাখা উচিৎ, পারিবারিক সীমারেখা রক্ষা করে উৎসব উদযাপনের জ্ঞান শৈশবের গভীর ক্ষত থেকে লেখা এক রন্ধনশিল্পীর আত্মস্বীকারোক্তি মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪) ক্ষমতার নৃত্য: ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম প্রকল্পে দানের আড়ালে ব্যবসায়িক স্বার্থের খেলা

ভারতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক বাড়ানোর কারণ: রুশ তেল কেনা, আর অন্যদের ছাড়?

হঠাৎ দ্বিগুণ শুল্ক: ভারতের ওপর ৫০% আমদানি শুল্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার ভারতের পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছেন। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, কেন শুধু ভারতকে এভাবে বিশেষভাবে আলাদা করে লক্ষ্য করা হলো, যখন চীনসহ আরও অনেক দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনছে।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এটা তো মাত্র ৮ ঘণ্টা হয়েছে। সামনে আরও অনেক কিছু আসবে। আপনি প্রচুর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা দেখবেন।” তিনি ইঙ্গিত দেন, অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধেও শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।

চীনের বিরুদ্ধেও কি আসছে শুল্ক?

একই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, চীনের বিরুদ্ধেও কি একই ধরনের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা আছে? তিনি বলেন, “হতে পারে। এটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। হতে পারে।”

Nikki Haley: Is She the Republicans' Last, Best Hope for 2024? | Vanity Fair

তবে এর আগেই, মঙ্গলবার রিপাবলিকান দলের নেত্রী নিকি হ্যালি ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, চীনের মতো প্রতিপক্ষকে যেন ছাড় না দেওয়া হয়, আর মিত্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

হ্যালি বলেন, “ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনা উচিত নয়। কিন্তু চীন, যেটা রাশিয়া ও ইরানের সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা, সেটা ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সুবিধা পেয়েছে। চীনকে ছাড় দিয়ে ভারতের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না।”

ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা শাস্তিমূলক শুল্ক: ২৫% বাড়তি শুল্ক কার্যকর হচ্ছে ২৭ আগস্ট

ট্রাম্প বুধবার যে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, তাতে আগের সপ্তাহে ঘোষিত ২৫% শুল্কের সঙ্গে আরও ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক যোগ হয়েছে। অর্থাৎ এখন ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০% শুল্ক আরোপিত হবে, যা কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে।

এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য বড় বিপর্যয় হয়ে দাঁড়াবে। কারণ বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো বর্তমানে মাত্র ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে।

India, Russia hit back after U.S. accuses Modi government of fuelling Russia's war in Ukraine | CBC News

ভারতের প্রতিবাদ: অন্যায্য ও অযৌক্তিক

ভারত সরকার ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে “অন্যায্য ও অযৌক্তিক” বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য শুধু ভারতকেই নিশানা করা হচ্ছে, যখন অন্য দেশগুলোকে অনেকটাই ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

ভারতের অভিযোগ, একই ধরনের বাণিজ্য অন্য অনেক দেশ করছে, কিন্তু শাস্তি যেন শুধু ভারতের জন্য বরাদ্দ।

শুল্ক রাজনীতি ও বৈশ্বিক ভারসাম্য

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ নতুন নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এভাবে একতরফাভাবে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, বিশেষ করে যখন চীনকে আপাতত শাস্তিমুক্ত রাখা হচ্ছে, তা বৈশ্বিক কূটনীতিতে প্রশ্ন তুলছে। এই পরিস্থিতি আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্যিক ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও লাভে এগিয়ে টয়োটা, ট্রাম্পের শুল্কের মাঝেও বিক্রিতে রেকর্ড

ভারতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক বাড়ানোর কারণ: রুশ তেল কেনা, আর অন্যদের ছাড়?

০৫:৩৯:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

হঠাৎ দ্বিগুণ শুল্ক: ভারতের ওপর ৫০% আমদানি শুল্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার ভারতের পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছেন। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, কেন শুধু ভারতকে এভাবে বিশেষভাবে আলাদা করে লক্ষ্য করা হলো, যখন চীনসহ আরও অনেক দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনছে।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এটা তো মাত্র ৮ ঘণ্টা হয়েছে। সামনে আরও অনেক কিছু আসবে। আপনি প্রচুর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা দেখবেন।” তিনি ইঙ্গিত দেন, অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধেও শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।

চীনের বিরুদ্ধেও কি আসছে শুল্ক?

একই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, চীনের বিরুদ্ধেও কি একই ধরনের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা আছে? তিনি বলেন, “হতে পারে। এটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। হতে পারে।”

Nikki Haley: Is She the Republicans' Last, Best Hope for 2024? | Vanity Fair

তবে এর আগেই, মঙ্গলবার রিপাবলিকান দলের নেত্রী নিকি হ্যালি ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, চীনের মতো প্রতিপক্ষকে যেন ছাড় না দেওয়া হয়, আর মিত্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

হ্যালি বলেন, “ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনা উচিত নয়। কিন্তু চীন, যেটা রাশিয়া ও ইরানের সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা, সেটা ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সুবিধা পেয়েছে। চীনকে ছাড় দিয়ে ভারতের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না।”

ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা শাস্তিমূলক শুল্ক: ২৫% বাড়তি শুল্ক কার্যকর হচ্ছে ২৭ আগস্ট

ট্রাম্প বুধবার যে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, তাতে আগের সপ্তাহে ঘোষিত ২৫% শুল্কের সঙ্গে আরও ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক যোগ হয়েছে। অর্থাৎ এখন ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০% শুল্ক আরোপিত হবে, যা কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে।

এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য বড় বিপর্যয় হয়ে দাঁড়াবে। কারণ বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো বর্তমানে মাত্র ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে।

India, Russia hit back after U.S. accuses Modi government of fuelling Russia's war in Ukraine | CBC News

ভারতের প্রতিবাদ: অন্যায্য ও অযৌক্তিক

ভারত সরকার ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে “অন্যায্য ও অযৌক্তিক” বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য শুধু ভারতকেই নিশানা করা হচ্ছে, যখন অন্য দেশগুলোকে অনেকটাই ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

ভারতের অভিযোগ, একই ধরনের বাণিজ্য অন্য অনেক দেশ করছে, কিন্তু শাস্তি যেন শুধু ভারতের জন্য বরাদ্দ।

শুল্ক রাজনীতি ও বৈশ্বিক ভারসাম্য

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ নতুন নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এভাবে একতরফাভাবে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, বিশেষ করে যখন চীনকে আপাতত শাস্তিমুক্ত রাখা হচ্ছে, তা বৈশ্বিক কূটনীতিতে প্রশ্ন তুলছে। এই পরিস্থিতি আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্যিক ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।