বড় উদাস ছিল সে হাওয়া—
যখন রাজলক্ষ্মী প্রতিদিন হেঁটে ফিরত তার মাসির বাড়িতে
ওই পথে ওই সময়ে কলেজের সব কাজ ফেলে
আমারও যাবার প্রয়োজনটা যেত বেড়ে
শহরের বাতাসেও ছিল জলের ছোঁয়া—
ধানগাছগুলো পাকা রাস্তার পাশে এসে নূয়ে পড়ত
তবুও ভালো লাগত ওর চলার রাস্তাটির হাওয়া
পড়ন্ত বিকেলে সেখানে ধানগাছগুলো হতো আরো সবুজ বা সোনালি
মাঝে মাঝে ওই পথে হাঁটতে বড় ক্লান্তি নামত—
তাই চেপে বসতাম রেলে—
না, ওই দিন রাজলক্ষ্মীও ট্রেনে যেত ঠিক ওই কামরায়—
সেজন্য কোনো মতেই নয়।
আর চানাচুর বা ঝাল মুড়ি—সে তো কখনো একা খাওয়া যায় না
ওই ছাড়া ও কামরাতে আর তো কেউ আমার চেনা থাকত না
থাকলে ঠিক তাদেরও দিতাম।
যেদিন বড় ফোঁটায় বৃষ্টি নামত
রাজলক্ষ্মী হাঁটত ছাতার নিচে
আমি হাঁটতাম ভিজে ভিজে—
ও তো আসলে বোঝেনি কোনোদিন—
জিনসের জ্যাকেট পরে থাকলে
যে কেউ ভিজতে ভালোবাসে।
সময়গুলো পাতাঝরা—
বর্ষা, হেমন্ত শেষে শীত আসে—
শুকনো পাতা বাতাসে ওড়ে—
স্মৃতিগুলো হয় ধূসর
পায়ের পেশি নরম হয়
হাঁটার চেয়ে বসে চলতে ভালোবাসে
ট্রেনের চেয়ে প্লেনের গতি সামনে আসে—
রিসিভার তুলে ৯ নম্বর চাওয়ার
সময় কাটিয়ে ছয় মাসে দিচ্ছে অ্যাপলের নতুন প্রজন্ম
রাস্তা নেই, হাওয়া নেই, নেই কোনো সবুজ পাতা
তবুও কেমন যেন জুড়ে দিল
অন্তর্জালের শিরা।
হঠাৎ বিকেলে অজানা নাম্বার
ভিনদেশ থেকে
কোনো পণ্যের ক্রেতা বলে তুলে নিল দ্রুত লাভের আশায়
একেবারে সরল বাংলায় বলে,
কেমন আছ তুমি—
শুনেছি তুমি ঘোরাফেরা কর নানান দেশে
অনেক তোমার কাজ
এখানে এলে এ নাম্বারে ফোন দিও।
স্বদেশ রায় 



















