১২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
বরিশালের হিজলায় ইলিশ অভিযানে হামলা—মৎস্য কর্মকর্তাসহ ১৫ জন আহত হংকংয়ে রানওয়ে থেকে সমুদ্রে ছিটকে পড়লো কার্গো বিমান সোনার দামে নতুন রেকর্ড — ভরি প্রতি মূল্য ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকায় পৌঁছাল বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা: ঋণ মওকুফের আগে গ্রাহককে অবহিত করতে হবে ভোক্তা আচরণে পরিবর্তন—চট্টগ্রামে ‘ডিজিটাল পেমেন্ট’ বিষয়ক আলোচনায় উদ্যোক্তাদের মতামত গাজায় নতুন করে সহিংসতা—ইসরায়েলি হামলায় ২৬ নিহতের পর যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর হামাসের গুলিতে দুই সেনা নিহতের ঘটনায় গাজায় তীব্র বিমান ও ট্যাংক হামলা—সহায়তা স্থগিত, যুদ্ধবিরতি ভাঙার অভিযোগে নতুন উত্তেজনা স্কুলে সহিংসতা রোধে বেত্রাঘাত পুনরুজ্জীবনের ভাবনা — মালয়েশিয়ায় বিতর্ক অনবোর্ডিংয়ের প্রথম দিনেই লন্ডনের রাস্তাঘাট, অফিস কফি আর চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন ভারতীয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কেরালায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি, নদীর পানি উপচে পড়ায় শতাধিক পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে

মোমো ডিল: মৃত্যু ও শোককে মর্যাদা ও সৌন্দর্যের সঙ্গে দেখার সংবেদনশীল স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র

ভূমিকা

মৃত্যুর পর শোক প্রকাশের সঠিক কোনো উপায় কি আছে? ১৩ মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মোমো ডিল এই প্রশ্নকেই কেন্দ্র করে এগিয়েছে। ধীরাজ জিন্দালের পরিচালনায় নির্মিত এবং রয়্যাল স্ট্যাগ ব্যারেল সিলেক্ট শর্টসের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তিপ্রাপ্ত এই কাজটি শোকের কঠিন বাস্তবতাকে কোমল ও মানবিক দৃষ্টিতে উপস্থাপন করেছে। এখানে শোকের ধারালো প্রান্ত ধীরে ধীরে মসৃণ হয়, তৈরি হয় নিরাময়ের পথ।

কাহিনির ভিত্তি

মহিমা (অনুষ্কা কৌশিক) হঠাৎ মারা যাওয়ার পর তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নমানের (আকাশদীপ অরোরা) জীবনে থেকে যায় অসমাপ্ততার বেদনাবোধ। গল্পের শুরু হয় মহিমার আগে থেকে লেখা আবেগপূর্ণ নোট দিয়ে, যেখানে সে নমানকে বলে—তার মৃত্যুর পর একদিন যেন সে সবচেয়ে জোরে কাঁদে। কিন্তু নমান কাঁদতে পারে না, চোখে জল আসে না। এই অপ্রকাশিত শোক মহিমাকে ফিরিয়ে আনে ভূতের রূপে—যেমনটা সে জীবনে ছিল, প্রাণবন্ত, খোলামেলা ও উচ্ছল। এরপর তারা জয়পুর শহরের রাতের পথে হাঁটতে হাঁটতে জীবনের সিদ্ধান্ত ও স্মৃতিগুলো নতুনভাবে ভাবতে শুরু করে।

টোন ও গল্প বলার ধরন

মোমো ডিল  চমৎকারভাবে ভারসাম্য রক্ষা করেছে—এটি ভূতের গল্প হলেও ভয়ের নয়, জীবনঘনিষ্ঠ গল্প হলেও অতিরিক্ত আবেগময় নয়। ট্র্যাজিক-কমিক উপাদান গল্পটিকে কখনোই ভারী করে তোলে না; বরং এটি শোক প্রশমনের এক শিল্পিত উপায় হয়ে ওঠে। পালক শাহের সংলাপভিত্তিক লেখনী সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল। মহিমার প্রাণবন্ত চরিত্রে জীবনের ছোট ছোট বাস্তবতার ইঙ্গিত মেলে—যেমন সে মজা করে বলে, মৃত্যুর পর অন্তত এখন সে শহরে শর্টস পরতে পারছে।

অভিনয় ও রসায়ন

পরিচালক ধীরাজ জিন্দাল সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে সংযত কিন্তু সচেতন দৃষ্টি ব্যবহার করেছেন। অনুষ্কা কৌশিক ও আকাশদীপ অরোরার সহজ-সরল রসায়ন গল্পটিকে এগিয়ে নিয়েছে, বিশেষত নীরব মুহূর্তগুলোতে। উল্লেখযোগ্য হলো—তাদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ প্লাটোনিক; এখানে প্রেমের নাটকীয়তা নেই, বরং বন্ধুত্বের ক্ষতি যে সমান বেদনাদায়ক হতে পারে, সেটিই ফুটে উঠেছে।

Momo Deal | SHORTS PACKAGE - Mic Drop, Momo Deal, & Raven | 13th ANNUAL DCSAFF 2024

শোক, মৃত্যু ও জীবনের উপলব্ধি

অল্প সময়ের মধ্যেই চলচ্চিত্রটি গভীর বার্তা পৌঁছে দেয়—মৃত্যু যেমন চূড়ান্ত, তেমনই আকস্মিক ও নির্মম। একে ব্যাখ্যা করার কোনো সহজ উপায় নেই, কোনো সমাধান নেই। প্রিয়জনের অনুপস্থিতি নিয়েই বেঁচে থাকতে হয়। শোকের আঘাত প্রায়শই বাইরের দুনিয়ার কাছে অদৃশ্য থেকে যায়।

উপসংহার

বিষাদময় অথচ কোমল, সূক্ষ্ম অথচ স্পর্শকাতর—মোমো ডিল সফল কারণ এটি মৃত্যু ও শোকের জটিলতাকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যায়, তা অস্বীকার করে না। দর্শককে একদিকে বেদনায় আচ্ছন্ন করে, অন্যদিকে সেই বেদনার সঙ্গে বেঁচে থাকার শিল্পও শেখায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশালের হিজলায় ইলিশ অভিযানে হামলা—মৎস্য কর্মকর্তাসহ ১৫ জন আহত

মোমো ডিল: মৃত্যু ও শোককে মর্যাদা ও সৌন্দর্যের সঙ্গে দেখার সংবেদনশীল স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র

১২:৩০:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

ভূমিকা

মৃত্যুর পর শোক প্রকাশের সঠিক কোনো উপায় কি আছে? ১৩ মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মোমো ডিল এই প্রশ্নকেই কেন্দ্র করে এগিয়েছে। ধীরাজ জিন্দালের পরিচালনায় নির্মিত এবং রয়্যাল স্ট্যাগ ব্যারেল সিলেক্ট শর্টসের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তিপ্রাপ্ত এই কাজটি শোকের কঠিন বাস্তবতাকে কোমল ও মানবিক দৃষ্টিতে উপস্থাপন করেছে। এখানে শোকের ধারালো প্রান্ত ধীরে ধীরে মসৃণ হয়, তৈরি হয় নিরাময়ের পথ।

কাহিনির ভিত্তি

মহিমা (অনুষ্কা কৌশিক) হঠাৎ মারা যাওয়ার পর তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নমানের (আকাশদীপ অরোরা) জীবনে থেকে যায় অসমাপ্ততার বেদনাবোধ। গল্পের শুরু হয় মহিমার আগে থেকে লেখা আবেগপূর্ণ নোট দিয়ে, যেখানে সে নমানকে বলে—তার মৃত্যুর পর একদিন যেন সে সবচেয়ে জোরে কাঁদে। কিন্তু নমান কাঁদতে পারে না, চোখে জল আসে না। এই অপ্রকাশিত শোক মহিমাকে ফিরিয়ে আনে ভূতের রূপে—যেমনটা সে জীবনে ছিল, প্রাণবন্ত, খোলামেলা ও উচ্ছল। এরপর তারা জয়পুর শহরের রাতের পথে হাঁটতে হাঁটতে জীবনের সিদ্ধান্ত ও স্মৃতিগুলো নতুনভাবে ভাবতে শুরু করে।

টোন ও গল্প বলার ধরন

মোমো ডিল  চমৎকারভাবে ভারসাম্য রক্ষা করেছে—এটি ভূতের গল্প হলেও ভয়ের নয়, জীবনঘনিষ্ঠ গল্প হলেও অতিরিক্ত আবেগময় নয়। ট্র্যাজিক-কমিক উপাদান গল্পটিকে কখনোই ভারী করে তোলে না; বরং এটি শোক প্রশমনের এক শিল্পিত উপায় হয়ে ওঠে। পালক শাহের সংলাপভিত্তিক লেখনী সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল। মহিমার প্রাণবন্ত চরিত্রে জীবনের ছোট ছোট বাস্তবতার ইঙ্গিত মেলে—যেমন সে মজা করে বলে, মৃত্যুর পর অন্তত এখন সে শহরে শর্টস পরতে পারছে।

অভিনয় ও রসায়ন

পরিচালক ধীরাজ জিন্দাল সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে সংযত কিন্তু সচেতন দৃষ্টি ব্যবহার করেছেন। অনুষ্কা কৌশিক ও আকাশদীপ অরোরার সহজ-সরল রসায়ন গল্পটিকে এগিয়ে নিয়েছে, বিশেষত নীরব মুহূর্তগুলোতে। উল্লেখযোগ্য হলো—তাদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ প্লাটোনিক; এখানে প্রেমের নাটকীয়তা নেই, বরং বন্ধুত্বের ক্ষতি যে সমান বেদনাদায়ক হতে পারে, সেটিই ফুটে উঠেছে।

Momo Deal | SHORTS PACKAGE - Mic Drop, Momo Deal, & Raven | 13th ANNUAL DCSAFF 2024

শোক, মৃত্যু ও জীবনের উপলব্ধি

অল্প সময়ের মধ্যেই চলচ্চিত্রটি গভীর বার্তা পৌঁছে দেয়—মৃত্যু যেমন চূড়ান্ত, তেমনই আকস্মিক ও নির্মম। একে ব্যাখ্যা করার কোনো সহজ উপায় নেই, কোনো সমাধান নেই। প্রিয়জনের অনুপস্থিতি নিয়েই বেঁচে থাকতে হয়। শোকের আঘাত প্রায়শই বাইরের দুনিয়ার কাছে অদৃশ্য থেকে যায়।

উপসংহার

বিষাদময় অথচ কোমল, সূক্ষ্ম অথচ স্পর্শকাতর—মোমো ডিল সফল কারণ এটি মৃত্যু ও শোকের জটিলতাকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যায়, তা অস্বীকার করে না। দর্শককে একদিকে বেদনায় আচ্ছন্ন করে, অন্যদিকে সেই বেদনার সঙ্গে বেঁচে থাকার শিল্পও শেখায়।