১০:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
কানাডায় অনিরাপদ বোধ করছেন ভারতীয়রা, উদ্বেগ জানালেন নয়াদিল্লির হাইকমিশনার নির্বাচন বানচালে হঠাৎ আক্রমণও হতে পারে জেএমবির তৎপরতার সময় বোয়ালমারীতে নির্মম হত্যাকাণ্ড—পলাতক চার আসামির অনুপস্থিতিতে আদালতের দণ্ডাদেশ সিলেটে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি—ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়ক অবরোধ বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি সহযোগিতা ঘিরে ট্রাম্প–লি বৈঠক; বৃহস্পতিবার চীনা প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাৎ রেকর্ড বৃষ্টিপাতে ভিয়েতনামে ভয়াবহ বন্যা—নয়জনের মৃত্যু, নিখোঁজ পাঁচজন নেপাল ও তিব্বতে প্রচণ্ড তুষারঝড়ের কবলে হাজারো ট্রেকার; হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা, পর্যটন বন্ধ ঘোষণা সুপার হেডলাইন: ফটিকছড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু— মা ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার ছয় মাসেই সম্পন্ন হবে আইপিও প্রক্রিয়া—ডিএসইর ডিজিটাল রূপান্তরের ঘোষণা ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু; ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৯৬৪ জন

ভারতের পাটপণ্য আমদানি নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশের পাট শিল্পে সম্ভাব্য ধাক্কা

১১ আগস্ট ২০২৫-এ ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফটি) ‘বিজ্ঞপ্তি নং ২৪/২০২৫–২৬’ জারি করে জানায়—বাংলাদেশ থেকে চারটি হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোডভুক্ত পাটভিত্তিক পণ্য আর স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না; কেবল মুম্বাইয়ের নাভা শেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে। সংশ্লিষ্ট কোডগুলো হলো: ৫৩১০৯০ (পাট/বাস্ট তন্তুর বোনা কাপড়), ৫৬০৮৯০ (পাটের সূক্ষ্ম দড়ি/দড়ি ইত্যাদি), ৫৬০৭৯০ (দড়ি/কেবল প্রভৃতি), ৬৩০৫১০ (পাটের বস্তা/ব্যাগ)।
এর আগে মে–জুন ২০২৫-এও ভারত স্থলপথে কয়েকটি বাংলাদেশি পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছিল; নতুন আদেশ সেই ধারাবাহিকতাকেই আরও কড়াকড়িভাবে জোরদার করেছে।

গত ৫ বছরের পরিসংখ্যান (বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যবিশ্ববাজারে)

নিচে অর্থবছরভিত্তিক (মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি আয়ের সারসংক্ষেপ দেওয়া হলো—

অর্থবছর মোট রপ্তানি আয় (পাট ও পাটজাত)
২০২০–২১ ১,১৬১.৪৮
২০২১–২২ ১,১২৭.৬৩
২০২২–২৩ প্রায় ৯১২
২০২৩–২৪ প্রায় ৮৫৫
২০২৪–২৫ প্রায় ৮২০ (প্রাথমিক হিসাব)

দ্রষ্টব্য: ২০২৪–২৫ সালের অঙ্কটি প্রাথমিক; চূড়ান্ত বার্ষিক বই প্রকাশের পর সামান্য হেরফের হতে পারে।

ভারত-নির্দিষ্ট সাম্প্রতিক (২০২৩) চিত্রপণ্যভিত্তিক

বাংলাদেশ থেকে ভারতে ২০২৩ সালে নির্বাচিত কোডভিত্তিক রপ্তানির আনুমানিক চিত্র—

  • কাঁচা পাট ও অন্যান্য বাস্ট তন্তু (এইচএস ৫৩০৩): প্রায় ৯৩.৬ মিলিয়ন ডলার
  • পাটের বোনা কাপড় (এইচএস ৫৩১০/৫৩১০৯০): প্রায় ৬২.১ মিলিয়ন ডলার
  • পাটের সুতা ও সূক্ষ্ম দড়ি (এইচএস ৫৩০৭): প্রায় ৬১.৮ মিলিয়ন ডলার
  • পাটের বস্তা ও ব্যাগ (এইচএস ৬৩০৫১০): প্রায় ১৮.৩ মিলিয়ন ডলার

উল্লিখিত চারটি ক্যাটাগরিই স্থলপথে সীমিত হওয়ায় রপ্তানির সবচেয়ে ব্যবহার্য অংশের লজিস্টিক ব্যয় ও সময়—দুটিই বাড়বে।

কেন ধাক্কা বেশি লাগবে

  • স্থলপথ নির্ভরতা: পেট্রাপোল–বেনাপোল করিডর দিয়ে দুই দেশের স্থলবন্দরভিত্তিক বাণিজ্যের বড় অংশ সম্পন্ন হয়। এই রুট বন্ধ হলে ফ্রেইট, হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারি-সময়ের চাপ একই সঙ্গে বাড়বে।
  • পূর্ববর্তী কড়াকড়ির প্রভাব: মে ২০২৫-এর পদক্ষেপে স্থলপথে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আমদানিপণ্য সীমিত হয়েছিল; নতুন সিদ্ধান্তে জুট-সেগমেন্টে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হলো।
  • একটি সমুদ্রবন্দরে নির্ভরতা: সব চালান এখন নাভা শেবা দিয়ে যেতে হবে—কন্টেইনার স্বল্পতা, জাহাজের সময়সূচি বিলম্ব ও টার্মিনাল-জটে ‘এক-পয়েন্ট’ ঝুঁকি বাড়বে।

তাৎক্ষণিক প্রভাবসীমান্তঘেঁষা রপ্তানিকারক

যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা এতদিন স্থলপথে কম খরচে দ্রুত পণ্য পাঠাতে পারতেন। এখন তাদের সমুদ্রপথে রিরাউট করতে হবে—ফলে ফ্রেইট ও হ্যান্ডলিং খরচ বাড়বে, ট্রানজিট টাইম দীর্ঘ হবে, এবং জাস্ট-ইন-টাইম ডেলিভারি বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সম্ভাব্য ক্ষতিপরিমাপের চেষ্টা

  • ২০২১–২০২৫ সময়ে জুটখাতে রপ্তানি আয় ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী। ২০২৩ সালে কাঁচা পাট, বোনা কাপড়, সুতা/দড়ি এবং বস্তা/ব্যাগ—এই চার ক্যাটাগরির ভারতগামী মোট বাজার-আকার মিলিয়ে প্রায় ২৩৫–২৩৬ মিলিয়ন ডলারের একটি বড় খণ্ড তৈরি হয়—যার বড় অংশ স্থলপথনির্ভর ছিল।
  • স্থলপথ থেকে সমুদ্রপথে গেলে বিশেষ করে কম-দামি পাটব্যাগ ও সুতায় প্রতি টনে ফ্রেইট/হ্যান্ডলিং খরচ সহজেই দ্বিগুণের কাছাকাছি যেতে পারে। ফলে কম মার্জিনে কাজ করা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

কী করলে ক্ষতি কমবে

দ্বিপক্ষীয় আলাপআলোচনা: নীতিগত কারণ ব্যাখ্যা, মাননিয়ন্ত্রণ বা ডাম্পিং-সংক্রান্ত উদ্বেগ থাকলে তা সমাধানে কূটনৈতিক পর্যায়ে পোর্ট-বৈচিত্র্য, নির্দিষ্ট স্থলবন্দরে প্রি-ক্লিয়ারেন্স বা কোটাভিত্তিক ছাড়ের মতো সেফটি-ভালভ চাওয়া যেতে পারে।

লজিস্টিক পরিকল্পনা শক্ত করা: নাভা শেবা-কেন্দ্রিক রুটে কনসোলিডেটেড শিপমেন্ট, আগাম ক্যারিয়ার–চুক্তি, ট্রানজিট–সময়ের সেবা-মান চুক্তি (এসএলএ) নির্ধারণ ও কন্টেইনার–স্লট নিশ্চিত করা।

বাজার বৈচিত্র্য: ভারত ছাড়াও তুরস্ক, চীন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান ক্রেতা–বাজারে ডিলার–নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা।

পণ্য বৈচিত্র্য (জুট ডাইভারসিফায়েড প্রোডাক্ট): হোম টেক্সটাইল, জিও–টেক্সটাইল, ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ প্রভৃতি উচ্চ-মূল্যের পণ্যে ঝুঁকলেই মার্জিন বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।

বাংলাদেশভারত জুটের দীর্ঘ ইতিহাস

বাঙলার কাঁচা পাট বহুদিন ধরে ভারতের বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মিল–শিল্পের প্রধান কাঁচামাল। ২০১৭ সালের অ্যান্টি–ডাম্পিং শুল্কের পর থেকে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পাটপণ্যের পথ ক্রমশ কঠিন হয়েছে। বর্তমান স্থলবন্দর–সীমাবদ্ধতা সেই টানাপোড়েনের সর্বশেষ অধ্যায়, যা স্বল্পমেয়াদে খরচ ও সময়ে চাপ বাড়ালেও—যথাযথ কূটনীতি, লজিস্টিক পরিকল্পনা ও বাজার–পণ্য বৈচিত্র্যের মাধ্যমে আংশিকভাবে শোষণ করা সম্ভব।

ক্ষতির মাত্রা কমানো

ভারতের নতুন বন্দর–সীমাবদ্ধতা বাংলাদেশের পাটখাতে তাৎক্ষণিকভাবে খরচ, সময় ও অনিশ্চয়তার চাপ বাড়াবে—বিশেষ করে সীমান্তঘেঁষা এসএমই রপ্তানিকারকদের ওপর। তবে পূর্ব-পরিকল্পিত রিরাউটিং, বিকল্প বাজার ও উচ্চ-মূল্যের ডাইভারসিফায়েড পণ্যে মনোযোগ, এবং নীতিগত আলোচনায় সক্রিয়তা—এই তিনটি পথে ক্ষতির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো যেতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কানাডায় অনিরাপদ বোধ করছেন ভারতীয়রা, উদ্বেগ জানালেন নয়াদিল্লির হাইকমিশনার

ভারতের পাটপণ্য আমদানি নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশের পাট শিল্পে সম্ভাব্য ধাক্কা

০৫:০০:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

১১ আগস্ট ২০২৫-এ ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফটি) ‘বিজ্ঞপ্তি নং ২৪/২০২৫–২৬’ জারি করে জানায়—বাংলাদেশ থেকে চারটি হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোডভুক্ত পাটভিত্তিক পণ্য আর স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না; কেবল মুম্বাইয়ের নাভা শেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে। সংশ্লিষ্ট কোডগুলো হলো: ৫৩১০৯০ (পাট/বাস্ট তন্তুর বোনা কাপড়), ৫৬০৮৯০ (পাটের সূক্ষ্ম দড়ি/দড়ি ইত্যাদি), ৫৬০৭৯০ (দড়ি/কেবল প্রভৃতি), ৬৩০৫১০ (পাটের বস্তা/ব্যাগ)।
এর আগে মে–জুন ২০২৫-এও ভারত স্থলপথে কয়েকটি বাংলাদেশি পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছিল; নতুন আদেশ সেই ধারাবাহিকতাকেই আরও কড়াকড়িভাবে জোরদার করেছে।

গত ৫ বছরের পরিসংখ্যান (বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যবিশ্ববাজারে)

নিচে অর্থবছরভিত্তিক (মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি আয়ের সারসংক্ষেপ দেওয়া হলো—

অর্থবছর মোট রপ্তানি আয় (পাট ও পাটজাত)
২০২০–২১ ১,১৬১.৪৮
২০২১–২২ ১,১২৭.৬৩
২০২২–২৩ প্রায় ৯১২
২০২৩–২৪ প্রায় ৮৫৫
২০২৪–২৫ প্রায় ৮২০ (প্রাথমিক হিসাব)

দ্রষ্টব্য: ২০২৪–২৫ সালের অঙ্কটি প্রাথমিক; চূড়ান্ত বার্ষিক বই প্রকাশের পর সামান্য হেরফের হতে পারে।

ভারত-নির্দিষ্ট সাম্প্রতিক (২০২৩) চিত্রপণ্যভিত্তিক

বাংলাদেশ থেকে ভারতে ২০২৩ সালে নির্বাচিত কোডভিত্তিক রপ্তানির আনুমানিক চিত্র—

  • কাঁচা পাট ও অন্যান্য বাস্ট তন্তু (এইচএস ৫৩০৩): প্রায় ৯৩.৬ মিলিয়ন ডলার
  • পাটের বোনা কাপড় (এইচএস ৫৩১০/৫৩১০৯০): প্রায় ৬২.১ মিলিয়ন ডলার
  • পাটের সুতা ও সূক্ষ্ম দড়ি (এইচএস ৫৩০৭): প্রায় ৬১.৮ মিলিয়ন ডলার
  • পাটের বস্তা ও ব্যাগ (এইচএস ৬৩০৫১০): প্রায় ১৮.৩ মিলিয়ন ডলার

উল্লিখিত চারটি ক্যাটাগরিই স্থলপথে সীমিত হওয়ায় রপ্তানির সবচেয়ে ব্যবহার্য অংশের লজিস্টিক ব্যয় ও সময়—দুটিই বাড়বে।

কেন ধাক্কা বেশি লাগবে

  • স্থলপথ নির্ভরতা: পেট্রাপোল–বেনাপোল করিডর দিয়ে দুই দেশের স্থলবন্দরভিত্তিক বাণিজ্যের বড় অংশ সম্পন্ন হয়। এই রুট বন্ধ হলে ফ্রেইট, হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারি-সময়ের চাপ একই সঙ্গে বাড়বে।
  • পূর্ববর্তী কড়াকড়ির প্রভাব: মে ২০২৫-এর পদক্ষেপে স্থলপথে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আমদানিপণ্য সীমিত হয়েছিল; নতুন সিদ্ধান্তে জুট-সেগমেন্টে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হলো।
  • একটি সমুদ্রবন্দরে নির্ভরতা: সব চালান এখন নাভা শেবা দিয়ে যেতে হবে—কন্টেইনার স্বল্পতা, জাহাজের সময়সূচি বিলম্ব ও টার্মিনাল-জটে ‘এক-পয়েন্ট’ ঝুঁকি বাড়বে।

তাৎক্ষণিক প্রভাবসীমান্তঘেঁষা রপ্তানিকারক

যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা এতদিন স্থলপথে কম খরচে দ্রুত পণ্য পাঠাতে পারতেন। এখন তাদের সমুদ্রপথে রিরাউট করতে হবে—ফলে ফ্রেইট ও হ্যান্ডলিং খরচ বাড়বে, ট্রানজিট টাইম দীর্ঘ হবে, এবং জাস্ট-ইন-টাইম ডেলিভারি বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সম্ভাব্য ক্ষতিপরিমাপের চেষ্টা

  • ২০২১–২০২৫ সময়ে জুটখাতে রপ্তানি আয় ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী। ২০২৩ সালে কাঁচা পাট, বোনা কাপড়, সুতা/দড়ি এবং বস্তা/ব্যাগ—এই চার ক্যাটাগরির ভারতগামী মোট বাজার-আকার মিলিয়ে প্রায় ২৩৫–২৩৬ মিলিয়ন ডলারের একটি বড় খণ্ড তৈরি হয়—যার বড় অংশ স্থলপথনির্ভর ছিল।
  • স্থলপথ থেকে সমুদ্রপথে গেলে বিশেষ করে কম-দামি পাটব্যাগ ও সুতায় প্রতি টনে ফ্রেইট/হ্যান্ডলিং খরচ সহজেই দ্বিগুণের কাছাকাছি যেতে পারে। ফলে কম মার্জিনে কাজ করা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

কী করলে ক্ষতি কমবে

দ্বিপক্ষীয় আলাপআলোচনা: নীতিগত কারণ ব্যাখ্যা, মাননিয়ন্ত্রণ বা ডাম্পিং-সংক্রান্ত উদ্বেগ থাকলে তা সমাধানে কূটনৈতিক পর্যায়ে পোর্ট-বৈচিত্র্য, নির্দিষ্ট স্থলবন্দরে প্রি-ক্লিয়ারেন্স বা কোটাভিত্তিক ছাড়ের মতো সেফটি-ভালভ চাওয়া যেতে পারে।

লজিস্টিক পরিকল্পনা শক্ত করা: নাভা শেবা-কেন্দ্রিক রুটে কনসোলিডেটেড শিপমেন্ট, আগাম ক্যারিয়ার–চুক্তি, ট্রানজিট–সময়ের সেবা-মান চুক্তি (এসএলএ) নির্ধারণ ও কন্টেইনার–স্লট নিশ্চিত করা।

বাজার বৈচিত্র্য: ভারত ছাড়াও তুরস্ক, চীন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান ক্রেতা–বাজারে ডিলার–নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা।

পণ্য বৈচিত্র্য (জুট ডাইভারসিফায়েড প্রোডাক্ট): হোম টেক্সটাইল, জিও–টেক্সটাইল, ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ প্রভৃতি উচ্চ-মূল্যের পণ্যে ঝুঁকলেই মার্জিন বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।

বাংলাদেশভারত জুটের দীর্ঘ ইতিহাস

বাঙলার কাঁচা পাট বহুদিন ধরে ভারতের বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মিল–শিল্পের প্রধান কাঁচামাল। ২০১৭ সালের অ্যান্টি–ডাম্পিং শুল্কের পর থেকে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পাটপণ্যের পথ ক্রমশ কঠিন হয়েছে। বর্তমান স্থলবন্দর–সীমাবদ্ধতা সেই টানাপোড়েনের সর্বশেষ অধ্যায়, যা স্বল্পমেয়াদে খরচ ও সময়ে চাপ বাড়ালেও—যথাযথ কূটনীতি, লজিস্টিক পরিকল্পনা ও বাজার–পণ্য বৈচিত্র্যের মাধ্যমে আংশিকভাবে শোষণ করা সম্ভব।

ক্ষতির মাত্রা কমানো

ভারতের নতুন বন্দর–সীমাবদ্ধতা বাংলাদেশের পাটখাতে তাৎক্ষণিকভাবে খরচ, সময় ও অনিশ্চয়তার চাপ বাড়াবে—বিশেষ করে সীমান্তঘেঁষা এসএমই রপ্তানিকারকদের ওপর। তবে পূর্ব-পরিকল্পিত রিরাউটিং, বিকল্প বাজার ও উচ্চ-মূল্যের ডাইভারসিফায়েড পণ্যে মনোযোগ, এবং নীতিগত আলোচনায় সক্রিয়তা—এই তিনটি পথে ক্ষতির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো যেতে পারে।