ভিসা স্থগিতের ঘোষণা
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রবিবার ঘোষণা করেছেন যে গাজাবাসীদের জন্য ভিজিটর ভিসা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, কিছু সংস্থা যাদের মাধ্যমে এসব ভিসা দেওয়া হচ্ছিল, তাদের সঙ্গে হামাসের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে কোনো বিস্তারিত তথ্য তিনি প্রকাশ করেননি।
শনিবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, গাজা থেকে আসা ব্যক্তিদের জন্য ভিজিটর ভিসা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে এবং প্রক্রিয়াটি নতুন করে পর্যালোচনা করা হবে। সাধারণত এই ভিসার মাধ্যমে অসুস্থ বা মানবিক সংকটে থাকা মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পান।
কংগ্রেসের চাপ ও রাজনৈতিক ভূমিকা
রুবিও সিবিএস-এর “ফেস দ্য নেশন” অনুষ্ঠানে বলেন, বিভিন্ন কংগ্রেস সদস্যের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল এবং সেখান থেকেই প্রশাসনের কাছে প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়। তবে কোন কার্যালয় থেকে প্রমাণ এসেছে বা কী ধরনের প্রমাণ—এ বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

এদিকে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ডানপন্থী সমর্থক, লরা লুমার দাবি করেছেন তাঁর প্রচেষ্টার ফলেই ভিসা স্থগিতের সিদ্ধান্ত এসেছে। তিনি অভিযোগ করেন, গাজা থেকে আসা পরিবারগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে।
মানবিক সহায়তা নিয়ে বিতর্ক
লুমার বিশেষভাবে সমালোচনা করেছেন ‘হিল প্যালেস্টাইন’ নামের একটি মার্কিন অলাভজনক সংস্থাকে। এই সংস্থা গাজার গুরুতর আহত শিশু ও পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সংস্থা জানায়, এ পর্যন্ত তারা ৬৩ জন আহত শিশুসহ মোট ১৪৮ জনকে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার জন্য এনেছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থা ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে জানায়, “এটি কোনো শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি নয়, বরং একান্ত চিকিৎসা-সহায়তা কর্মসূচি।”
পরিসংখ্যান ও ভিসা প্রক্রিয়া
চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার ভিসা দেওয়া হয়েছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পাসপোর্টধারী ব্যক্তিদের, যারা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তাদের মধ্যে অনেকে গাজার বাইরেও, যেমন পশ্চিম তীর থেকেও এসেছিলেন।

রুবিওর দাবি, যদিও অল্প কিছু ভিসা সরাসরি শিশুদের জন্য দেওয়া হয়েছিল, তবে তাদের সঙ্গে অভিভাবক অথবা অন্য কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা এই কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করছি এবং কীভাবে ভিসা যাচাই-বাছাই হচ্ছে, তা পুনর্মূল্যায়ন করব।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব সংস্থার হামাসের প্রতি সহানুভূতি বা সম্পর্ক রয়েছে, তাদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আমরা যেতে পারি না।” তবে কোনো নির্দিষ্ট সংস্থার নাম বা অতিরিক্ত প্রমাণ তিনি দেননি।
গাজার মানবিক সংকট ও ট্রাম্পের অবস্থান
সিএনএন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে আরও তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে স্বীকার করেছেন যে গাজায় বাস্তবিক অর্থেই “ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ” চলছে। এতে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অবস্থানের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমি নিজের চোখে দেখছি, আর এটি মিথ্যা করা সম্ভব নয়। তাই আমরা আরও বেশি সক্রিয়ভাবে এই সংকটে জড়াব।”
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















