১১:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচনপ্রত্যাশীদের জন্য অনলাইনে কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ ব্যবস্থা এনবিআরের মাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে তারেক রহমান মিয়ানমারের অসম্পূর্ণ সাধারণ নির্বাচন: জানা দরকার পাঁচটি বিষয়

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৫৫)

বুলু ও চড়ুই
ভেতর বারান্দায় দাঁড়িয়ে আব্বা যখন নিষ্ফল আক্রোশে সরবে ওকে ঝাড়াই করছিলেন সে সময় আনু ডাল নাড়া দিয়ে বলেছিলো, ‘আপনার ভলিয়ম কন্ট্রোলটা বদলানো দরকার, ওটার পৌনেতেরটা বেজে গেছে এই রকম হয়। ওর জিভের কোনো ছিটকিনি নেই; ঠোঁটকাটা, কানকাটা। ‘থলেঝাড়াদের দস্তুরই এইরকম’-ও নিজেই কথাটা চালু করেছে। ভাইবোনদের ভেতরে বয়সে সকলের চেয়ে ছোট ব’লে ওর কিছুটা আদর আছে ঠিকই, কিন্তু যতটুকু সে ভোগ করে তার সবটুকুই প্রায় ওর জোর ক’রে আদায় করা।
এ ব্যাপারে ওর কোনো চক্ষুলজ্জা নেই, বিচার-বিবেচনা নেই, বরং প্রবল স্বেচ্ছাচারী; ওর স্বেচ্ছাচার যে কতোবার বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে তার হিসেব নেই। এক একবার হুট ক’রে এমন একটা কাণ্ড বাধিয়ে বসে যার জট ছাড়ানো সত্যিই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আয়ুব আমলে ওর দস্যিপনার জন্যই আব্বাকে সরকারি চাকরিটি খোয়াতে হয়। ভোগান্তির একশেষ। কি কষ্টই না গেছে সে সময়। প্রাকটিসে নামা, পসার জমানো এসবে খুব বেশি একটা সময় না গেলেও সেবার বিরাট একটা ধকল গিয়েছিলো আব্বার ওপর দিয়ে। সামাল দিতে পেরেছিলেন ঠিকই, কিন্তু চোখের সামনেই সেবারেই কেমন যেন বুড়িয়ে গেলেন।
আনু আবার ডাকে, ‘বুলু, আই বুলু, বুলিয়া-‘
এখন বুলুর একবিন্দু ইচ্ছে নেই ওকে গ্রাহ্যে আনার। হতভাগা। নাই দিলে ও ঠিকই পেয়ে বসবে। এই যে নাম ধ’রে ডাকা, এর পেছনে ওর নিশ্চয়ই কোনো কুমতলব আছে। ধেড়ে খোকাই থেকে যাবে চিরকাল। জুড়ি নেই ওর অনাসৃষ্টিতে। পাঁচ থেকে ষোলো বছরের ভেতর চারচারবার ও নিজের পা ভেঙেছে, আটবার স্কুল বদলেছে, এবং আব্বার চাকরি খেয়েছে। ওর কলেজ ইলেকশনে মাতামাতি, সেও এক কেচ্ছা। মায়ের বাক্স ভাঙা, নিজের হাতঘড়ি খোয়ানো, কি না সে করেছিলো সেবার। আব্বার নাম ভাঙিয়ে তাঁর এক মক্কেলের কাছ থেকেও টাকা নিয়ে বেমালুম ফুঁকে দিয়েছিলো। কোনো সীমা-পরিসীমা নেই ওর গুণের, ও একটি রত্ন।
কে ওকে কষবে, ওর ধাতই যে আলাদা। নিজে যা ভালো বুঝবে ও তাই করবে, কারো সাধ্য নেই ওকে মতলব থেকে নিরস্ত করে। গোঁয়ারের মতো একের পর এক এমন সব কাণ্ড সে করেছে যার ফলে বারবার বিপন্ন হয়ে পড়েছে তাদের গোটা পরিবার। কিন্তু ওর মাথাব্যথা নেই, পরোয়া নেই,-ক্ষতি, ক্ষতি এবং ক্ষতি এই বুঝি ওর উদ্দেশ্য।
জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৫৫)

১২:০০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
বুলু ও চড়ুই
ভেতর বারান্দায় দাঁড়িয়ে আব্বা যখন নিষ্ফল আক্রোশে সরবে ওকে ঝাড়াই করছিলেন সে সময় আনু ডাল নাড়া দিয়ে বলেছিলো, ‘আপনার ভলিয়ম কন্ট্রোলটা বদলানো দরকার, ওটার পৌনেতেরটা বেজে গেছে এই রকম হয়। ওর জিভের কোনো ছিটকিনি নেই; ঠোঁটকাটা, কানকাটা। ‘থলেঝাড়াদের দস্তুরই এইরকম’-ও নিজেই কথাটা চালু করেছে। ভাইবোনদের ভেতরে বয়সে সকলের চেয়ে ছোট ব’লে ওর কিছুটা আদর আছে ঠিকই, কিন্তু যতটুকু সে ভোগ করে তার সবটুকুই প্রায় ওর জোর ক’রে আদায় করা।
এ ব্যাপারে ওর কোনো চক্ষুলজ্জা নেই, বিচার-বিবেচনা নেই, বরং প্রবল স্বেচ্ছাচারী; ওর স্বেচ্ছাচার যে কতোবার বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে তার হিসেব নেই। এক একবার হুট ক’রে এমন একটা কাণ্ড বাধিয়ে বসে যার জট ছাড়ানো সত্যিই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আয়ুব আমলে ওর দস্যিপনার জন্যই আব্বাকে সরকারি চাকরিটি খোয়াতে হয়। ভোগান্তির একশেষ। কি কষ্টই না গেছে সে সময়। প্রাকটিসে নামা, পসার জমানো এসবে খুব বেশি একটা সময় না গেলেও সেবার বিরাট একটা ধকল গিয়েছিলো আব্বার ওপর দিয়ে। সামাল দিতে পেরেছিলেন ঠিকই, কিন্তু চোখের সামনেই সেবারেই কেমন যেন বুড়িয়ে গেলেন।
আনু আবার ডাকে, ‘বুলু, আই বুলু, বুলিয়া-‘
এখন বুলুর একবিন্দু ইচ্ছে নেই ওকে গ্রাহ্যে আনার। হতভাগা। নাই দিলে ও ঠিকই পেয়ে বসবে। এই যে নাম ধ’রে ডাকা, এর পেছনে ওর নিশ্চয়ই কোনো কুমতলব আছে। ধেড়ে খোকাই থেকে যাবে চিরকাল। জুড়ি নেই ওর অনাসৃষ্টিতে। পাঁচ থেকে ষোলো বছরের ভেতর চারচারবার ও নিজের পা ভেঙেছে, আটবার স্কুল বদলেছে, এবং আব্বার চাকরি খেয়েছে। ওর কলেজ ইলেকশনে মাতামাতি, সেও এক কেচ্ছা। মায়ের বাক্স ভাঙা, নিজের হাতঘড়ি খোয়ানো, কি না সে করেছিলো সেবার। আব্বার নাম ভাঙিয়ে তাঁর এক মক্কেলের কাছ থেকেও টাকা নিয়ে বেমালুম ফুঁকে দিয়েছিলো। কোনো সীমা-পরিসীমা নেই ওর গুণের, ও একটি রত্ন।
কে ওকে কষবে, ওর ধাতই যে আলাদা। নিজে যা ভালো বুঝবে ও তাই করবে, কারো সাধ্য নেই ওকে মতলব থেকে নিরস্ত করে। গোঁয়ারের মতো একের পর এক এমন সব কাণ্ড সে করেছে যার ফলে বারবার বিপন্ন হয়ে পড়েছে তাদের গোটা পরিবার। কিন্তু ওর মাথাব্যথা নেই, পরোয়া নেই,-ক্ষতি, ক্ষতি এবং ক্ষতি এই বুঝি ওর উদ্দেশ্য।