বুলু ও চড়ুই
তিন সপ্তাহ পরে তিনি যখন ফিরে এলেন তখন আর তাঁকে চেনা যায় না। পাগলের মতো লণ্ডভণ্ড চেহারা। ঘরের মাঝখানে ঠায় দাঁড়িয়ে উদ্ভ্রান্ত চোখে কি যেন খুঁজতে লাগলেন। সামনের একটাও দাঁত ছিলো না তাঁর। সারা মাথায় ঘা। ‘তোমরা সবাই ভালো আছো তো-‘ এই বলে মেঝের ওপর পড়ে গেলেন। তাঁর হুঁশ ছিলো না তখন। পরে বোঝা গিয়েছিল।
বাড়ি বদল হলো আবার। এবার লালবাগে।
লালবাগের কথা মনে উঠলেই বুলুর চোখের সামনে সবকিছু আঁধার হয়ে যায়, যেমন এই এখন, এই মুহূর্তে; বিকেলের নরোম সোনালি রোদ বিনুনির
ডগার রিবনের মতো খসে যাচ্ছে, খসে যাচ্ছে ধুলোয়, পায়ের তলায়, খসে
যাচ্ছে, খসে যাচ্ছে-
লালবাগ, লালবাগ-
লালবাগ, লালবাগ-
বুলুর কানে তালা লেগে যায়।
একটা নাম ঢোলের শব্দ হয়ে যায়, একটা নাম কামানের গোলাফাটা শব্দ হয়ে যায়; একদিন নিশুতি রাতে রাজপুত্তুর বর তাকে এই লালবাগ থেকেই উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো।
‘
মাহমুদুল হক 



















