বিমান হামলার ঘটনা
নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে একাধিক বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন জিহাদি নিহত হয়েছে। চারটি আলাদা এলাকায় এই হামলা চালানো হয়, যাতে জিহাদিরা গ্রাউন্ড ট্রুপসের ওপর আক্রমণ চালাতে না পারে।
দীর্ঘমেয়াদি সংকট
নাইজেরিয়া দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জিহাদি গোষ্ঠী, সহিংস অপরাধী চক্র, সাম্প্রদায়িক সংঘাত এবং মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহরণের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে।
জাতিসংঘের হিসেবে, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং অন্তত ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
নাগরিক সমাজের উদ্বেগ
শনিবার সাবেক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী এবং সিভিল সোসাইটির কর্মীরা এক যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের কিছু অঞ্চলে “যুদ্ধকালীন হত্যাযজ্ঞের মাত্রা” তৈরি হয়েছে, অথচ দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তিতে রয়েছে।
তারা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দেন, যেখানে বলা হয়েছে—প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুই বছরে অন্তত ১০ হাজার ২১৭ জন নিহত হয়েছেন।
এই সংকট মোকাবিলায় একটি প্রেসিডেনশিয়াল টাস্ক ফোর্স গঠনের দাবি তোলা হয়েছে, যার ক্ষমতা থাকবে উত্তর-পূর্বে বোকো হারাম এবং ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (ISWAP)-এর পুনরুত্থানসহ নানা সংঘাত নিয়ন্ত্রণ করার।
সামরিক দাবি ও সহায়তা
গত সপ্তাহে সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আট মাসে প্রায় ৬০০ জিহাদি নিহত হয়েছে, যদিও এর কোনো স্বাধীন যাচাই হয়নি।
নাইজেরিয়ান এয়ারফোর্স জানিয়েছে, তারা উত্তর-পূর্বে জিহাদিদের ঘাঁটি ধ্বংসে গ্রাউন্ড ট্রুপকে আকাশ থেকে কভার দিয়ে যাবে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাইজেরিয়াকে ৩৪৬ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে, যাতে তারা অস্থিতিশীলতা দমন করতে পারে।
নতুন কৌশল ও হামলা
সিকিউরিটি স্টাডিজ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, এ বছর নাইজেরিয়ার ক্যামেরুন ও নাইজার সীমান্তবর্তী এলাকায় অন্তত ১৫টি জিহাদি হামলা হয়েছে। জিহাদিরা পরিবর্তিত বাণিজ্যিক ড্রোন ব্যবহার করে সেনা ঘাঁটিতে আঘাত করছে, যা সেনাদের পুনর্বহালকে জটিল করে তুলছে।
উত্তর-পশ্চিমে অভিযান ও উদ্ধার
উত্তর-পশ্চিমের কাটসিনা রাজ্যে অপরাধী গ্যাং বা ‘ব্যান্ডিটদের’ ওপর বিমান হামলায় ৭৬ জন অপহৃতকে উদ্ধার করা হয়, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। তবে উদ্ধার অভিযানে এক শিশুর মৃত্যু ঘটে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কমিশনার নাসির মুয়াজু।
এই অভিযান পরিচালিত হয় কাটসিনার উঙ্গুয়ান মানতাউ গ্রামে সাম্প্রতিক এক হামলার পর। সেখানে বন্দুকধারীরা মসজিদে নামাজরতদের ওপর এবং পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায়। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত এবং প্রায় ৬০ জনকে অপহরণ করা হয়। উদ্ধার অভিযানে এদের মধ্যে কয়েকজনকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
কাটসিনা ও পাশের জামফারা রাজ্য উত্তর-পশ্চিমে অপরাধী গ্যাংদের সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাতের শিকার, যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ও বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে।
নাইজেরিয়ার বিমান হামলায় ৩৫ জিহাদি নিহত
-
সারাক্ষণ রিপোর্ট - ১২:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
- 58
জনপ্রিয় সংবাদ




















