পণ্ডিতেরা অনুমান করেন গ্রীষ্টপূর্ব পনেরশ শতাব্দীতে মিশরে আহমীসরা প্রথম যোগ এবং বিয়োগ চিহ্ন ব্যবহার করেন।
যাই হোক এ থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে পঞ্চম ঘাতকে “বর্গ ঘন ঘাত” সপ্তম ঘাতকে ‘বর্গ-বর্গ-ঘন ঘাত বলা হয়ে থাকে।
ঘাতকে (বা শক্তিকে) লিখতে গিয়ে ভারতীয়রা সাধারণতঃ আদ্যক্ষর ব্যবহার করতেন। যেমন কোন রাশির ঘাত (বা শক্তি) বর্গ হলে “ব” লিখতেন। অর্থাৎ যদি ধরা যায় তাঁরা x² কে লিখতে চাইছেন তাহলে যা ব লিখতেন। অনেকক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন অজ্ঞাতরাশি বিভিন্ন ঘাত সহ গুণ করতে গিয়ে ভাবিত শব্দটির আঘক্ষর “ভা” বর্ণটি ভারতীয়রা লিখতেন। যেমন x²y²কে “যা বকাঘভা” শব্দটি ভারতীয় বীজগণিতে দেখা যায়। বাক্শালীর পাণ্ডুলিপিতে বর্গমূল ইত্যাদি লিখতে গিয়ে “মু” শব্দটি লেখা থাকতে দেখা যায়। যেমন
![]()
কোথাও কোথাও বিশেষ করে দ্বিতীয় ভাস্করাচার্যের বীজগণিতে “ক” অর্থাৎ করণীর আদ্যক্ষরটিও উল্লেখ থাকতে দেখা যায়।
ধ্রুবক রাশি: ax+c=0 এই ধরণের বীজগণিতীয় সমীকরণে ৫-রাশিটিকে ধ্রুবক রাশি বলা হয় (ইংরাজীতে এটিকে “Constant term” বলে) প্রাচীন ভারতে এটিকে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন শব্দের সাহায্যে প্রকাশ করা হত। যেমন বাঙ্গালীর পাণ্ডুলিপিতে “দৃশ্য” বলে উল্লেখ থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীকালে এটির পরিবর্তে “রূপ” শব্দটি প্রয়োগ করা হয়।
চিহ্নাদির ইতিহাস নিয়মাদি এবং প্রাথমিক প্রক্রিয়াদি
যোগ বিয়োগের প্রতীক চিহ্ন কবে থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য আমরা জানি না। যেটুকু জানা গেছে তা থেকে বলা যায় যে, এখনকার মত “+” এবং “-” চিহ্ন তখনকার দিনে ব্যবহার করা হত না। এই চিহ্ন দুটি বিভিন্ন প্রতীক চিহ্নের ক্রমোন্নতির ফলে আজ গণিতশাস্ত্রে পাকাপাকি ভাবে স্থান করে নিয়েছে।
পণ্ডিতেরা অনুমান করেন গ্রীষ্টপূর্ব পনেরশ শতাব্দীতে মিশরে আহমীসরা প্রথম যোগ এবং বিয়োগ চিহ্ন ব্যবহার করেন। তাঁরা এবং চিহ্নদুটি যোগ এবং বিয়োগকে বুঝাতে চেয়েছেন। যদিও এখন যেমন “+” এবং “-” চিহ্নের ব্যবহার হয়তো তাঁরা এভাবে বোঝাতে চান নি। অনেক পণ্ডিত বলেন আহমীসরা “A” চিহ্নটি ডান থেকে বাঁদিকে বোঝাবার জন্য ব্যবহার করেছেন কিন্তু প্রাচীন মিশরীয়রা এটিকে বাঁদিক থেকে ডান দিককে বুঝিয়েছেন।
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৭৭)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















