০৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন চিপ শুল্ক নীতি ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় মস্কোয় শিল্প স্থাপনায় আগুন ইন্দোনেশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক সমঝোতা চূড়ান্তের পথে, জানুয়ারিতে স্বাক্ষরের সম্ভাবনা শিকাগোতে সেনা মোতায়েন আটকাল সুপ্রিম কোর্ট, ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতা প্রশ্নের মুখে কুয়েত-চীনের চারশ কোটি ডলারের চুক্তিতে বদলে যাচ্ছে বন্দর ভবিষ্যৎ, জোরালো হবে বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বোমা আর বাস্তুচ্যুতির মাঝখানে গাজা, ফের ঘরছাড়া হওয়ার আতঙ্কে অবরুদ্ধ মানুষ উত্তর সীমান্তে আকাশজুড়ে আলোর স্তম্ভ বিস্ময়ে মুগ্ধ বাসিন্দারা, বিরল শীতের ইঙ্গিত বিশ্ব কূটনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রিয়াদ: সংঘাত নিরসনে সৌদি আরবের সংজ্ঞায়িত বছর ইয়েমেনে বন্দিবিনিময়ে বড় অগ্রগতি, দুই হাজার নয়শ’ জনের মুক্তিতে সমঝোতা অর্থনীতি টিকে থাকলেও জীবনের চাপে ক্লান্ত আমেরিকা, দুশ্চিন্তায় নতুন বছর

আক্রমণাত্মক পদক্ষেপে ট্রাম্পের ক্ষমতার পরীক্ষা

ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নরকে অপসারণের চেষ্টা

ওয়াশিংটন — মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। এবার তিনি ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে অপসারণ করতে চাইছেন। এই পদক্ষেপ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের ইঙ্গিত করা এক গুরুত্বপূর্ণ সীমারেখা অতিক্রম করতে পারে, যা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুরক্ষা দেয়।

আইন ও কর্মকর্তাদের সুরক্ষার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প বারবার এমন ফেডারেল আইন আক্রমণ করেছেন, যা কর্মকর্তাদের নির্বিচারে বরখাস্তের হাত থেকে রক্ষা করে। ভোক্তা সুরক্ষা, শ্রম সংগঠন, ন্যায্য বাণিজ্য ও সিভিল সার্ভিসের সততা দেখভালকারী বহু সংস্থার নির্দিষ্ট মেয়াদে নিয়োজিত ডেমোক্র্যাট কর্মকর্তাদের তিনি বিনা কারণে অপসারণ করেছেন।

Assessing the case against Lisa Cook

কুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া

সোমবার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক চিঠিতে ট্রাম্প দাবি করেন, কুকের বিরুদ্ধে প্রমাণহীন বন্ধক জালিয়াতির অভিযোগই তাকে অপসারণের জন্য যথেষ্ট। কুক, যিনি বাইডেনের নিয়োগপ্রাপ্ত, জানিয়েছেন তিনি পদ ছাড়বেন না। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে ‘কারণে’ বরখাস্ত করার দাবি করছেন, অথচ আইনে এমন কোনো কারণ নেই এবং তার এমন ক্ষমতাও নেই। আমি পদত্যাগ করব না এবং ২০২২ সাল থেকে যেমন আমেরিকার অর্থনীতির সেবা করে আসছি, তা চালিয়ে যাব।”

তার আইনজীবী অ্যাবে লোয়েল বলেছেন, এ বিষয়ে মামলা করা হবে, যা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে গড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফেডারেল রিজার্ভের অবস্থান

ফেডারেল রিজার্ভ মঙ্গলবার জানায়, গভর্নরদের দীর্ঘ মেয়াদ ও পদসুরক্ষা মুদ্রানীতি নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা হিসেবে কাজ করে। এগুলো তথ্য, অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও দীর্ঘমেয়াদি জনস্বার্থের ভিত্তিতে গৃহীত হয়। তারা কুকের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে বলে জানিয়েছে।

In 2nd Term, Trump Pushes Bounds of Presidential Power, Testing Rule of Law - The New York Times

আইনি প্রশ্ন: “কারণ” মানে কী?

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাপক রবার্ট পোস্ট বলেন, আসল প্রশ্ন হলো — “কারণ” বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? তিনি বলেন, “যদি কোনো গভর্নর ঘুষ নেন, তাকে সরানো উচিত — এটা বিতর্কিত নয়। কিন্তু কেবল প্রেসিডেন্টের কথার ভিত্তিতে যদি অপসারণ সম্ভব হয়, তবে এ সুরক্ষার কোনো মানে থাকে না।”

কুকের ক্ষেত্রে অভিযোগটি প্রকাশ করেন বিল পুল্টে, যিনি ট্রাম্পের নিয়োগে ফেডারেল হাউজিং ফাইন্যান্স এজেন্সির প্রধান। তিনি অভিযোগটি বিচার বিভাগে পাঠালেও কুকের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধমূলক মামলা বা দেওয়ানি অভিযোগ আনা হয়নি।

আইনগত প্রেক্ষাপট

১৯১৩ সালে প্রণীত ফেডারেল রিজার্ভ আইন গভর্নরদের জন্য ১৪ বছরের মেয়াদ নির্ধারণ করে, তবে প্রেসিডেন্ট “কারণে” চাইলে অপসারণ করতে পারেন। তবে আইনে “কারণ” শব্দের স্পষ্ট সংজ্ঞা নেই। অন্য স্বাধীন সংস্থার ক্ষেত্রে সাধারণত দায়িত্বে অবহেলা, অদক্ষতা বা দুর্নীতি অপসারণের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ থাকে।

ইতিহাসে কেবল দুইবার কোনো প্রেসিডেন্ট “কারণ” দেখিয়ে মেয়াদসুরক্ষিত কর্মকর্তাকে সরিয়েছেন। ১৯১৩ সালে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট আত্মস্বার্থে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে দু’জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন। ১৯৬৯ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ফ্যানি মে’র প্রধান রেমন্ড ল্যাপিনকে সরিয়েছিলেন, তবে নির্দিষ্ট কারণ জানাননি এবং ল্যাপিনও আদালতে যাননি।

Trump aims high in bid to impose ultimate power | CNN Politics

সুদের হার ও ট্রাম্পের হতাশা

বর্তমান লড়াইয়ের পেছনে আছে ট্রাম্পের ক্ষোভ, কারণ ফেড সুদের হার কমাতে অনিচ্ছুক। সুদ কমানো হলে সাময়িকভাবে অর্থনীতিতে গতি আসতে পারে। কুককে সরাতে পারলে ট্রাম্প নতুন নিয়োগের মাধ্যমে ফেডের গভর্নর বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারেন।

আদালতের প্রেক্ষাপট

ট্রাম্প যেসব কর্মকর্তাকে সরিয়েছেন, তাদের কয়েকজন আদালতে মামলা করে আপাতত পদে বহাল থেকেছেন। আদালত সুপ্রিম কোর্টের পুরোনো নজির দেখিয়ে বলেছে, ভালো কারণ ছাড়া প্রেসিডেন্ট স্বাধীন সংস্থার কর্মকর্তাদের সরাতে পারবেন না। তবে চলতি বছরের বসন্তে সুপ্রিম কোর্ট অস্থায়ীভাবে ট্রাম্পকে এই ক্ষমতা দিয়েছে এবং ৯০ বছরের পুরোনো এক রায় পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছে।

মে মাসে আদালত বাইডেন-নিযুক্ত ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড ও মেরিট সিস্টেমস প্রোটেকশন বোর্ডের সদস্যদের অপসারণ অনুমোদন করে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ রক্ষণশীল বিচারপতিদের মতামত ইঙ্গিত দেয়, ফেডের ক্ষেত্রে আলাদা মানদণ্ড প্রযোজ্য হতে পারে। বিচারপতি এলেনা কাগান ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, আদালত যেন ফেডের জন্য আলাদা ব্যতিক্রম তৈরি করছে।

Kagan calls leak of draft opinion overturning Roe 'horrible' and expects investigation update by month's end | CNN Politics

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার প্রশ্ন

কাগান ও অন্য উদারপন্থী বিচারপতিরা মনে করেন, ফেডের স্বাধীনতা অন্য সংস্থাগুলোর মতোই সাংবিধানিক ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বিশেষজ্ঞও বলেন, আদালতের পক্ষে ফেডকে হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা করা, অথচ বাকি সংস্থাগুলোতে প্রেসিডেন্টকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া — এমন পার্থক্য টানা কঠিন হবে।

মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাপক ইলান ওয়ারম্যান বলেন, “ফেড কেবল ব্যাংক নয়; এটি বিশাল নিয়ন্ত্রক ক্ষমতা রাখে। অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রকদের জন্য প্রেসিডেন্টের ব্যতিক্রমী ক্ষমতার কোনো নজির নেই।”

ঐতিহাসিক ও সাংবিধানিক প্রেক্ষাপট

স্বাধীন সংস্থাগুলোর ইতিহাস ১৮৮০-এর দশক থেকে, যখন শিল্পায়ন বিস্তৃত হওয়ায় কংগ্রেস অরাজনৈতিক সিভিল সার্ভিস ও বিশেষজ্ঞ ব্যুরো গঠন করে। ১৯৩৫ সালে ‘হামফ্রির এক্সিকিউটার’ নামে সুপ্রিম কোর্টের এক রায় এই কাঠামোকে বৈধতা দেয়, যা রাজনৈতিক চাপ থেকে আংশিক সুরক্ষা দেয় এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।

তবে কিছু রক্ষণশীল আইনজ্ঞ বলেন, সংবিধান প্রেসিডেন্টকে অবিভাজ্য নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছে এবং কংগ্রেসের কোনো অধিকার নেই তা সীমিত করার। তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট ইচ্ছামতো নিযুক্ত কর্মকর্তাদের সরাতে পারবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন চিপ শুল্ক নীতি

আক্রমণাত্মক পদক্ষেপে ট্রাম্পের ক্ষমতার পরীক্ষা

০৬:০৭:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নরকে অপসারণের চেষ্টা

ওয়াশিংটন — মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। এবার তিনি ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে অপসারণ করতে চাইছেন। এই পদক্ষেপ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের ইঙ্গিত করা এক গুরুত্বপূর্ণ সীমারেখা অতিক্রম করতে পারে, যা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুরক্ষা দেয়।

আইন ও কর্মকর্তাদের সুরক্ষার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প বারবার এমন ফেডারেল আইন আক্রমণ করেছেন, যা কর্মকর্তাদের নির্বিচারে বরখাস্তের হাত থেকে রক্ষা করে। ভোক্তা সুরক্ষা, শ্রম সংগঠন, ন্যায্য বাণিজ্য ও সিভিল সার্ভিসের সততা দেখভালকারী বহু সংস্থার নির্দিষ্ট মেয়াদে নিয়োজিত ডেমোক্র্যাট কর্মকর্তাদের তিনি বিনা কারণে অপসারণ করেছেন।

Assessing the case against Lisa Cook

কুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া

সোমবার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক চিঠিতে ট্রাম্প দাবি করেন, কুকের বিরুদ্ধে প্রমাণহীন বন্ধক জালিয়াতির অভিযোগই তাকে অপসারণের জন্য যথেষ্ট। কুক, যিনি বাইডেনের নিয়োগপ্রাপ্ত, জানিয়েছেন তিনি পদ ছাড়বেন না। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে ‘কারণে’ বরখাস্ত করার দাবি করছেন, অথচ আইনে এমন কোনো কারণ নেই এবং তার এমন ক্ষমতাও নেই। আমি পদত্যাগ করব না এবং ২০২২ সাল থেকে যেমন আমেরিকার অর্থনীতির সেবা করে আসছি, তা চালিয়ে যাব।”

তার আইনজীবী অ্যাবে লোয়েল বলেছেন, এ বিষয়ে মামলা করা হবে, যা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে গড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফেডারেল রিজার্ভের অবস্থান

ফেডারেল রিজার্ভ মঙ্গলবার জানায়, গভর্নরদের দীর্ঘ মেয়াদ ও পদসুরক্ষা মুদ্রানীতি নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা হিসেবে কাজ করে। এগুলো তথ্য, অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও দীর্ঘমেয়াদি জনস্বার্থের ভিত্তিতে গৃহীত হয়। তারা কুকের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে বলে জানিয়েছে।

In 2nd Term, Trump Pushes Bounds of Presidential Power, Testing Rule of Law - The New York Times

আইনি প্রশ্ন: “কারণ” মানে কী?

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাপক রবার্ট পোস্ট বলেন, আসল প্রশ্ন হলো — “কারণ” বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? তিনি বলেন, “যদি কোনো গভর্নর ঘুষ নেন, তাকে সরানো উচিত — এটা বিতর্কিত নয়। কিন্তু কেবল প্রেসিডেন্টের কথার ভিত্তিতে যদি অপসারণ সম্ভব হয়, তবে এ সুরক্ষার কোনো মানে থাকে না।”

কুকের ক্ষেত্রে অভিযোগটি প্রকাশ করেন বিল পুল্টে, যিনি ট্রাম্পের নিয়োগে ফেডারেল হাউজিং ফাইন্যান্স এজেন্সির প্রধান। তিনি অভিযোগটি বিচার বিভাগে পাঠালেও কুকের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধমূলক মামলা বা দেওয়ানি অভিযোগ আনা হয়নি।

আইনগত প্রেক্ষাপট

১৯১৩ সালে প্রণীত ফেডারেল রিজার্ভ আইন গভর্নরদের জন্য ১৪ বছরের মেয়াদ নির্ধারণ করে, তবে প্রেসিডেন্ট “কারণে” চাইলে অপসারণ করতে পারেন। তবে আইনে “কারণ” শব্দের স্পষ্ট সংজ্ঞা নেই। অন্য স্বাধীন সংস্থার ক্ষেত্রে সাধারণত দায়িত্বে অবহেলা, অদক্ষতা বা দুর্নীতি অপসারণের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ থাকে।

ইতিহাসে কেবল দুইবার কোনো প্রেসিডেন্ট “কারণ” দেখিয়ে মেয়াদসুরক্ষিত কর্মকর্তাকে সরিয়েছেন। ১৯১৩ সালে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট আত্মস্বার্থে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে দু’জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন। ১৯৬৯ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ফ্যানি মে’র প্রধান রেমন্ড ল্যাপিনকে সরিয়েছিলেন, তবে নির্দিষ্ট কারণ জানাননি এবং ল্যাপিনও আদালতে যাননি।

Trump aims high in bid to impose ultimate power | CNN Politics

সুদের হার ও ট্রাম্পের হতাশা

বর্তমান লড়াইয়ের পেছনে আছে ট্রাম্পের ক্ষোভ, কারণ ফেড সুদের হার কমাতে অনিচ্ছুক। সুদ কমানো হলে সাময়িকভাবে অর্থনীতিতে গতি আসতে পারে। কুককে সরাতে পারলে ট্রাম্প নতুন নিয়োগের মাধ্যমে ফেডের গভর্নর বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারেন।

আদালতের প্রেক্ষাপট

ট্রাম্প যেসব কর্মকর্তাকে সরিয়েছেন, তাদের কয়েকজন আদালতে মামলা করে আপাতত পদে বহাল থেকেছেন। আদালত সুপ্রিম কোর্টের পুরোনো নজির দেখিয়ে বলেছে, ভালো কারণ ছাড়া প্রেসিডেন্ট স্বাধীন সংস্থার কর্মকর্তাদের সরাতে পারবেন না। তবে চলতি বছরের বসন্তে সুপ্রিম কোর্ট অস্থায়ীভাবে ট্রাম্পকে এই ক্ষমতা দিয়েছে এবং ৯০ বছরের পুরোনো এক রায় পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছে।

মে মাসে আদালত বাইডেন-নিযুক্ত ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড ও মেরিট সিস্টেমস প্রোটেকশন বোর্ডের সদস্যদের অপসারণ অনুমোদন করে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ রক্ষণশীল বিচারপতিদের মতামত ইঙ্গিত দেয়, ফেডের ক্ষেত্রে আলাদা মানদণ্ড প্রযোজ্য হতে পারে। বিচারপতি এলেনা কাগান ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, আদালত যেন ফেডের জন্য আলাদা ব্যতিক্রম তৈরি করছে।

Kagan calls leak of draft opinion overturning Roe 'horrible' and expects investigation update by month's end | CNN Politics

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার প্রশ্ন

কাগান ও অন্য উদারপন্থী বিচারপতিরা মনে করেন, ফেডের স্বাধীনতা অন্য সংস্থাগুলোর মতোই সাংবিধানিক ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বিশেষজ্ঞও বলেন, আদালতের পক্ষে ফেডকে হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা করা, অথচ বাকি সংস্থাগুলোতে প্রেসিডেন্টকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া — এমন পার্থক্য টানা কঠিন হবে।

মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাপক ইলান ওয়ারম্যান বলেন, “ফেড কেবল ব্যাংক নয়; এটি বিশাল নিয়ন্ত্রক ক্ষমতা রাখে। অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রকদের জন্য প্রেসিডেন্টের ব্যতিক্রমী ক্ষমতার কোনো নজির নেই।”

ঐতিহাসিক ও সাংবিধানিক প্রেক্ষাপট

স্বাধীন সংস্থাগুলোর ইতিহাস ১৮৮০-এর দশক থেকে, যখন শিল্পায়ন বিস্তৃত হওয়ায় কংগ্রেস অরাজনৈতিক সিভিল সার্ভিস ও বিশেষজ্ঞ ব্যুরো গঠন করে। ১৯৩৫ সালে ‘হামফ্রির এক্সিকিউটার’ নামে সুপ্রিম কোর্টের এক রায় এই কাঠামোকে বৈধতা দেয়, যা রাজনৈতিক চাপ থেকে আংশিক সুরক্ষা দেয় এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।

তবে কিছু রক্ষণশীল আইনজ্ঞ বলেন, সংবিধান প্রেসিডেন্টকে অবিভাজ্য নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছে এবং কংগ্রেসের কোনো অধিকার নেই তা সীমিত করার। তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট ইচ্ছামতো নিযুক্ত কর্মকর্তাদের সরাতে পারবেন।