১০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৯) শেয়ারবাজারে টানা উত্থান, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব আরও ইতিবাচক সিরাজগঞ্জে ব্র্যাক–ফিলিপস ফাউন্ডেশনের নতুন চার হেলথ সেন্টার প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমলেও আস্থার লড়াইয়ে এগোচ্ছে চীন কাশ্মীরি মানেই সন্ত্রাসী নন- ওমর আব্দুল্লাহ গোপন সস রক্ষায় কঠোর নজরদারি: রেইজিং কেইনসের রহস্যময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সিআইএ–এর মূল্যায়নকে অস্বীকার করলেন ট্রাম্প ট্রাম্পের কৃষিপণ্য শুল্ক ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে পারে ভারতের রপ্তানি ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৭৮৮ রোগী

শাকসবজির দাম উর্ধ্বমুখী, অধিকাংশই কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে গত তিন সপ্তাহ ধরে শাকসবজির দাম উচ্চ অবস্থানে রয়েছে। অধিকাংশ সবজি কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়ায় ভোক্তাদের হতাশা বাড়ছে।

শুক্রবার মতিঝিল, শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরা ও বাড্ডার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা লাগামহীন দামে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বাড্ডার কাঁচাবাজারে ক্রেতা শাহনিমা আক্তার বলেন, “বেগুন এখনো কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব? পটল যেটা সাধারণত ৫০ টাকায় পাওয়া যেত, সেটার দাম এখন দ্বিগুণ।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দাম যদি এমন থাকে, তাহলে নিম্নআয়ের মানুষ কীভাবে সবজি কিনবে?”

ভাল মানের গোল বেগুন কেজিপ্রতি ১৮০–২২০ টাকা, লম্বা বেগুন ১৪০–১৬০ টাকা এবং সাদা বেগুন ১০০–১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্য সবজির দামও বেড়েছে। পটল কেজিপ্রতি ৮০–১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, বরবটি ১০০–১২০ টাকা, ঝিঙে ৮০–১০০ টাকা এবং করলা ৮০–১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টমেটো কেজিপ্রতি ১৬০–১৮০ টাকা, শসা ৮০–১০০ টাকা এবং গাজর ১৪০–১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতি পিস ৮০–১২০ টাকা, আর কুমড়া ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁপে তুলনামূলক সস্তা হলেও গত সপ্তাহে দাম ১০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায় উঠেছে।

নতুন ওঠা শিম বাজারে এসেছে উচ্চ দামে, কেজিপ্রতি ২৪০–২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উত্তর বাড্ডার সবজি ব্যবসায়ী আসলাম অভিযোগ করেন, “অন্য সময়ের তুলনায় সবজির সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছে। এই মৌসুমে সরবরাহ কম থাকে, তার উপর বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত টোল দিতে হচ্ছে। তাই দাম এত বেশি।”

অন্য ব্যবসায়ী মনসুর বলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরবরাহ বাড়তে পারে, এতে দাম কিছুটা কমবে। ততদিন ভোক্তাদের বেশি দাম মেনে নিতে হবে।

পাতাওয়ালা শাকের দামও বেড়েছে। আগে ১০ টাকায় বিক্রি হওয়া কলমি শাক, পালং শাক বা হেলেঞ্চা এখন ১৫–২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ও কুমড়ার পাতা আগে ৩০–৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০–৭০ টাকায় উঠেছে।

কাঁচামরিচ এখনো কেজিপ্রতি ২০০–২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ৬৫–৭০ টাকায় নেমেছে। তবে রসুন ১২০–১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডালের দাম বেড়েছে—মোটা ডাল কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, আর মসৃণ মানের ডাল ১৬০ টাকা।

মুরগি, গরু, খাসি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৭০–১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০–৩২০ টাকা, আর দেশি মুরগি আকারভেদে ৫৮০–৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক ডজন লাল ডিম ১৫০ টাকা আর সাদা ডিম ১৪০ টাকা। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০–৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০–১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারেও তেমন পরিবর্তন নেই। ইলিশের দাম এখনো অনেক বেশি। এক কেজির ওপরে ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ২,৫০০–২,৮০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ২,৩০০–২,৫০০ টাকা, এক কেজির নিচের ইলিশ ১,৬০০–১,৮০০ টাকা এবং ছোট ইলিশ ৮০০–১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গোল্ডা চিংড়ি কেজিপ্রতি ১,২০০–১,৫০০ টাকা, আর বাগদা চিংড়ি ৮০০–১,০০০ টাকা। রুই কেজিপ্রতি ৩০০–৩৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০–৪০০ টাকা, কালিবাউশ ৩২০–৩৮০ টাকা এবং তেলাপিয়া ২২০–২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবজির দাম না কমলে সামগ্রিক বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে না।

তারা আরও সতর্ক করে বলেছেন, ডিম, মুরগি ও মাছের দাম স্থায়ীভাবে বেশি থাকলে আগামী মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি

শাকসবজির দাম উর্ধ্বমুখী, অধিকাংশই কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে

০৪:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে গত তিন সপ্তাহ ধরে শাকসবজির দাম উচ্চ অবস্থানে রয়েছে। অধিকাংশ সবজি কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়ায় ভোক্তাদের হতাশা বাড়ছে।

শুক্রবার মতিঝিল, শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরা ও বাড্ডার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা লাগামহীন দামে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বাড্ডার কাঁচাবাজারে ক্রেতা শাহনিমা আক্তার বলেন, “বেগুন এখনো কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব? পটল যেটা সাধারণত ৫০ টাকায় পাওয়া যেত, সেটার দাম এখন দ্বিগুণ।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দাম যদি এমন থাকে, তাহলে নিম্নআয়ের মানুষ কীভাবে সবজি কিনবে?”

ভাল মানের গোল বেগুন কেজিপ্রতি ১৮০–২২০ টাকা, লম্বা বেগুন ১৪০–১৬০ টাকা এবং সাদা বেগুন ১০০–১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্য সবজির দামও বেড়েছে। পটল কেজিপ্রতি ৮০–১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, বরবটি ১০০–১২০ টাকা, ঝিঙে ৮০–১০০ টাকা এবং করলা ৮০–১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টমেটো কেজিপ্রতি ১৬০–১৮০ টাকা, শসা ৮০–১০০ টাকা এবং গাজর ১৪০–১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতি পিস ৮০–১২০ টাকা, আর কুমড়া ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁপে তুলনামূলক সস্তা হলেও গত সপ্তাহে দাম ১০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায় উঠেছে।

নতুন ওঠা শিম বাজারে এসেছে উচ্চ দামে, কেজিপ্রতি ২৪০–২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উত্তর বাড্ডার সবজি ব্যবসায়ী আসলাম অভিযোগ করেন, “অন্য সময়ের তুলনায় সবজির সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছে। এই মৌসুমে সরবরাহ কম থাকে, তার উপর বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত টোল দিতে হচ্ছে। তাই দাম এত বেশি।”

অন্য ব্যবসায়ী মনসুর বলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরবরাহ বাড়তে পারে, এতে দাম কিছুটা কমবে। ততদিন ভোক্তাদের বেশি দাম মেনে নিতে হবে।

পাতাওয়ালা শাকের দামও বেড়েছে। আগে ১০ টাকায় বিক্রি হওয়া কলমি শাক, পালং শাক বা হেলেঞ্চা এখন ১৫–২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ও কুমড়ার পাতা আগে ৩০–৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০–৭০ টাকায় উঠেছে।

কাঁচামরিচ এখনো কেজিপ্রতি ২০০–২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ৬৫–৭০ টাকায় নেমেছে। তবে রসুন ১২০–১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডালের দাম বেড়েছে—মোটা ডাল কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, আর মসৃণ মানের ডাল ১৬০ টাকা।

মুরগি, গরু, খাসি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৭০–১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০–৩২০ টাকা, আর দেশি মুরগি আকারভেদে ৫৮০–৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক ডজন লাল ডিম ১৫০ টাকা আর সাদা ডিম ১৪০ টাকা। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০–৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০–১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারেও তেমন পরিবর্তন নেই। ইলিশের দাম এখনো অনেক বেশি। এক কেজির ওপরে ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ২,৫০০–২,৮০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ২,৩০০–২,৫০০ টাকা, এক কেজির নিচের ইলিশ ১,৬০০–১,৮০০ টাকা এবং ছোট ইলিশ ৮০০–১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গোল্ডা চিংড়ি কেজিপ্রতি ১,২০০–১,৫০০ টাকা, আর বাগদা চিংড়ি ৮০০–১,০০০ টাকা। রুই কেজিপ্রতি ৩০০–৩৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০–৪০০ টাকা, কালিবাউশ ৩২০–৩৮০ টাকা এবং তেলাপিয়া ২২০–২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবজির দাম না কমলে সামগ্রিক বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে না।

তারা আরও সতর্ক করে বলেছেন, ডিম, মুরগি ও মাছের দাম স্থায়ীভাবে বেশি থাকলে আগামী মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।