০৯:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচনপ্রত্যাশীদের জন্য অনলাইনে কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ ব্যবস্থা এনবিআরের মাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে তারেক রহমান মিয়ানমারের অসম্পূর্ণ সাধারণ নির্বাচন: জানা দরকার পাঁচটি বিষয়

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৯১)

নবম পরিচ্ছেদ

চিন্তাটা বারবার মনের মধ্যে তোলাপাড়া করে শেষপর্যন্ত আমি এই নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছলুম যে এরকম কোনো চিহ্ন বা লক্ষণ আমার মধ্যে নেই। সঙ্গে আমার এমন কোনো কাগজপত্র ছিল না যা থেকে লাল ফৌজের লোক বলে আমার পরিচয় পাওয়া যায়। এর আগে শ্বেতরক্ষী বাহিনীর সামনে পড়ে যাওয়ার পর পালাতে গিয়ে তারার ব্যাজ-আটা আমার ছাইরঙের লোমের টুপিটা গিয়েছিল হারিয়ে।

ফৌজী কোটটাও আমার ওই একই সময়ে খুলে ফেলে দিয়েছিলুম। ভাঙা রাইফেলটা পরে ফেলে এসেছিলুম জঙ্গলে, আর গুলির ক্রুশ-বেলটাটা ওইদিন সকালেই নদীতে স্নান করতে যাওয়ার আগে কাঁড়েয় রেখে এসেছিলাম। আর তখন আমার গায়ে কালোরঙের যে-টিউনিকটা চড়ানো ছিল, তা ছিল নিতান্তই ইশকুলের ছাত্রের পোশাক। আমার বয়েসটাও সৈন্যদলে নাম লেখানোর উপযোগী ছিল না। তাহলে? আর বাকি রইল কি?

‘ও, হ্যাঁ! আরও একটা জিনিস ছিল বটে। সেটা হল, টিউনিকের নিচে লুকোনো আমার ছোট্ট মাওজারটা। কিন্তু তা ছাড়া? বাকি রইল খালি, কী করে আমি ওই নদীটার ধারে এসে পৌঁছলুম তার কাহিনী। মাওজারটা ওই ঘরেরই উনোনের নিচে লুকিয়ে রাখা চলে। আর নদীর ধারে এসে পড়ার কাহিনী? আরে, গপ্পো তো সব সময়েই একটা-না-একটা বানিয়ে বলা যায়।’

পাছে সবকিছু গোলমাল হয়ে যায় এই ভয়ে স্থির করলুম নিজের নাম, ধাম আর বয়েস ভাঁড়িয়ে ব্যাপারটাকে আর জটিল করে তুলব না। ঠিক করলুম, আমি আমিই থাকব, অর্থাৎ, আমি থাকব বরিস গোরিকভ, আবুজামাস টেকনিক্যাল হাই স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র হয়েই। খালি এর সঙ্গে যোগ করে দেব যে আমি আমার মামার সঙ্গে (তাঁর আসল নামই বলব) খাবুকভ যাচ্ছিলুম মামীমার কাছে কয়েকটা দিন কাটাতে (মামীমার ঠিকানা আমার জানা ছিল না, ঠিকানাটা আমার মামাই জানতেন)। আর খাকভ যাওয়ার পথে মামার সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, আর আমার কাছে পাশ বা অন্য দলিলপত্র না থাকায় (ওসব কাগজপত্র মামার কাছেই ছিল) আমাকে মাঝপথে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।

আমি তখন ঠিক করলুম ট্রেনের লাইন-বরাবর হে’টে পরের স্টেশনে গিয়ে ফের ট্রেন ধরব। কিন্তু ওইখান থেকে লালেদের এলাকা শেষ হয়ে শ্বেতরক্ষীদের এলাকা শুরু হয়েছিল। ওরা যদি জিজ্ঞেস করে পায়ে-হে’টে আসার সময় আমি পেট চালালুম কী করে, তো বলব, গ্রামগুলো থেকে ভিক্ষে করে খাবার সংগ্রহ করে বে’চে থেকেছি।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৯১)

০৮:০০:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নবম পরিচ্ছেদ

চিন্তাটা বারবার মনের মধ্যে তোলাপাড়া করে শেষপর্যন্ত আমি এই নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছলুম যে এরকম কোনো চিহ্ন বা লক্ষণ আমার মধ্যে নেই। সঙ্গে আমার এমন কোনো কাগজপত্র ছিল না যা থেকে লাল ফৌজের লোক বলে আমার পরিচয় পাওয়া যায়। এর আগে শ্বেতরক্ষী বাহিনীর সামনে পড়ে যাওয়ার পর পালাতে গিয়ে তারার ব্যাজ-আটা আমার ছাইরঙের লোমের টুপিটা গিয়েছিল হারিয়ে।

ফৌজী কোটটাও আমার ওই একই সময়ে খুলে ফেলে দিয়েছিলুম। ভাঙা রাইফেলটা পরে ফেলে এসেছিলুম জঙ্গলে, আর গুলির ক্রুশ-বেলটাটা ওইদিন সকালেই নদীতে স্নান করতে যাওয়ার আগে কাঁড়েয় রেখে এসেছিলাম। আর তখন আমার গায়ে কালোরঙের যে-টিউনিকটা চড়ানো ছিল, তা ছিল নিতান্তই ইশকুলের ছাত্রের পোশাক। আমার বয়েসটাও সৈন্যদলে নাম লেখানোর উপযোগী ছিল না। তাহলে? আর বাকি রইল কি?

‘ও, হ্যাঁ! আরও একটা জিনিস ছিল বটে। সেটা হল, টিউনিকের নিচে লুকোনো আমার ছোট্ট মাওজারটা। কিন্তু তা ছাড়া? বাকি রইল খালি, কী করে আমি ওই নদীটার ধারে এসে পৌঁছলুম তার কাহিনী। মাওজারটা ওই ঘরেরই উনোনের নিচে লুকিয়ে রাখা চলে। আর নদীর ধারে এসে পড়ার কাহিনী? আরে, গপ্পো তো সব সময়েই একটা-না-একটা বানিয়ে বলা যায়।’

পাছে সবকিছু গোলমাল হয়ে যায় এই ভয়ে স্থির করলুম নিজের নাম, ধাম আর বয়েস ভাঁড়িয়ে ব্যাপারটাকে আর জটিল করে তুলব না। ঠিক করলুম, আমি আমিই থাকব, অর্থাৎ, আমি থাকব বরিস গোরিকভ, আবুজামাস টেকনিক্যাল হাই স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র হয়েই। খালি এর সঙ্গে যোগ করে দেব যে আমি আমার মামার সঙ্গে (তাঁর আসল নামই বলব) খাবুকভ যাচ্ছিলুম মামীমার কাছে কয়েকটা দিন কাটাতে (মামীমার ঠিকানা আমার জানা ছিল না, ঠিকানাটা আমার মামাই জানতেন)। আর খাকভ যাওয়ার পথে মামার সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, আর আমার কাছে পাশ বা অন্য দলিলপত্র না থাকায় (ওসব কাগজপত্র মামার কাছেই ছিল) আমাকে মাঝপথে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।

আমি তখন ঠিক করলুম ট্রেনের লাইন-বরাবর হে’টে পরের স্টেশনে গিয়ে ফের ট্রেন ধরব। কিন্তু ওইখান থেকে লালেদের এলাকা শেষ হয়ে শ্বেতরক্ষীদের এলাকা শুরু হয়েছিল। ওরা যদি জিজ্ঞেস করে পায়ে-হে’টে আসার সময় আমি পেট চালালুম কী করে, তো বলব, গ্রামগুলো থেকে ভিক্ষে করে খাবার সংগ্রহ করে বে’চে থেকেছি।