নবম পরিচ্ছেদ
টেলিফোন নামিয়ে রাখার পর আরেক জন, মনে হল একজন অফিসারই, ক্যাপটেনকে জিজ্ঞেস করল:
‘শুভা’স কি বেগিচেভের বাহিনী সম্বন্ধে নতুন কোনো খবর রাখে?’ ‘না। গতকাল দুটো লাল কুস্তারেভের জমিদারবাড়িতে ঢুকেছিল। কিন্তু তাদের ধরা যায় নি। ও, হ্যাঁ, ভালো কথা, একটা রিপোর্ট লিখে ফ্যালো দেখি। তাতে জানাও যে ভাৎসের গোয়েন্দা বিভাগের খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে যে শেবালভের বাহিনী কর্নেল জিখারেভের বাহিনীর ফাঁক দিয়ে গলে লালদের রক্ষাব্যূহের এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়তে চেষ্টা করছে। তাদের বেগিচেভের সঙ্গে মেলাটা যে-কোনো প্রকারে ঠেকাতে হবে। আচ্ছা, থোকা, চলে এস ছোটহাজরি খেয়ে নেয়া যাক। খেয়েদেয়ে এখন একটু বিশ্রাম কর, তারপর ভেবে দেখা যাক কোথায়, কীভাবে তোমাকে কাজ দেয়া যায়।’
খাওয়ার টেবিলে বসতে-না-বসতেই ক্যাপুটেনের পরিচারক আমাদের সামনে একপাত্র ধোঁয়া-ওঠা ভারেনিক, একটা আন্ত মুরগি, আর শুয়োরের মাংসভাজা চিড়বিড়ে ফ্রাইং প্যান-সুদ্ধ বসিয়ে দিয়ে গেল। চেহারা দিয়ে বিচার করতে হলে মুরগিটাকে বাচ্চা না-বলে পুরোদস্তুর ধাড়ি মোরগ বললেই ভালো হত। যাই হোক, ভাগ্য শেষপর্যন্ত আমার ওপর প্রসন্ন হয়েছে মনে ভেবে খুশি হয়ে কাঠের একটা চামচ তুলে নিতে যাব এমন সময় গেটের দিক থেকে একটা গোলমাল কানে এল। কারা যেন চে’চিয়ে কথা বলছে আর গালাগাল দিচ্ছে।
পরিচারক ফিরে এসে বলল, ‘আপনারে দরকার পড়েচে, হুজুর। রাইফেল লিয়ে এটা লাল নোক ধরা পড়েচে। জাবেলেন্নির মাঠে এক কাঁড়ের ভিতর পেয়েচে ওরে। মেশিনগানওলারা মাঠে ঘাস কাটতি গেছল। তা, ওরা নোকটারে কু’ড়ের ভিতুরি পেয়ে গেল। এটা রাইফেল আর এটা বোমা পাশে রেখি নোকটা ঘুমুচ্ছিল। তা, ওরা তার ঘাড়ের উপরি ঝাঁপ খেয়ে পড়ি পিছমোড়া করি বেধে এনেচে। লোকটারে কি ভিত্সর আনতে কব হুজুর?’
‘নিয়ে আসতে বল। তবে এখানে নয়। পাশের ঘরে লোকটাকে নিয়ে অপেক্ষা করতে বল, ততক্ষণ আমি হাজরিটা খেয়ে নিই।’
আবার একবার কয়েক জোড়া পায়ের আওয়াজ আর মাটিতে রাইফেলের কু’দো ঠোকার শব্দ শোনা গেল।
‘এইদিক এস!’ পাশের ঘরে কার যেন চিৎকার শোনা গেল। ‘এই বেঞ্চিটায় বোসো দিকিন। আরে, ট্রপিটে খোলো না বাপু দেবদেবীর ছবি দেখতে পাও না?’
‘হাত দুটোরে আগে খুলে দে’ পরে খ্যাঁচাও দেখি!’