০২:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৯৮)

নবম পরিচ্ছেদ

সে এক যন্ত্রণাদায়ক মুহূর্ত।

তখন সমস্যা দাঁড়াল, অবাক হয়ে গিয়ে চোখমুখের কোনো ভঙ্গি কিংবা কথা বলে ওঠার মধ্যে দিয়ে চুবুক যাতে আমার পরিচয় ফাঁস করে না-ফেলেন সেটা ঠেকানো। ও’কে একথা বুঝিয়ে দিতে হবে যে ও’কে বাঁচানোর জন্যে আমার যথাসাধ্য চেষ্টা আমি করব।

মাথা হেট করে বসেছিলেন চুবুক। যেতে-যেতে আমি কেশে উঠলুম। উনি মাথা তুলে তাকিয়েই সঙ্গে সঙ্গে পেছনে ঢলে পড়লেন।

কিন্তু পিঠটা দেয়ালে ঠেকার আগেই নিজেকে সামলে নিলেন উনি। চমকে উঠে ঠোঁটের ডগায় যে-কথাগুলো এসে পড়েছিল ও’র তাও গিলে ফেললেন। এদিকে কাশি চাপার ভান করে আমি ঠোঁটে একটা আঙুল ছোঁয়ালুম। চুবুক যেভাবে তাঁর

চোখ দুটো কু’চকে একবার আমার দিকে আরেকবার আমার পেছনের পরিচারকের দিকে তাকালেন, তাতে আমি বুঝলুম উনি আসল ব্যপারটা ধরতে পারেন নি, ও’র ধারণা হয়েছে আমাকেও ওঁরই মতো সন্দেহ করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ওঁর চোখের দৃষ্টি বদলে গেল, মনে হল ওই দুটো চোখ যেন উৎসাহ দিয়ে বলতে চাইল: ‘ভয় পেয়ো না, আমি তোমার পরিচয় ফাঁস করে দেব না।’

আমাদের চার চোখের এই নিঃশব্দ কথা-চালাচালি এত দ্রুত শেষ হয়ে গেল যে তা আর কারো নজরেই পড়ল না। এলোমেলোভাবে পা চালিয়ে আমি ঘরটা থেকে উঠোনে বেরিয়ে এলুম।

বাড়ির সংলগ্ন একটা ছোট্ট চালাঘর দেখিয়ে পরিচারক বললে, ‘এদিক আসেন। ঘরের ভিতর খড় আচে, এটা কম্বলও পাবেন। দোর দিয়ে ঘুমাবেন কিন্তু, নইলে রাজ্যির শোরগুলা গিয়ে ভিত্সর সে’ধোবে’খন।’

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৯৮)

০৮:০০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নবম পরিচ্ছেদ

সে এক যন্ত্রণাদায়ক মুহূর্ত।

তখন সমস্যা দাঁড়াল, অবাক হয়ে গিয়ে চোখমুখের কোনো ভঙ্গি কিংবা কথা বলে ওঠার মধ্যে দিয়ে চুবুক যাতে আমার পরিচয় ফাঁস করে না-ফেলেন সেটা ঠেকানো। ও’কে একথা বুঝিয়ে দিতে হবে যে ও’কে বাঁচানোর জন্যে আমার যথাসাধ্য চেষ্টা আমি করব।

মাথা হেট করে বসেছিলেন চুবুক। যেতে-যেতে আমি কেশে উঠলুম। উনি মাথা তুলে তাকিয়েই সঙ্গে সঙ্গে পেছনে ঢলে পড়লেন।

কিন্তু পিঠটা দেয়ালে ঠেকার আগেই নিজেকে সামলে নিলেন উনি। চমকে উঠে ঠোঁটের ডগায় যে-কথাগুলো এসে পড়েছিল ও’র তাও গিলে ফেললেন। এদিকে কাশি চাপার ভান করে আমি ঠোঁটে একটা আঙুল ছোঁয়ালুম। চুবুক যেভাবে তাঁর

চোখ দুটো কু’চকে একবার আমার দিকে আরেকবার আমার পেছনের পরিচারকের দিকে তাকালেন, তাতে আমি বুঝলুম উনি আসল ব্যপারটা ধরতে পারেন নি, ও’র ধারণা হয়েছে আমাকেও ওঁরই মতো সন্দেহ করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ওঁর চোখের দৃষ্টি বদলে গেল, মনে হল ওই দুটো চোখ যেন উৎসাহ দিয়ে বলতে চাইল: ‘ভয় পেয়ো না, আমি তোমার পরিচয় ফাঁস করে দেব না।’

আমাদের চার চোখের এই নিঃশব্দ কথা-চালাচালি এত দ্রুত শেষ হয়ে গেল যে তা আর কারো নজরেই পড়ল না। এলোমেলোভাবে পা চালিয়ে আমি ঘরটা থেকে উঠোনে বেরিয়ে এলুম।

বাড়ির সংলগ্ন একটা ছোট্ট চালাঘর দেখিয়ে পরিচারক বললে, ‘এদিক আসেন। ঘরের ভিতর খড় আচে, এটা কম্বলও পাবেন। দোর দিয়ে ঘুমাবেন কিন্তু, নইলে রাজ্যির শোরগুলা গিয়ে ভিত্সর সে’ধোবে’খন।’