০৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত চার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮) রাশিয়া, চীন ও ইরানের মাঝের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পরও পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কার

ভূমিকম্পের দুঃসময়েও পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কার

গত সপ্তাহান্তে আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১,৪০০-এরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার আফগান শরণার্থীকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এদের অনেকের কাছে জাতিসংঘের দেওয়া বৈধ নিবন্ধন নথি রয়েছে।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ফেরত পাঠানোর ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। গ্রেপ্তার ও হয়রানির ভয়ে পরিবারগুলো সীমান্ত অতিক্রম করছে।

পাকিস্তানে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আফগান শরণার্থী

সোভিয়েত আক্রমণ থেকে শুরু করে ২০২১ সালে তালেবান পুনর্দখলের পর পর্যন্ত পাকিস্তান আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে এসেছে। কেউ কেউ পাকিস্তানে কাজ ও শিক্ষার সুযোগ পেয়ে জীবন গড়ে তুলেছেন। অনেকে সেখানে জন্মেছেন এবং কেউ কেউ পশ্চিমা দেশে পুনর্বাসনের অপেক্ষায় ছিলেন।

তবে ইসলামাবাদ আফগান শরণার্থীদের সহিংসতা ও জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য দায়ী করে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ২০২৩ সালের শুরুতে সরকার তাদের “সন্ত্রাসী ও অপরাধী” হিসেবে আখ্যা দিয়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ১২ লাখের বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে এ বছরই প্রায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার।

Thousands of Afghans expelled from Pakistan despite quake | Arab News

নিবন্ধিত শরণার্থীদেরও টার্গেট করা হচ্ছে

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার দেওয়া “প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন” (PoR) কার্ডধারী প্রায় ১৩ লাখ আফগানকে সর্বশেষ দফায় টার্গেট করা হয়েছে। তাদের ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় পাকিস্তান ছাড়তে বলা হয়, নইলে আটক ও বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হয়।

সময়সীমার আগের সপ্তাহগুলোতে আফগান পরিবারগুলো পুলিশি অভিযানে অর্থ আদায় ও হয়রানির অভিযোগ তোলে। অনেকেই তাই সীমান্তের দিকে গাড়িবহর নিয়ে পালাতে শুরু করে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, আগস্টের শেষ সপ্তাহে প্রায় ২৫ হাজার ৪৯০ আফগান দেশে ফিরে গেছেন, যার অর্ধেকই নিবন্ধন কার্ডধারী। “পুলিশ বারবার আমাদের আটক করত, আমাদের জিনিসপত্র কেড়ে নিত,” বলেন খান ওয়ালি, যিনি লাহোর থেকে পালিয়ে এসে স্পিন বোলদাক সীমান্তে পৌঁছেছেন।

Thousands of Afghans expelled from Pakistan despite quake | Arab News

রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন

কেউ কেউ জানিয়েছেন যে পেশাওয়ারে অবস্থা কিছুটা ভালো, তবে ইসলামাবাদে ‘মানুষ নরকের জীবনযাপন করছে’ বলে অভিযোগ করেন তারা।

ভূমিকম্প ও বহিষ্কারের ধাক্কা একসঙ্গে

এই জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর সময়ই আফগানিস্তান ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত। পুরো গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে, যেখানে অনেক নতুন ফেরত আসা অভিবাসী বসতি গড়েছিলেন।

বিশ্লেষকদের ধারণা, পাকিস্তানের এই বহিষ্কার নীতি কাবুলের তালেবান প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, আফগান মাটিকে ব্যবহার করে জঙ্গিরা সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে। তবে তালেবান সরকার এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পরও পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কার

০৫:০০:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভূমিকম্পের দুঃসময়েও পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কার

গত সপ্তাহান্তে আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১,৪০০-এরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার আফগান শরণার্থীকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এদের অনেকের কাছে জাতিসংঘের দেওয়া বৈধ নিবন্ধন নথি রয়েছে।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ফেরত পাঠানোর ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। গ্রেপ্তার ও হয়রানির ভয়ে পরিবারগুলো সীমান্ত অতিক্রম করছে।

পাকিস্তানে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আফগান শরণার্থী

সোভিয়েত আক্রমণ থেকে শুরু করে ২০২১ সালে তালেবান পুনর্দখলের পর পর্যন্ত পাকিস্তান আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে এসেছে। কেউ কেউ পাকিস্তানে কাজ ও শিক্ষার সুযোগ পেয়ে জীবন গড়ে তুলেছেন। অনেকে সেখানে জন্মেছেন এবং কেউ কেউ পশ্চিমা দেশে পুনর্বাসনের অপেক্ষায় ছিলেন।

তবে ইসলামাবাদ আফগান শরণার্থীদের সহিংসতা ও জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য দায়ী করে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ২০২৩ সালের শুরুতে সরকার তাদের “সন্ত্রাসী ও অপরাধী” হিসেবে আখ্যা দিয়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ১২ লাখের বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে এ বছরই প্রায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার।

Thousands of Afghans expelled from Pakistan despite quake | Arab News

নিবন্ধিত শরণার্থীদেরও টার্গেট করা হচ্ছে

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার দেওয়া “প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন” (PoR) কার্ডধারী প্রায় ১৩ লাখ আফগানকে সর্বশেষ দফায় টার্গেট করা হয়েছে। তাদের ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় পাকিস্তান ছাড়তে বলা হয়, নইলে আটক ও বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হয়।

সময়সীমার আগের সপ্তাহগুলোতে আফগান পরিবারগুলো পুলিশি অভিযানে অর্থ আদায় ও হয়রানির অভিযোগ তোলে। অনেকেই তাই সীমান্তের দিকে গাড়িবহর নিয়ে পালাতে শুরু করে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, আগস্টের শেষ সপ্তাহে প্রায় ২৫ হাজার ৪৯০ আফগান দেশে ফিরে গেছেন, যার অর্ধেকই নিবন্ধন কার্ডধারী। “পুলিশ বারবার আমাদের আটক করত, আমাদের জিনিসপত্র কেড়ে নিত,” বলেন খান ওয়ালি, যিনি লাহোর থেকে পালিয়ে এসে স্পিন বোলদাক সীমান্তে পৌঁছেছেন।

Thousands of Afghans expelled from Pakistan despite quake | Arab News

রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন

কেউ কেউ জানিয়েছেন যে পেশাওয়ারে অবস্থা কিছুটা ভালো, তবে ইসলামাবাদে ‘মানুষ নরকের জীবনযাপন করছে’ বলে অভিযোগ করেন তারা।

ভূমিকম্প ও বহিষ্কারের ধাক্কা একসঙ্গে

এই জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর সময়ই আফগানিস্তান ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত। পুরো গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে, যেখানে অনেক নতুন ফেরত আসা অভিবাসী বসতি গড়েছিলেন।

বিশ্লেষকদের ধারণা, পাকিস্তানের এই বহিষ্কার নীতি কাবুলের তালেবান প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, আফগান মাটিকে ব্যবহার করে জঙ্গিরা সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে। তবে তালেবান সরকার এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।