০৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত চার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮) রাশিয়া, চীন ও ইরানের মাঝের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা, চীন ও রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছেন মোদি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরে যাওয়া

চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত ধরাধরির দৃশ্য বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এই চিত্র প্রমাণ করছে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতকে নিজের কূটনৈতিক পরিধিতে টানা সম্ভব হচ্ছে না।

বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতকে চীন ও রাশিয়ার বিপরীতে কৌশলগত শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলো সেই লক্ষ্যকে দুর্বল করেছে। বিশেষ করে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং সস্তা রুশ তেল কেনার জন্য প্রকাশ্যে নয়াদিল্লিকে সমালোচনা করা সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়িয়েছে।

নতুন মৈত্রী ও সংকেত

চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই তিন দেশের নেতাদের একসঙ্গে দেখা গেছে। একই সময়ে মোদির রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিত ট্রাম্পের জন্য স্পষ্ট বার্তা।

প্রখ্যাত বিশ্লেষক অ্যাশলি টেলিস মনে করেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে সম্পর্ক মেরামতের পথে না হাঁটার কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক একটি “অবনতির চক্রে” আটকে পড়েছে। তার মতে, ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য এখন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা, আর সেটাই অন্য সব ভূরাজনৈতিক বিষয়কে ঢেকে দিচ্ছে।

ভারতের অসন্তোষ

ভারতীয় কর্মকর্তারা বারবার অভিযোগ করেছেন যে তাদের বাণিজ্য প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে। একইসঙ্গে ট্রাম্প পাকিস্তানকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে তিনি ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রেখেছেন—যা নয়াদিল্লি কেবল দ্বিপাক্ষিক ইস্যু হিসেবে দেখে।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের বিশেষজ্ঞ তানভি মদন মনে করেন, ট্রাম্প যখন নিজেই পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন, তখন ভারতের সেই একই সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা ভারতীয়দের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। তার মতে, এর ফলে ভারত কৌশলগত স্বাধীনতার পথেই আরও দৃঢ় হবে।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যানা কেলি বলেছেন, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি অনন্য, কারণ তিনি সবার সঙ্গে কঠিনভাবে আলোচনায় বসতে পারেন এবং মার্কিন জনগণের জন্য ভালো চুক্তি আনতে সক্ষম। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্প-মোদি সম্পর্ক সম্মানজনক এবং উভয় দেশের দলগুলো কূটনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক অগ্রাধিকারের বিষয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছে।

ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি। তবে এক অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য অন্যায্য হলেও নয়াদিল্লি সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। একই সঙ্গে তিনি জানান, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার প্রক্রিয়া অক্টোবর থেকেই শুরু হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে নয়।

চীন-ভারত দ্বন্দ্ব পেরিয়ে নতুন সম্পর্ক

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করা ভারতের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা ও ২০২০ সালে সীমান্ত সংঘর্ষ ছিল। সাত বছর পর মোদির এটি প্রথম চীন সফর। ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত অংশীদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতি মিত্র দেশগুলোকেই বেশি চাপে ফেলছে।

ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করেছেন যে ভারত বহু বছর ধরে একপাক্ষিকভাবে সুবিধা নিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি ব্রিকস জোটকে “আমেরিকা-বিরোধী” বলে অভিহিত করেছেন। ব্রাজিলকেও তিনি শুল্ক ও রাজনৈতিক অভিযোগের মাধ্যমে চাপে ফেলেছেন।

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো মন্তব্য করেন, “বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের নেতা মোদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা দুঃখজনক।”

‘কোয়াড’ জোটে ঝুঁকি

প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ভারতকে কাছে টানার চেষ্টা করেছিলেন। ২০১৯ সালে টেক্সাসে “হাউডি মোদি” সমাবেশ আয়োজন করেছিলেন এবং জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে নিরাপত্তা জোট ‘কোয়াড’কে নতুন করে সক্রিয় করেছিলেন। মোদিও ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের পর দ্রুত অভিনন্দন জানান এবং সম্পর্ক জোরদারের পদক্ষেপ নেন।

তবে খুব দ্রুত ট্রাম্প বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ও অভিবাসন নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। ফেব্রুয়ারিতে মোদির ওয়াশিংটন সফরে দুই দেশ একটি সীমিত বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগোতে সম্মত হয়, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা।

ভারত নভেম্বর মাসে কোয়াড সম্মেলনের আয়োজন করবে বলে আশা করা হচ্ছিল, যেখানে চীনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বিষয়ক ইস্যু আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হতো। তবে ট্রাম্প এখনও সেই সফরের পরিকল্পনা করেননি। বরং তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা

টেলিসের মতে, ট্রাম্প এখন মনে করেন “কোয়াড” তার কাছে অপরিহার্য নয়। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা ব্রেট ব্রুয়েন বলেন, ভারত ইতিহাস, রাজনীতি ও অর্থনীতির কারণে ট্রাম্পের কাছে নতজানু হবে না। তার হাতে বিকল্প আছে।

মোদি যখন রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করছেন, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক অনিশ্চিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাম্প যদি শুধু বাণিজ্যকে অগ্রাধিকার দেন, তবে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা, চীন ও রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছেন মোদি

০৪:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরে যাওয়া

চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত ধরাধরির দৃশ্য বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এই চিত্র প্রমাণ করছে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতকে নিজের কূটনৈতিক পরিধিতে টানা সম্ভব হচ্ছে না।

বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতকে চীন ও রাশিয়ার বিপরীতে কৌশলগত শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলো সেই লক্ষ্যকে দুর্বল করেছে। বিশেষ করে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং সস্তা রুশ তেল কেনার জন্য প্রকাশ্যে নয়াদিল্লিকে সমালোচনা করা সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়িয়েছে।

নতুন মৈত্রী ও সংকেত

চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই তিন দেশের নেতাদের একসঙ্গে দেখা গেছে। একই সময়ে মোদির রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিত ট্রাম্পের জন্য স্পষ্ট বার্তা।

প্রখ্যাত বিশ্লেষক অ্যাশলি টেলিস মনে করেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে সম্পর্ক মেরামতের পথে না হাঁটার কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক একটি “অবনতির চক্রে” আটকে পড়েছে। তার মতে, ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য এখন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা, আর সেটাই অন্য সব ভূরাজনৈতিক বিষয়কে ঢেকে দিচ্ছে।

ভারতের অসন্তোষ

ভারতীয় কর্মকর্তারা বারবার অভিযোগ করেছেন যে তাদের বাণিজ্য প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে। একইসঙ্গে ট্রাম্প পাকিস্তানকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে তিনি ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রেখেছেন—যা নয়াদিল্লি কেবল দ্বিপাক্ষিক ইস্যু হিসেবে দেখে।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের বিশেষজ্ঞ তানভি মদন মনে করেন, ট্রাম্প যখন নিজেই পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন, তখন ভারতের সেই একই সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা ভারতীয়দের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। তার মতে, এর ফলে ভারত কৌশলগত স্বাধীনতার পথেই আরও দৃঢ় হবে।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যানা কেলি বলেছেন, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি অনন্য, কারণ তিনি সবার সঙ্গে কঠিনভাবে আলোচনায় বসতে পারেন এবং মার্কিন জনগণের জন্য ভালো চুক্তি আনতে সক্ষম। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্প-মোদি সম্পর্ক সম্মানজনক এবং উভয় দেশের দলগুলো কূটনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক অগ্রাধিকারের বিষয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছে।

ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি। তবে এক অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য অন্যায্য হলেও নয়াদিল্লি সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। একই সঙ্গে তিনি জানান, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার প্রক্রিয়া অক্টোবর থেকেই শুরু হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে নয়।

চীন-ভারত দ্বন্দ্ব পেরিয়ে নতুন সম্পর্ক

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করা ভারতের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা ও ২০২০ সালে সীমান্ত সংঘর্ষ ছিল। সাত বছর পর মোদির এটি প্রথম চীন সফর। ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত অংশীদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতি মিত্র দেশগুলোকেই বেশি চাপে ফেলছে।

ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করেছেন যে ভারত বহু বছর ধরে একপাক্ষিকভাবে সুবিধা নিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি ব্রিকস জোটকে “আমেরিকা-বিরোধী” বলে অভিহিত করেছেন। ব্রাজিলকেও তিনি শুল্ক ও রাজনৈতিক অভিযোগের মাধ্যমে চাপে ফেলেছেন।

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো মন্তব্য করেন, “বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের নেতা মোদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা দুঃখজনক।”

‘কোয়াড’ জোটে ঝুঁকি

প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ভারতকে কাছে টানার চেষ্টা করেছিলেন। ২০১৯ সালে টেক্সাসে “হাউডি মোদি” সমাবেশ আয়োজন করেছিলেন এবং জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে নিরাপত্তা জোট ‘কোয়াড’কে নতুন করে সক্রিয় করেছিলেন। মোদিও ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের পর দ্রুত অভিনন্দন জানান এবং সম্পর্ক জোরদারের পদক্ষেপ নেন।

তবে খুব দ্রুত ট্রাম্প বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ও অভিবাসন নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। ফেব্রুয়ারিতে মোদির ওয়াশিংটন সফরে দুই দেশ একটি সীমিত বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগোতে সম্মত হয়, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা।

ভারত নভেম্বর মাসে কোয়াড সম্মেলনের আয়োজন করবে বলে আশা করা হচ্ছিল, যেখানে চীনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বিষয়ক ইস্যু আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হতো। তবে ট্রাম্প এখনও সেই সফরের পরিকল্পনা করেননি। বরং তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা

টেলিসের মতে, ট্রাম্প এখন মনে করেন “কোয়াড” তার কাছে অপরিহার্য নয়। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা ব্রেট ব্রুয়েন বলেন, ভারত ইতিহাস, রাজনীতি ও অর্থনীতির কারণে ট্রাম্পের কাছে নতজানু হবে না। তার হাতে বিকল্প আছে।

মোদি যখন রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করছেন, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক অনিশ্চিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাম্প যদি শুধু বাণিজ্যকে অগ্রাধিকার দেন, তবে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হতে পারে।