সমকালের একটি শিরোনাম “চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ১৪৪ ধারা জারি”
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় জশনে জুলুসের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
শনিবার রাতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত এক আদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘আমি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম আমার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেইট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তার উভয়পার্শ্বে এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অদ্য ০৬.০৯.২০২৫খ্রি, রাত ১০:০০টা হতে আগামীকাল ০৭.০৯.২০২৫খ্রি, বিকাল ০৩.০০ পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করলাম।’
আদেশে আরও বলা হয়, ‘উক্ত সময়ে উল্লিখিত এলাকায় সকল প্রকার সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশী অস্ত্র ইত্যাদি বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলাম।’
প্রসঙ্গত, জশনে জুলুসের গাড়ি ভাঙচুরের পর থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ফলে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার রাত ৮টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “খেলাপি ঋণে ২০২৩ থেকেই এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ”
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের উদ্বেগজনক চিত্র ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। বিগত সরকারের সময়ে নানা উপায়ে চাপা রাখা খেলাপি ঋণ এখন প্রকাশ হতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাবেক ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের ঋণখেলাপি হওয়ার হিড়িক। সব মিলিয়ে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ১২ শতাংশ থেকে একলাফে ২৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ, ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা প্রতি ১০০ টাকার ঋণের মধ্যে ২৮ টাকার বেশিই এখন খেলাপি।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনেও এই চিত্র উঠে এসেছে, যেখানে খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ হারে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাস শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৭ দশমিক ০৯ শতাংশ। এক বছর আগেও এই হার ছিল মাত্র ১২ শতাংশের কাছাকাছি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাত অনেকটাই প্রভাবমুক্ত হওয়ায় ঋণের প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। নামসর্বস্ব ও রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া বিপুল পরিমাণ ঋণ এখন খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। এর একটি বড় উদাহরণ এস আলম গ্রুপ-সম্পর্কিত ব্যাংকগুলো। ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ব্যাপক হারে বেড়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন দেশের মোট খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। সেখান থেকে গত ১৫ বছরে এই অঙ্ক লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তবে সেখানেও খেলাপি ঋণে বাংলাদেশের নাজুক অবস্থান স্পষ্ট। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সাল শেষে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ছিল। একই সময়ে ভারতের খেলাপি ঋণের হার ছিল মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মালদ্বীপের ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে, এশিয়ায় সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণ চীনের তাইপে (০.১%) ও কোরিয়ায় (০.২%)।
অর্থনীতিবিদদের মতে, আগে বিভিন্ন কৌশল ও ছলচাতুরীর মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। সহজ শর্তে ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের সুযোগ দিয়ে প্রকৃত চিত্র আড়াল করা হয়েছিল। বর্তমানে ঋণমানের আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করা শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা এবং পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠদের ব্যবসা খারাপ হয়ে পড়ায় খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “আমানত বৃদ্ধি ও ঋণ বিতরণে উপশাখার প্রবৃদ্ধি মূলধারার ব্যাংকিংয়ের কয়েক গুণ বেশি”
দেশের আর্থিক খাতে কয়েক বছর ধরেই নানা সংকট চলছে। উচ্চ খেলাপি ঋণের চাপে অন্তত এক ডজন ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের চাহিদামতো আমানতের অর্থও পরিশোধ করতে পারছে না। এ আস্থাহীনতার কারণে দেশের অনেক ব্যাংকের আমানত না বেড়ে উল্টো কমছে। তবে এ পরিস্থতির মধ্যেও ভালো করছে ব্যাংকের উপশাখা (সাব-ব্রাঞ্চ) মডেল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক তথা এপ্রিল-জুন সময়ে মূলধারার ব্যাংকিংয়ের চেয়ে উপশাখাগুলোর আমানত প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় চার গুণ বেশি। আর ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধিও ছিল সার্বিক প্রবৃদ্ধির সাত গুণ।
দেশের ব্যাংকগুলোর উপশাখা ব্যাংকিং নিয়ে গত সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে দেখা যায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের সামগ্রিক ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু একই সময়ে উপশাখার মাধ্যমে সংগৃহীত আমানত বেড়েছে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ হারে। দেশের ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণে বড় ধরনের স্থবিরতা চলছে। তবে উপশাখার ক্ষেত্রে এ চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এপ্রিল-জুন সময়ে ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক ঋণ প্রবৃদ্ধি যেখানে ১ দশমিক ৩ শতাংশ, উপশাখার মাধ্যমে সে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ২০১৯ সালে দেশের ব্যাংকগুলোকে উপশাখা চালুর অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তারও এক বছর আগে কয়েকটি ব্যাংক ‘ব্যাংকিং বুথ’ চালু করেছিল। ব্যাংকিং বুথ স্থাপনের এ মডেলই পরবর্তী সময়ে উপশাখা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ব্যাংকগুলো নির্দিষ্ট কোনো শাখার অধীনে তিন-চারজন কর্মী নিয়ে ছোট পরিসরে উপশাখা চালু করছে। চলতি বছরের জুন শেষে দেশের ৬২টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৪৮টিই উপশাখা চালু করেছে। এ ব্যাংকগুলোর চালু করা উপশাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮০০টিতে। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশই গ্রামীণ এলাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট আমানতের স্থিতি ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৮ হাজার ৭১ কোটি টাকা সংগ্রহ হয়েছে উপশাখার মাধ্যমে, যেখানে আমানত হিসাবের সংখ্যা ছিল ৬৭ লাখ ৮১ হাজার ৮৭৪টি। একই সময়ে দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত মোট ঋণ স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ২৭৭ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে উপশাখার মাধ্যমে। এ ঋণের সুবিধাভোগী ব্যাংক হিসাব ছিল ২ লাখ ৫ হাজার ৯০৪টি।
মানবজমিনের একটি শিরোন “শরীয়তপুরে অটোচালকের চোখ উপড়ে আগুনে পুড়িয়ে দিলো মাদক ব্যবসায়ীরা”
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এক অটোরিকশাচালকের চোখ উপড়ে তা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীকে মারধর ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগও এসেছে। এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা অটোরিকশা চালকের ওপর এই বর্বরতা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুরহাটে এই ঘটনা ঘটে।
আহত অটোরিকশাচালক রমজান মিয়াকে (৩৮) উন্নত চিকিৎসার জন্য জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে রমজান রিকশা নিয়ে জাজিরা থেকে নাওডোবার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় সুমন শিকদার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে রমজানের রিকশার গতিরোধ করে। পরে রমজানকে সবাই মিলে সুমনের বাড়ির পেছনে নিয়ে যায়। এরপর রমজানের দুই চোখ উপড়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। তার হাত-পায়ের রগও কেটে ফেলা হয়।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গেলে সুমন সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে যায়। সে সময় শাহজান সম্রাট নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এরপর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুমনের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরও একজনকে আটক করে।
ভুক্তভোগী রমজান গণমাধ্যমকে বলেন, আমি অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় সুমন ও তার সহযোগীরা আমাকে থামায়। পরে তারা আমাকে নিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে এবং হাতপায়ের রগ কেটে দেয়।
সুমনের বাড়ির পেছনে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসার অভিযোগ করে রমজান আরও বলেন, মাঝেমধ্যে পুলিশ রাতে আমার অটোরিকশায় করে টহল দিতো। সেই কারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে তারা আমার ওপর এই হামলা করেছে।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহম্মেদ পারভেজ সেলিম বলেন, অটোরিকশাচালকের চোখ উপড়ে আগুনে পোড়ানোসহ হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সুমন নামে একজনের বাড়িতে স্থানীয়রা আগুন দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
সারাক্ষণ ডেস্ক 



















