০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডাকসুতে শিবিরের বড় বিজয়, ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের বাস্তবতা স্পষ্ট করেছে

২০২১ সালে, অর্থাৎ কোভিডের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও তার আশে পাশে ঘুরলে বোঝা যেতো- ছাত্র শিবির যদি এ মুহূর্তে উন্মুক্ত রাজনীতি করার পরিবেশ পায় তারা তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হবে। কারণ, ছাত্র ও তরুণ শিক্ষকদের মধ্যে তাদের যে উপস্থিতি দেখা বোঝা যেতো ছদ্মভাবে তাতে বিষয়টি না বোঝার কোনো কারণ ছিল না।

তাছাড়া ২০২১ এর আগে অন্তত একজন ছাত্রলীগের সভাপতি তো শিবিরই ছিলেন। আর কেউ ছিলেন কিনা অতটা হয়তো রিপোর্টিং থেকে অনেকদিন চলে আসার কারণে সঠিকভাবে খেয়াল করা হয়নি। তাছাড়া বেশ কিছু তরুণ শিক্ষকও তাদের রাজনীতি বহন করতো।

আর এভাবে সংগঠন গোছানোর ইতিহাস এদেশে অনেকবার দেখা গেছে। কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হয়েছে কয়েক বার ঠিকই তবে তাদের ছাত্র সংগঠন গোপনে বৃদ্ধি কখনই বন্ধ থাকেনি। ১৯৭৫ পরবর্তী যখন সব রাজনীতি বন্ধ- যে সময়ে সরকার আওয়ামী লীগ বৈরী ওই সময়েই গোপনে ছাত্রলীগই শক্তিশালী হয় স্বাধীনতার পরে সব থেকে বড় আকারে। ১৯৭২ এ ছাত্রলীগের ভাঙন, ৭৩ থেকে ৭৫ অবধি শফিউল আলমের নেতৃত্বে নানান অপকর্মের মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে যতটা দুর্বল করে ফেলেছিল সেটা কিন্তু কাটিয়ে তোলে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে ৭৭ এ রাজনীতি উন্মুক্ত হবার আগেই।

২০২২ এর দিকে ঘরোয়া বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অনেকবার বলেছি, একজন রিপোর্টার হিসেবে মনে হয় শিবির পাকিস্তান আমল (তখন ছাত্র সংঘ নাম ছিল) থেকে এ মুহূর্ত অবধি ধরলে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ও তার আশেপাশের এলাকায় এ মুহূর্তে সব থেকে শক্তিশালী। এবং তারা পুরোপুরি কমিউনিস্ট পার্টির সাংগঠনিক চরিত্র নিয়েই এগোচ্ছে। যেমন কমিউনিস্ট পার্টি ব্রিটিশ আমলে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের ভেতর দিয়ে এগোতো। পাকিস্তান হলে আওয়ামী লীগ ও ভাসানী ন্যাপের ভেতর দিয়ে পূর্ববাংলা (পূর্ব পাকিস্তানে) এগিয়েছে। এর পরে বাংলাদেশ হলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভেতর দিয়ে তারা এগিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কৌশলটি বিগত আওয়ামী লীগ আমলে আরও একটু বিস্তৃত ছিল। তারা শুধু ছাত্র দল ও ছাত্রলীগের মধ্য দিয়ে এগোয়নি। তারা বাম সংগঠনগুলোর মধ্য দিয়েও এগিয়েছে। এমনকি তারা কেউ কেউ সংগঠন নয় ব্যক্তি হিসেবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যেও তাদের প্রতি সহানুভূতি অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে।

 

এ সব মিলে ৫ আগস্ট এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৯ সেপ্টেম্বরের এই ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয় অবধারিত ছিল। কারণ শুধুমাত্র ছাত্র নয়, তরুণ এক শ্রেণীর শিক্ষকরাও ছিল তাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল বা একই পাখির পালক তারা। কিন্তু তারপরেও গতকাল দুপুরেও অনেকে ফোন করে, তাদের বক্তব্য, ছাত্রদলের অবস্থা ভালো। প্রথমে একটু সমস্যা ছিল এখন তা বদলে গেছে। যারা ফোন করেছিল তাদের সঙ্গে আগেই ব্যক্তিগত আলোচনায় বা ফোনের আলোচনায় বলেছিলাম, যতদূর ঘুরে ফিরে দেখছি তাতে মনে হচ্ছে শিবিরই এককভাবে জিতবে। তবে তোমরা এখন একটিভ রিপোর্টার তোমরা ভালো বলতে পারবে।

নির্বাচন নিয়ে এ দ্বিমত থাকা স্বাভাবিক। যেমন ভারতের গত সাধারণ নির্বাচনের তিন মাস আগে তাদের বেশ কয়েকটি প্রদেশ ঘুরে একটি সুধীজনের মিলনে বলেছিলাম, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। তখন ওই সুধীজনরা বিজেপি ৩৫০ আসনের বেশি পাবে বলে মনে করছে। আমার কথা শুনে একজন একটু ভদ্রভাবে যা বলেছিলেন, তার অর্থ দাঁড়ায়, বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশ থেকে গিয়ে ভারতের মত অত বড় দেশের নির্বাচনী রাজনীতি আমার বোঝার কথা নয়। নীরব হয়ে গিয়েছিলাম। কোনো কথা বলেনি। এমনকি আমি আমার হিসাবের সংখ্যাটি আর দ্বিতীয়বার উচ্চারণ করিনি। তাদের নির্বাচনের রেজাল্টের দিন, তাদের একজন সে সময়ে ভারত থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে ছিলেন সেখান থেকেই ফোন করে বলে, দাদা, আপনার ফিগারই তো ঠিক হতে যাচ্ছে।

আমাদের মতো ছোট দেশে- তাছাড়া বিভিন্ন রকম প্রতিকূলতা, প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা না থাকা, সব কিছু মিলে ওই অর্থে পরিপূর্ণ নয় অর্ধেক সাংবাদিকতা করার সুযোগ পায়নি এটা ঠিকই। তবে তারপরেও প্রতিটি মানুষের পেশাগত বেশ কিছু ভালো লাগার জায়গা থাকে- নির্বাচন বিষয়টি তেমনি ভালো লাগার একটি। তাই নিজ উদ্যোগে ভিন্ন দেশের স্থানীয় নির্বাচনও কভার করেছি, বিষয়টি শেখার জন্য। আর বর্তমানে সোশ্যাল ফোরাম হওয়ায় যে কোনো দেশের নির্বাচনী ট্রেন্ড নিবিড়ভাবে ফলো করলে তো অনেকখানি বোঝা যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু সব সময় চলাফেরার ভেতর পড়ে, তাছাড়া ৫ আগস্ট পরবর্তী অনুকূল পরিবেশ- সব মিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের এ বিজয় নির্ধারিত ছিল।

এমনকি এটাও মনে করা উচিত নয় বিএনপির যারা প্রকৃত রাজনীতিবিদ বা যারা ছাত্র রাজনীতি থেকে এসেছেন তারা এটা আগে বুঝতে পারেননি।

যারা ছাত্র রাজনীতি থেকে আসেননি তারা অনেকে বলছেন, বিএনপি ৫ আগস্টের পর থেকে চাঁদাবাজি, দখল এসব করাতে ব্যস্ত ছিল বেশি- এ সময়ে শিবির সংগঠন গুছিয়েছে। সংগঠন গোছানোর কাজটি এত দ্রুত অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে এতটা করা যায় না। যারা সংগঠন করেছেন তারা জানেন। ইসলামী ছাত্র শিবির এটা বাস্তবে কমপক্ষে গত দশ বছরের বেশি সময় ধরে করেছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা ফসল ঘরে তুলে নিয়েছে।

আর তাদের ডাকসুতে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে আরও একটি বিষয় মিমাংসিত হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আন্দোলন শুরু হয়, তার মূল শক্তি ছিল ইসলামী ছাত্র শিবির। এখন যে যতই দলিলপত্র নিয়ে হাজির হোক না কেন, সবই বাতিল হয়ে গেছে। এমনকি যারা এখনও নিজেদের ওই আন্দোলনের নেতা বলছেন, তারাও মনে হয় আর খুব জোরে এটা বলবেন না। তাই সবমিলে বলা যায় ডাকসু নির্বাচন ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের একটি বাস্তবতার ছবিকে পরিষ্কার করে দিয়েছে।

লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক, সম্পাদক, সারাক্ষণ, The Present World.

ডাকসুতে শিবিরের বড় বিজয়, ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের বাস্তবতা স্পষ্ট করেছে

০৪:৪৮:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২০২১ সালে, অর্থাৎ কোভিডের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও তার আশে পাশে ঘুরলে বোঝা যেতো- ছাত্র শিবির যদি এ মুহূর্তে উন্মুক্ত রাজনীতি করার পরিবেশ পায় তারা তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হবে। কারণ, ছাত্র ও তরুণ শিক্ষকদের মধ্যে তাদের যে উপস্থিতি দেখা বোঝা যেতো ছদ্মভাবে তাতে বিষয়টি না বোঝার কোনো কারণ ছিল না।

তাছাড়া ২০২১ এর আগে অন্তত একজন ছাত্রলীগের সভাপতি তো শিবিরই ছিলেন। আর কেউ ছিলেন কিনা অতটা হয়তো রিপোর্টিং থেকে অনেকদিন চলে আসার কারণে সঠিকভাবে খেয়াল করা হয়নি। তাছাড়া বেশ কিছু তরুণ শিক্ষকও তাদের রাজনীতি বহন করতো।

আর এভাবে সংগঠন গোছানোর ইতিহাস এদেশে অনেকবার দেখা গেছে। কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হয়েছে কয়েক বার ঠিকই তবে তাদের ছাত্র সংগঠন গোপনে বৃদ্ধি কখনই বন্ধ থাকেনি। ১৯৭৫ পরবর্তী যখন সব রাজনীতি বন্ধ- যে সময়ে সরকার আওয়ামী লীগ বৈরী ওই সময়েই গোপনে ছাত্রলীগই শক্তিশালী হয় স্বাধীনতার পরে সব থেকে বড় আকারে। ১৯৭২ এ ছাত্রলীগের ভাঙন, ৭৩ থেকে ৭৫ অবধি শফিউল আলমের নেতৃত্বে নানান অপকর্মের মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে যতটা দুর্বল করে ফেলেছিল সেটা কিন্তু কাটিয়ে তোলে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে ৭৭ এ রাজনীতি উন্মুক্ত হবার আগেই।

২০২২ এর দিকে ঘরোয়া বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অনেকবার বলেছি, একজন রিপোর্টার হিসেবে মনে হয় শিবির পাকিস্তান আমল (তখন ছাত্র সংঘ নাম ছিল) থেকে এ মুহূর্ত অবধি ধরলে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ও তার আশেপাশের এলাকায় এ মুহূর্তে সব থেকে শক্তিশালী। এবং তারা পুরোপুরি কমিউনিস্ট পার্টির সাংগঠনিক চরিত্র নিয়েই এগোচ্ছে। যেমন কমিউনিস্ট পার্টি ব্রিটিশ আমলে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের ভেতর দিয়ে এগোতো। পাকিস্তান হলে আওয়ামী লীগ ও ভাসানী ন্যাপের ভেতর দিয়ে পূর্ববাংলা (পূর্ব পাকিস্তানে) এগিয়েছে। এর পরে বাংলাদেশ হলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভেতর দিয়ে তারা এগিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কৌশলটি বিগত আওয়ামী লীগ আমলে আরও একটু বিস্তৃত ছিল। তারা শুধু ছাত্র দল ও ছাত্রলীগের মধ্য দিয়ে এগোয়নি। তারা বাম সংগঠনগুলোর মধ্য দিয়েও এগিয়েছে। এমনকি তারা কেউ কেউ সংগঠন নয় ব্যক্তি হিসেবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যেও তাদের প্রতি সহানুভূতি অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে।

 

এ সব মিলে ৫ আগস্ট এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৯ সেপ্টেম্বরের এই ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয় অবধারিত ছিল। কারণ শুধুমাত্র ছাত্র নয়, তরুণ এক শ্রেণীর শিক্ষকরাও ছিল তাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল বা একই পাখির পালক তারা। কিন্তু তারপরেও গতকাল দুপুরেও অনেকে ফোন করে, তাদের বক্তব্য, ছাত্রদলের অবস্থা ভালো। প্রথমে একটু সমস্যা ছিল এখন তা বদলে গেছে। যারা ফোন করেছিল তাদের সঙ্গে আগেই ব্যক্তিগত আলোচনায় বা ফোনের আলোচনায় বলেছিলাম, যতদূর ঘুরে ফিরে দেখছি তাতে মনে হচ্ছে শিবিরই এককভাবে জিতবে। তবে তোমরা এখন একটিভ রিপোর্টার তোমরা ভালো বলতে পারবে।

নির্বাচন নিয়ে এ দ্বিমত থাকা স্বাভাবিক। যেমন ভারতের গত সাধারণ নির্বাচনের তিন মাস আগে তাদের বেশ কয়েকটি প্রদেশ ঘুরে একটি সুধীজনের মিলনে বলেছিলাম, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। তখন ওই সুধীজনরা বিজেপি ৩৫০ আসনের বেশি পাবে বলে মনে করছে। আমার কথা শুনে একজন একটু ভদ্রভাবে যা বলেছিলেন, তার অর্থ দাঁড়ায়, বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশ থেকে গিয়ে ভারতের মত অত বড় দেশের নির্বাচনী রাজনীতি আমার বোঝার কথা নয়। নীরব হয়ে গিয়েছিলাম। কোনো কথা বলেনি। এমনকি আমি আমার হিসাবের সংখ্যাটি আর দ্বিতীয়বার উচ্চারণ করিনি। তাদের নির্বাচনের রেজাল্টের দিন, তাদের একজন সে সময়ে ভারত থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে ছিলেন সেখান থেকেই ফোন করে বলে, দাদা, আপনার ফিগারই তো ঠিক হতে যাচ্ছে।

আমাদের মতো ছোট দেশে- তাছাড়া বিভিন্ন রকম প্রতিকূলতা, প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা না থাকা, সব কিছু মিলে ওই অর্থে পরিপূর্ণ নয় অর্ধেক সাংবাদিকতা করার সুযোগ পায়নি এটা ঠিকই। তবে তারপরেও প্রতিটি মানুষের পেশাগত বেশ কিছু ভালো লাগার জায়গা থাকে- নির্বাচন বিষয়টি তেমনি ভালো লাগার একটি। তাই নিজ উদ্যোগে ভিন্ন দেশের স্থানীয় নির্বাচনও কভার করেছি, বিষয়টি শেখার জন্য। আর বর্তমানে সোশ্যাল ফোরাম হওয়ায় যে কোনো দেশের নির্বাচনী ট্রেন্ড নিবিড়ভাবে ফলো করলে তো অনেকখানি বোঝা যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু সব সময় চলাফেরার ভেতর পড়ে, তাছাড়া ৫ আগস্ট পরবর্তী অনুকূল পরিবেশ- সব মিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের এ বিজয় নির্ধারিত ছিল।

এমনকি এটাও মনে করা উচিত নয় বিএনপির যারা প্রকৃত রাজনীতিবিদ বা যারা ছাত্র রাজনীতি থেকে এসেছেন তারা এটা আগে বুঝতে পারেননি।

যারা ছাত্র রাজনীতি থেকে আসেননি তারা অনেকে বলছেন, বিএনপি ৫ আগস্টের পর থেকে চাঁদাবাজি, দখল এসব করাতে ব্যস্ত ছিল বেশি- এ সময়ে শিবির সংগঠন গুছিয়েছে। সংগঠন গোছানোর কাজটি এত দ্রুত অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে এতটা করা যায় না। যারা সংগঠন করেছেন তারা জানেন। ইসলামী ছাত্র শিবির এটা বাস্তবে কমপক্ষে গত দশ বছরের বেশি সময় ধরে করেছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা ফসল ঘরে তুলে নিয়েছে।

আর তাদের ডাকসুতে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে আরও একটি বিষয় মিমাংসিত হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আন্দোলন শুরু হয়, তার মূল শক্তি ছিল ইসলামী ছাত্র শিবির। এখন যে যতই দলিলপত্র নিয়ে হাজির হোক না কেন, সবই বাতিল হয়ে গেছে। এমনকি যারা এখনও নিজেদের ওই আন্দোলনের নেতা বলছেন, তারাও মনে হয় আর খুব জোরে এটা বলবেন না। তাই সবমিলে বলা যায় ডাকসু নির্বাচন ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের একটি বাস্তবতার ছবিকে পরিষ্কার করে দিয়েছে।

লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক, সম্পাদক, সারাক্ষণ, The Present World.