সমকালের একটি শিরোনাম “ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, উত্তেজনা”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পাঁচ প্যানেল ও শিক্ষকের ভোট বর্জনের কারণে ভোট গ্রহণের এক দিন পরও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন। এ নিয়ে হতাশা তৈরি হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। দেখা দিয়েছে নানামুখী জটিলতা।
গতকাল শুক্রবার রাত দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা চলছিল। তবে কখন ফল ঘোষণা করা হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ও গণনায় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। হাতে ভোট গণনা ও নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে শিক্ষকের মৃত্যুতে ধীরগতিতে এগোতে থাকে কার্যক্রম। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে হল সংসদের ভোট গণনা শেষ হয়। এর পর কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
ছাত্রদলের প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল বৃহস্পতিবার প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। গতকাল ছাত্রশিবিরসহ অন্য প্যানেলের প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, ফলাফল প্রকাশ বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান হল সংসদের ভোট গণনা শেষে বলেন, কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনায় পোলিং কর্মকর্তার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। রাতের মধ্যেই (গতকাল) ফল ঘোষণা করা হবে। এদিকে রাত ৯টায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন নির্বাচন কমিশনার ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মাফরুহী সাত্তার। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে আমরা যা বুঝি, নির্বাচনে তা ছিল না। যাতে পদত্যাগ না করি, সে জন্য আমার ওপর চাপ ছিল, তবুও আমি পদত্যাগ করছি। নির্বাচনে অনেক অনিয়ম দেখেছি। অনেক গুরুতর ত্রুটি দেখেছি। এই ত্রুটিগুলো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের সকলে একমত পোষণ করলেও বিশেষ কিছু কারণে আমার মতামত নিতে তারা অপারগতা প্রকাশ করেছে। নির্বাচন কমিশন আমার মতামতের সুরাহা না করেই ভোট গণনা শুরু করে। তখন আমি লিখিতভাবে মতামত জানিয়েছি। সময় খুব কম হওয়ায় আমার পক্ষে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।’
ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় সিনেট ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলন ডেকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রশিবির, বাগছাস, স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা। সহকর্মীর মৃত্যু ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে ভোট গণনাস্থলে প্রতিবাদ জানান এবং সংবাদ সম্মেলন ডেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সুলতানা আক্তার।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “রংপুর ৫ কোটি টাকার বাঁধ: মাস না পেরোতেই ধস”
রংপুরের পীরগঞ্জে নদীর তীর রক্ষার জন্য ৫ কোটি টাকায় নির্মিত বাঁধ এক মাসও টেকেনি। উপজেলার চতরা ইউনিয়নের আখিরা শাখা নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়িত নদীতীর প্রতিরক্ষা কাজ শেষ হওয়ার এক মাস পার না হতেই ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ, দুর্বল মনিটরিং এবং বর্ষার মধ্যে যথাযথ ডাম্পিং ছাড়া ব্লক বসানোয় বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন (১ সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গত বছর ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকায় আখিরা শাখা নদীর চতরাহাট এলাকায় ৮০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ পায় রংপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসিবুল হাসান এন্টারপ্রাইজ। ২০২৪ সালের ১ মার্চ কাজ শুরু করে ওই বছরের ১১ নভেম্বর শেষ করার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় মেয়াদ বাড়ানো হয় চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু জুলাই মাসে কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে আগস্ট মাসের শুরুতেই বাঁধটির ২০০ মিটার এলাকা ধসে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যথাযথ ডাম্পিং না করে বৃষ্টির মধ্যে ব্লক বসানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়মিত মনিটরিং না থাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের কাজ ও দুর্নীতির কারণে বাঁধের এমন অবস্থা হয়েছে। বাঁধ ধসে যাওয়ায় এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “ভারত পাকিস্তান মিয়ানমার সফল হলেও জোরালো উদ্যোগ নেই বাংলাদেশের”
চীনের সহযোগিতায় আরব সাগরের তলদেশে যৌথ সমীক্ষা চালিয়ে সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুদ আবিষ্কার করেছে পাকিস্তান। তবে কী পরিমাণ গ্যাসের মজুদ সেখানে রয়েছে, তা এখনো ঘোষণা করা হয়নি। খাতসংশ্লিষ্টরা অবশ্য মনে করছেন, বিপুল পরিমাণ এ খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা গেলে বৃহৎ আকারে বদলে যাবে পাকিস্তানের অর্থনীতি। গ্যাস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভরতা কমে যাবে। তাই আরো বিস্তৃত গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানাচ্ছে দেশটির সরকার। এরই মধ্যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা স্পেশাল ফ্যাসিলিটেশন কাউন্সিল (এসএফসি) প্রকল্পটিতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
পাকিস্তানের আগে গত বছরের জানুয়ারিতে গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান চালিয়ে বড় সাফল্যের কথা জানায় প্রতিবেশী দেশ ভারত। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে গভীর সাগরে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বড় মজুদ আবিষ্কার করে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশন লিমিটেড (ওএনজিসি)। সংস্থাটির ভাষ্য অনুযায়ী খনির কার্যক্রম শেষ হলে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল এবং ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। সেক্ষেত্রে ভারতের দৈনিক মোট জ্বালানি তেল উত্তোলনে খনিটি প্রায় ১১ শতাংশ অবদান রাখবে। আর গোটা ভারতের মোট গ্যাস উত্তোলনে এ অবদান হবে ১৫ শতাংশ। আবিষ্কৃত খনি থেকে প্রাক্কলন অনুযায়ী জ্বালানি উত্তোলন করা গেলে বছরে এ খাতে ভারতের সাশ্রয় হবে ১০ হাজার কোটি রুপির বেশি।
সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ নিষ্পত্তি হয় ২০১২ সালের মার্চে। জরিপ ও অনুসন্ধান শেষ করে বিরোধ নিষ্পত্তির পরের বছরেই বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরে বিপুল পরিমাণ গ্যাস আবিষ্কার করে প্রতিবেশী দেশটি। মিয়া ও শোয়ে কূপ থেকে এরই মধ্যে কয়েক ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। নিজস্ব চাহিদার পাশাপাশি সেই গ্যাস চীনেও রফতানি করছে মিয়ানমার সরকার।
প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার, এমনকি পাকিস্তান তাদের নিজ সমুদ্রসীমায় তৎপরতা চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল ও গ্যাস আবিষ্কার করলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি। বিশেষ করে প্রতিবেশী দুটি দেশের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির পর গত এক দশকে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষ গত বছরের মার্চে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করলেও কোনো বিদেশী কোম্পানি সাড়া দেয়নি।
মানবজমিনের একটি শিরোন “সংবিধান সংশোধন বিতর্কে অটল দলগুলো”
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী আলোচনায় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। দলগুলো তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করায় সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সংবিধান সম্পর্কিত বিষয় ছাড়া অন্যান্য প্রস্তাব বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশ ব্যবহারে দলগুলো আংশিক সমঝোতায় পৌঁছালেও মূল বিতর্ক রয়ে গেছে সাংবিধানিক সংস্কার বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে। বিএনপি সংসদকেন্দ্রিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে, জামায়াত চাইছে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ ও এনসিপি নতুন সংবিধানের দাবিতে গণপরিষদ গঠনের প্রস্তাব জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ- এই চারটি পদ্ধতিকে সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে তুলে ধরলেও দলগুলো এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি। আগামীকাল ঐকমত্য কমিশনে ফের বৈঠকে বসবে দলগুলো। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো সমাধান বা ঐকমত্য তৈরি হবে কিনা- সেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রাজনীতিবিদরা। ওদিকে, কমিশনের পক্ষ থেকে সনদে স্বাক্ষরের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে শনিবার বিকাল ৫টার মধ্যে দুজনের নাম পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশে সেই সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে, যেগুলো সংবিধানকে স্পর্শ করে না। এ বিষয়ে লিখিত মতামত, মৌখিক মতামত সবসময় দেয়া ছিল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও একই রকম মতামত দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন আসছে, সংবিধান সংশোধনী সংক্রান্ত ১৯টি মৌলিক বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে, এগুলো বাস্তবায়নের জন্য কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যায়, সেই বিষয়ে মতামতের জন্য কমিশন বৈঠক ডেকেছিল। প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতামত দিয়েছে।
তিনি বলেন, আশু বাস্তবায়নযোগ্য যেকোনো সুপারিশ, যেগুলো জুলাই সনদ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নাধীন আছে এবং সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে, নির্বাহী আদেশের মধ্যদিয়ে অথবা অফিস আদেশসহ অন্যান্য বৈধ যেকোনো প্রক্রিয়ায়। যে প্রস্তাবগুলো আশু বাস্তবায়নযোগ্য নয়, অথচ বাস্তবায়ন করার সুযোগ আছে, সেই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য এই সরকার উদ্যোগ নিতে পারে, এমনকি সমাপ্তও করতে পারে, যদি সম্পন্ন না হয় পরবর্তী সরকার সেটা চালিয়ে যাবে, বাস্তবায়ন করবে।