১০:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
ছয় বছর পরও কি আমরা পরবর্তী মহামারির জন্য প্রস্তুত? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৫) একীভূত আইনি চুক্তির মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক বিচার চীনের জলসীমায় স্টারলিংক ব্যবহার: বিদেশি জাহাজকে জরিমানা প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪২) সংযুক্ত আরব আমিরাতে অস্থির আবহাওয়া: বৃষ্টি ও দুর্ঘটনায় দুবাই–শারজাহজুড়ে সন্ধ্যায় তীব্র যানজট অসম্ভবকে সম্ভব মনে করা অভিনেত্রী মিনি ড্রাইভার, পঞ্চান্নেও ব্যস্ত ও আত্মবিশ্বাসী জীবন যে সিনেমাটি দেখতে আমি ভয় পেয়েছিলাম অস্ট্রেলিয়ার ক্ষত সারাতে লড়াই: বন্ডি বিচ হত্যাযজ্ঞের পর ঐক্য আর বিভাজনের সন্ধিক্ষণ ঢাকায় উদীচী কার্যালয়ে হামলার পর অগ্নিকাণ্ড

ঝাপসা সীমানা: জেনি সি. জোন্সের শিল্প

প্রদর্শনীর পরিচিতি

সেন্ট লুইসের পুলিৎজার আর্টস ফাউন্ডেশনে চলছে বিশেষ প্রদর্শনী—“Jennie C. Jones: A Line When Broken Begins Again”—যেখানে শিল্পী জেনি সি. জোন্সের সাম্প্রতিক কাজ উপস্থাপিত হয়েছে। প্রদর্শনীটি ২০২৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এখানে দর্শকরা একসাথে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য ও ইনস্টলেশনের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন।

শিল্পের ধারা ও উপস্থাপন

প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণ জোন্সের মিনিমালিস্ট দেওয়ালভিত্তিক কাজ। তিনি সাধারণ ক্যানভাসের পরিবর্তে ফেল্ট কাপড়ে মোড়া সমতল ব্যবহার করেন। কাজগুলো সোজা রেখায় দেওয়ালে ঝোলানো, যা একইসাথে চিত্রকর্ম, অগভীর ভাস্কর্য এবং বৃহত্তর ইনস্টলেশনের রূপ নেয়। ধূসর ও সাদা রঙের সূক্ষ্ম ব্যবহার, রেখার সরলতা এবং অনুপাতে মিতব্যয়িতা বিশেষভাবে চোখে পড়ে।

ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা ও ভাবনার খোরাক

প্রথমে জোন্সের কাজ সাজসজ্জার মতো মনে হলেও ভেতরে গিয়ে তা ভাবনার উদ্রেক করে। তিনি দেখিয়েছেন সীমিত রঙ আর সহজ আকারের ভেতরেও অসীম ভিজ্যুয়াল আনন্দ সম্ভব। ধূসর ও সাদা রঙ প্রধান হলেও হঠাৎ লাল রঙের ছোট্ট ছোঁয়া কাজকে ব্যতিক্রমী করে তোলে। যেমন—‘Long Low Rest With Hum’ (২০২৫) ও ‘Measured Earth Tone’ (২০২৫)-এ সূক্ষ্ম লাল রেখা দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

শিল্পীর জীবন ও শিক্ষা

জেনি সি. জোন্স ১৯৬৮ সালে সিনসিনাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কের হাডসনে বসবাস ও কাজ করছেন। তার শৈশব ছিল স্বাধীনচেতা ও নির্ভার। পরে তিনি শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে বিএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানেই তিনি পিয়েত মন্ড্রিয়ান, এলসওয়ার্থ কেলি ও অ্যাগনেস মার্টিনের বিমূর্ত ধারা অনুসরণ করে নিজস্ব শিল্পভাষা গড়ে তোলেন।

সৃজনশীল পথচলা

জোন্সের বিমূর্ত শিল্পকলা তাকে মূলধারার সামাজিক ও বর্ণভিত্তিক শিল্প থেকে আলাদা করেছে। তিনি ইতিমধ্যেই হির্শহর্ন মিউজিয়াম (২০১৩) ও গুগেনহেইম (২০২২)-এ একক প্রদর্শনী করেছেন। ২০২৫ সালে নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়ামের ছাদে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিশনকৃত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রদর্শনীটি তিন বছরের প্রস্তুতির ফল, যেখানে তিনি স্থাপত্যে ব্যবহৃত ফেল্ট কাপড় নিয়ে গভীরভাবে কাজ করেছেন।

শিল্পের বিশেষ বৈশিষ্ট্য

তার কাজ এতটাই পরিশীলিত ও সূক্ষ্ম যে তা প্রায় স্থাপত্যের অংশ বলে মনে হয়। কখনো তা আধুনিক হোটেলের দেওয়ালসজ্জার মতো, আবার কখনো নীরব অথচ শক্তিশালী শিল্প-অভিজ্ঞতা তৈরি করে। কাজের মাঝে লাল রেখার সংযোজন দর্শককে মনে করিয়ে দেয়, শিল্পীর হাতের ছাপ সেখানে স্পষ্ট।

জেনি সি. জোন্সের প্রদর্শনী দেখায়—শিল্প শুধু জটিলতার ভেতর নয়, বরং সরলতা ও সীমিত রঙের মাধ্যমেও গভীর অর্থ ও সৌন্দর্য প্রকাশ করা যায়। তার কাজ সমসাময়িক শিল্পকে নতুন দিক দিয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন ধারা মিলিয়ে এক নতুন সংযোগ তৈরি করেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ছয় বছর পরও কি আমরা পরবর্তী মহামারির জন্য প্রস্তুত?

ঝাপসা সীমানা: জেনি সি. জোন্সের শিল্প

০৩:১১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রদর্শনীর পরিচিতি

সেন্ট লুইসের পুলিৎজার আর্টস ফাউন্ডেশনে চলছে বিশেষ প্রদর্শনী—“Jennie C. Jones: A Line When Broken Begins Again”—যেখানে শিল্পী জেনি সি. জোন্সের সাম্প্রতিক কাজ উপস্থাপিত হয়েছে। প্রদর্শনীটি ২০২৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এখানে দর্শকরা একসাথে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য ও ইনস্টলেশনের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন।

শিল্পের ধারা ও উপস্থাপন

প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণ জোন্সের মিনিমালিস্ট দেওয়ালভিত্তিক কাজ। তিনি সাধারণ ক্যানভাসের পরিবর্তে ফেল্ট কাপড়ে মোড়া সমতল ব্যবহার করেন। কাজগুলো সোজা রেখায় দেওয়ালে ঝোলানো, যা একইসাথে চিত্রকর্ম, অগভীর ভাস্কর্য এবং বৃহত্তর ইনস্টলেশনের রূপ নেয়। ধূসর ও সাদা রঙের সূক্ষ্ম ব্যবহার, রেখার সরলতা এবং অনুপাতে মিতব্যয়িতা বিশেষভাবে চোখে পড়ে।

ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা ও ভাবনার খোরাক

প্রথমে জোন্সের কাজ সাজসজ্জার মতো মনে হলেও ভেতরে গিয়ে তা ভাবনার উদ্রেক করে। তিনি দেখিয়েছেন সীমিত রঙ আর সহজ আকারের ভেতরেও অসীম ভিজ্যুয়াল আনন্দ সম্ভব। ধূসর ও সাদা রঙ প্রধান হলেও হঠাৎ লাল রঙের ছোট্ট ছোঁয়া কাজকে ব্যতিক্রমী করে তোলে। যেমন—‘Long Low Rest With Hum’ (২০২৫) ও ‘Measured Earth Tone’ (২০২৫)-এ সূক্ষ্ম লাল রেখা দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

শিল্পীর জীবন ও শিক্ষা

জেনি সি. জোন্স ১৯৬৮ সালে সিনসিনাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কের হাডসনে বসবাস ও কাজ করছেন। তার শৈশব ছিল স্বাধীনচেতা ও নির্ভার। পরে তিনি শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে বিএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানেই তিনি পিয়েত মন্ড্রিয়ান, এলসওয়ার্থ কেলি ও অ্যাগনেস মার্টিনের বিমূর্ত ধারা অনুসরণ করে নিজস্ব শিল্পভাষা গড়ে তোলেন।

সৃজনশীল পথচলা

জোন্সের বিমূর্ত শিল্পকলা তাকে মূলধারার সামাজিক ও বর্ণভিত্তিক শিল্প থেকে আলাদা করেছে। তিনি ইতিমধ্যেই হির্শহর্ন মিউজিয়াম (২০১৩) ও গুগেনহেইম (২০২২)-এ একক প্রদর্শনী করেছেন। ২০২৫ সালে নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়ামের ছাদে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিশনকৃত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রদর্শনীটি তিন বছরের প্রস্তুতির ফল, যেখানে তিনি স্থাপত্যে ব্যবহৃত ফেল্ট কাপড় নিয়ে গভীরভাবে কাজ করেছেন।

শিল্পের বিশেষ বৈশিষ্ট্য

তার কাজ এতটাই পরিশীলিত ও সূক্ষ্ম যে তা প্রায় স্থাপত্যের অংশ বলে মনে হয়। কখনো তা আধুনিক হোটেলের দেওয়ালসজ্জার মতো, আবার কখনো নীরব অথচ শক্তিশালী শিল্প-অভিজ্ঞতা তৈরি করে। কাজের মাঝে লাল রেখার সংযোজন দর্শককে মনে করিয়ে দেয়, শিল্পীর হাতের ছাপ সেখানে স্পষ্ট।

জেনি সি. জোন্সের প্রদর্শনী দেখায়—শিল্প শুধু জটিলতার ভেতর নয়, বরং সরলতা ও সীমিত রঙের মাধ্যমেও গভীর অর্থ ও সৌন্দর্য প্রকাশ করা যায়। তার কাজ সমসাময়িক শিল্পকে নতুন দিক দিয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন ধারা মিলিয়ে এক নতুন সংযোগ তৈরি করেছে।