প্রবেশের সহজ পথ
গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলের ছোট শহর কঙ্গারলুসুয়াক থেকে বরফচাদরে পৌঁছানো সবচেয়ে সহজ। ১৯৯৯ সালে ভক্সওয়াগন তাদের গাড়ি পরীক্ষার জন্য কঠিন শীতকালীন পরিবেশে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁচা রাস্তা তৈরি করেছিল, যা শহর থেকে বরফচাদরের কিনারা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে—বরফচাদর অনেকটাই সরে গেছে। ফলে রাস্তার শেষ প্রান্ত থেকে বরফচাদরে পৌঁছাতে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়। কোমল টুন্ড্রা থেকে কাদা ও ভাঙা বরফ হয়ে হঠাৎই প্রকৃত বরফচাদরে প্রবেশ করার অভিজ্ঞতা নাটকীয়ভাবে বদলে যায়।
গ্রিনল্যান্ডের বরফচাদরের বিশালতা
অ্যান্টার্কটিকার পর গ্রিনল্যান্ডের বরফচাদর পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম। এটি সর্বোচ্চ ৩ কিলোমিটার পুরু এবং ১৭ লাখ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর ওজন ট্রিলিয়ন টন, যা এত ভারী যে গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ শিলাস্তরকে সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে ঠেলে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা এর কিছু প্রাচীন বরফ ও তলদেশের পলি পরীক্ষা করে দেখেছেন, সেগুলোর বয়স দুই মিলিয়ন বছরেরও বেশি—অর্থাৎ মানবজাতির উৎপত্তির আগের সময়ের।
ভ্রমণ ও নিরাপত্তা
বরফচাদরের বিপুলতা, ভয়ঙ্কর আবহাওয়া এবং দুর্গম ভূখণ্ডের কারণে শুধুমাত্র নিবন্ধিত ও যোগ্য গাইডের সঙ্গেই ভ্রমণ করা যায়। সাধারণত ভ্রমণকারীদের জন্য অর্ধদিবস বা একদিনের ভ্রমণ আয়োজন করা হয়। তবে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান, আলবাট্রস আর্কটিক সার্কেল, রাত্রিযাপনসহ ক্যাম্পিং ভ্রমণের ব্যবস্থা করে।
আমাদের ছয় সদস্যের দল বের হওয়ার আগে বিস্তারিত নির্দেশনা ও সরঞ্জাম পরীক্ষা করা হয়। প্রথমে সবার মনে কিছুটা ভয় থাকলেও বরফচাদরের কিনারায় দাঁড়িয়ে গভীর বরফের মাঝে গলে যাওয়া পানির প্রবাহ দেখে বিস্ময় ও মুগ্ধতা জায়গা করে নেয়।