স্থানীয় সমস্যার সমাধানে তরুণদের সৃজনশীলতা
কক্সবাজারে আয়োজিত হলো ‘ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৫’। এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানে তরুণদের নতুন ও উদ্ভাবনী ধারণা তুলে ধরা। প্রস্তাবিত প্রায় ৫০০ প্রকল্পের মধ্য থেকে বাছাই করে ৫টি প্রকল্পকে চূড়ান্তভাবে পুরস্কৃত করা হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলো
- প্রথম স্থান – ‘স্বপ্নছোঁয়া বিলাইছড়ি’: শিক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও সামাজিক বৈষম্য দূর করার সম্ভাবনাময় প্রকল্প।
- দ্বিতীয় স্থান – ‘সুদূর অগ্রযাত্রী’: লবণচাষী পরিবার ও নারীদের অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবেলার উদ্যোগ।
- তৃতীয় স্থান – ‘দরিয়া’: জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত সংকট মোকাবেলায় সামাজিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করা।
- অন্যান্য পুরস্কৃত প্রকল্প: ‘রোলিং কক্সবাজার’ এবং ‘সহযাত্রা’।
অনুষ্ঠান আয়োজন ও প্রেক্ষাপট
“আমার কক্সবাজার, আমার উদ্যোগ” প্রতিপাদ্যে ব্র্যাক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল স্থানীয় তরুণদের জন্য একটি মঞ্চ, যেখানে তারা নিজেদের চিন্তাভাবনা ও সৃজনশীল প্রকল্প উপস্থাপন করতে পেরেছে।
বক্তাদের মতামত
- এ এম শামসেদ, ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক বলেন, তরুণদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ দিলে তারা সফল হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা সেই সুযোগ তৈরি করেছে।
- সালিম রহমান খান, ব্র্যাক পরিচালক মনে করেন, তরুণরা প্রায়ই সামাজিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়, কিন্তু সবাই মিলে কাজ করলে এসব বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।
- ইশতিয়াক আলী, সহকারী পরিচালক আহ্বান জানান, তরুণদের পাশে থেকে প্রযুক্তি ও আর্থিক সহায়তা দিতে।
- মাহা আবু আলম, ইউএনডিপি কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় জনগণের উদ্ভাবনই হলো স্থানীয় সমস্যার টেকসই সমাধান।
- আবু মোর্শেদ চৌধুরী, কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি জানান, তরুণ উদ্যোক্তাদের বিকাশে চেম্বার অব কমার্স সবসময় কাজ করবে।
- রুলচকা ফরহে, আইওএম কর্মকর্তা মনে করিয়ে দেন, এই প্রচেষ্টা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যম হওয়া উচিত।
আলোচনায় গুরুত্ব
অনুষ্ঠানে গোলটেবিল আলোচনা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা উল্লেখ করেন, কক্সবাজারের তরুণদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা শুধু নিজেদের নয়, পুরো সমাজের জন্য সমাধান আনতে পারে।
প্রকল্পের সহায়তা ও লক্ষ্য
‘ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ’ ব্র্যাক, আইওএম, ইউএনডিপি এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে। আর্থিক সহায়তা দিয়েছে অ্যাফেয়ার্স কানাডা। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য—
- তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, নারী ও প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া
- স্থানীয়ভাবে আয়-উপার্জনের সুযোগ তৈরি করা
- স্বনির্ভরতা গড়ে তুলে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করা
কক্সবাজারের তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও প্রকল্প এই অঞ্চলের সমস্যার সমাধানে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও স্থানীয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কক্সবাজারে টেকসই উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।