বিশ্ব এখন এক অস্থির সময়ে প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে আঞ্চলিক উত্তেজনা, বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার নীতিগত অবস্থান বৈশ্বিক রাজনীতির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্র তার নেতৃত্ব ধরে রাখতে চাইছে, তবে ইউরোপ ও এশিয়ায় তার প্রভাব নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
- • ন্যাটো জোট রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
- • ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক জোট গড়ে তুলছে।
তবে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে কার্যকর পদক্ষেপকে অনেক সময় জটিল করে তুলছে।
চীনের উত্থান
চীন বিশ্বশক্তি হিসেবে তার অবস্থানকে আরও দৃঢ় করছে।
- • বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে এশিয়া,আফ্রিকা ও ইউরোপে তার প্রভাব বাড়ছে।
- • প্রযুক্তি ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হওয়া এবং অভ্যন্তরীণ সামাজিক অস্থিরতা চীনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়ার ভূমিকা
ইউক্রেনে যুদ্ধ রাশিয়ার আন্তর্জাতিক অবস্থানকে আরও জটিল করে তুলেছে।
- • পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
- • তবুও মস্কো এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করে চলেছে।
এতে করে বিশ্বব্যাপী নতুন এক ভূ-রাজনৈতিক অক্ষ গড়ে উঠছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতি ও প্রযুক্তি
বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা নতুন চাপ সৃষ্টি করছে। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা ও মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ে দেশগুলোর প্রতিযোগিতা তীব্র হচ্ছে। এসব খাতে কে নেতৃত্ব নেবে, তা আগামী দিনের ক্ষমতার ভারসাম্য নির্ধারণ করবে।
বর্তমান সময়টি বৈশ্বিক রাজনীতির জন্য এক পরীক্ষার মুহূর্ত। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। তবে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা এক নতুন বিশ্ব বাস্তবতা তৈরি করছে। এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা—আগামী দিনে কোনটি প্রাধান্য পাবে, সেটিই এখন সবার বড় প্রশ্ন।