পরিবেশবাদী ও শিক্ষাবিদদের উদ্বেগ
থাইল্যান্ডের পরিবেশকর্মী ও শিক্ষাবিদরা একটি নতুন ভূমি ব্যবস্থাপনা অব্যাহতি বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মতে, এই আইন কার্যকর হলে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস হবে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা পাবে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও পরিবেশ গুরুতর হুমকির মুখে পড়বে।
বিতর্কিত বিলের বিষয়বস্তু
কাসেটসার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা অনুষদ আয়োজিত এক আলোচনায় সমালোচকরা বলেন, “‘বন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সরকারি নীতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের অপরাধ-অব্যাহতি বিল'” নামের এই প্রস্তাবিত আইনটি ধ্বংসাত্মক হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। বিলটি পিপলস পার্টি ও প্রচাচার্ট পার্টির ৪২ জন সাংসদ উত্থাপন করেছেন। এতে মোট ২০টি ধারা রয়েছে। সমালোচকদের মতে, এটি দেশের বন সুরক্ষার আইনি কাঠামো ভেঙে দেবে।
সিনেট কমিটির সতর্কবার্তা
সিনেটর চিওয়াফাফ চিওয়াথাম, যিনি পরিবেশবিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যানও বলেন, এই বিল কার্যকর হলে অবৈধভাবে বনভূমি দখলকারীরা, বিশেষত বিনিয়োগকারীরা—যারা প্রায়ই স্থানীয় বাসিন্দাদের নাম ব্যবহার করেন—তাঁরা আইনের আওতা থেকে বেরিয়ে যাবেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, অপরাধীরা শুধু শাস্তি এড়াবেন না, বরং বৈধ মালিকানার অধিকারও পেয়ে যাবেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ফুকেটের প্রিমিয়াম বনভূমি, উপকূলীয় এলাকা এবং উর্বর পাহাড়ি জমিগুলো, যেগুলো এখন আদালতে বিতর্কিত, শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের দখলে চলে যাবে। তাঁর মতে, এই বিলের গোপন উদ্দেশ্য হলো ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর লাভ নিশ্চিত করা।
সামাজিক আন্দোলনের আহ্বান
চিওয়াফাফ জোর দিয়ে বলেন, এই বিল ঠেকাতে অংশীজনদের একত্রিত হয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাঁর মতে, বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য সামাজিক আন্দোলনই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
বিপুল মামলার ঝুঁকি
বর্তমানে বনভূমি পুনরুদ্ধারের এক মিলিয়নেরও বেশি রাই জমি নিয়ে প্রায় ১০,০০০ মামলা চলমান। প্রস্তাবিত বিল কার্যকর হলে শুধু বনভূমি নয়, বরং সব ধরনের সরকারি জমির অবৈধ দখলকেও বৈধতা দেওয়া হবে।
সাংসদদের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি
এদিকে, থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল পার্কস অ্যাসোসিয়েশন ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে আবেদন জানাতে যাচ্ছে, যাতে এই বিল প্রস্তাবকারী ৪২ সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, এই প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী।