১০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, আউন্সপ্রতি ছাড়াল ৪৪০০ ডলার এনসিপি নেতাকে গুলি: নারী সঙ্গী পলাতক, ফ্ল্যাট থেকে মাদকসংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার তারেক রহমানের দেশে ফেরা সামনে রেখে শঙ্কার কথা জানালেন মির্জা আব্বাস গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ওসমান হাদির বোন পাচ্ছেন অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান তিন যুগ, তিন ফাইনাল, একই বাধা ভারত—সারফরাজের নামেই আবার পাকিস্তানের জয়গাথা সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ে জট, দেশে ফেরা থামাচ্ছেন ভারতীয় কর্মীরা অ্যাশেজ ধরে রাখলো অস্ট্রেলিয়া মাত্র এগারো দিনে, কথিত দুর্বল দলেই ইংল্যান্ডকে ধস গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনার আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী এবার বিএনপি-জামায়াত!

ডিজিটাল আসক্তির নাটকীয় আয়না

টরন্টোর ক্রোস থিয়েটারে মঞ্চস্থ হচ্ছে ডেভ ম্যালয়ের লেখা এবং ক্রিস আব্রাহামের নির্দেশনায় নির্মিত এক অনন্য অ্যা ক্যাপ্পেলা মিউজিক্যাল অক্টেট। ক্রোস থিয়েটার, সোলপেপার থিয়েটার কোম্পানি ও মিউজিক্যাল স্টেজ কোম্পানির যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এই নাটকটির মূল বিষয় হলো ডিজিটাল আসক্তি এবং মানুষের মনোজগতে এর প্রভাব।

কাহিনি ও পরিবেশনা

নাটকটির গল্প শুরু হয় একটি গির্জার বেসমেন্টে। এখানে একদল মানুষ জড়ো হয় তাদের স্ক্রিন আসক্তি নিয়ে আলোচনা করতে। কেউ ভিডিও গেমে ডুবে থাকে, কেউ ডেটিং অ্যাপে আটকে পড়ে, কেউ বা আত্মহনন ও আত্মক্ষতির ওয়েবসাইটে সময় কাটায়। একজন প্রবীণ মানুষ চ্যাটরুমে বসে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজতে থাকেন।

তাদের সবার সমস্যার মূলে আছে ইন্টারনেট। তবে তারা আশ্রয় খোঁজে এই গ্রুপ আলোচনায়—যেখানে তারা পরস্পরকে শোনে, নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয় এবং নানা কৌশল খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

নাটকের রূপ ও বৈশিষ্ট্য

‘অক্টেট’-এর কাহিনি প্রচলিত অর্থে ধারাবাহিক নয়। এটি অনেকটা Songs for a New World বা A Chorus Line-এর মতো গান ও অভিব্যক্তির সমন্বয়। তবে এর মূল শক্তি হলো সংগীত এবং পরিবেশনা।

জোশুয়া কুইনলানের নকশা করা সেট এবং নাথান ব্রুসের ভিডিও নকশা কানাডীয় থিয়েটার ডিজাইনে নতুন মান তৈরি করেছে। গির্জার বেসমেন্টের নকশায় আগের কাজের উপাদান ব্যবহার করা হলেও সেটি একেবারে নতুন ও চমকপ্রদ মনে হয়।

সংগীত ও পরিবেশনা

ডেভ ম্যালয়ের সুরারোপিত অ্যা ক্যাপ্পেলা সংগীত দর্শকদের টেনে নিয়ে যায় এক অদ্ভুত জগতে। কখনও সুর জটিল ও ভীতিকর, আবার কখনও কোমল ও সুন্দর। রায়ান দে সুজার সংগীত পরিচালনায় প্রতিটি গান আলাদা সত্তা তৈরি করে।

প্রদর্শনীতে বেন কার্লসনের পরিবেশিত লিটল গড গানটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানে একক কণ্ঠ ও কোরাসের মধ্যকার সূক্ষ্ম সমন্বয় নাটককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।

অভিনেতাদের মধ্যে হেইলি গিলিজ ও ড্যামিয়ান অ্যাটকিন্স বিশেষভাবে উজ্জ্বল। গিলিজ সম্প্রতি একেবারে ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় শেষ করলেও এখানে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। অন্যদিকে অ্যাটকিন্সের ক্যান্ডি ক্রাশ আসক্তির প্রকাশ দর্শকদের মুগ্ধ করে।

সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনা

তবে নাটকের কিছু অংশ কিছুটা পুরনো মনে হয়। কারণ, নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ২০১৯ সালে, মহামারির আগে। মহামারির পর আমাদের ইন্টারনেট সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা ব্যাপকভাবে বদলেছে। ফলে কিছু বিশ্লেষণ এখন আর ততটা গভীর বা নতুন বলে মনে হয় না।

কিছু যুক্তি, বিশেষত রেডিট বা শর্ট ভিডিও নিয়ে মন্তব্যগুলো বেশ সরল মনে হয়। প্রযুক্তি দ্রুত বদলায়, তাই এর সমসাময়িক সমালোচনা অনেক সময় দ্রুতই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে।

কেন দেখতে হবে

তবুও অক্টেট দেখার মতো একটি প্রযোজনা। কারণ, এখানে অভিনয়, সংগীত, নকশা এবং পরিচালনা মিলেমিশে এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। ইন্টারনেটের বিশৃঙ্খলা ও মানুষের মনস্তাত্ত্বিক চাপকে নাটকীয়ভাবে প্রকাশ করার এমন প্রচেষ্টা বিরল।

এই নাটকটি ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ডিজিটাল যুগের জীবনের জটিলতা ও ব্যঙ্গ বুঝতে চাইলে অক্টেট মঞ্চায়ন মিস করা যাবে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট

ডিজিটাল আসক্তির নাটকীয় আয়না

১২:০১:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

টরন্টোর ক্রোস থিয়েটারে মঞ্চস্থ হচ্ছে ডেভ ম্যালয়ের লেখা এবং ক্রিস আব্রাহামের নির্দেশনায় নির্মিত এক অনন্য অ্যা ক্যাপ্পেলা মিউজিক্যাল অক্টেট। ক্রোস থিয়েটার, সোলপেপার থিয়েটার কোম্পানি ও মিউজিক্যাল স্টেজ কোম্পানির যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এই নাটকটির মূল বিষয় হলো ডিজিটাল আসক্তি এবং মানুষের মনোজগতে এর প্রভাব।

কাহিনি ও পরিবেশনা

নাটকটির গল্প শুরু হয় একটি গির্জার বেসমেন্টে। এখানে একদল মানুষ জড়ো হয় তাদের স্ক্রিন আসক্তি নিয়ে আলোচনা করতে। কেউ ভিডিও গেমে ডুবে থাকে, কেউ ডেটিং অ্যাপে আটকে পড়ে, কেউ বা আত্মহনন ও আত্মক্ষতির ওয়েবসাইটে সময় কাটায়। একজন প্রবীণ মানুষ চ্যাটরুমে বসে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজতে থাকেন।

তাদের সবার সমস্যার মূলে আছে ইন্টারনেট। তবে তারা আশ্রয় খোঁজে এই গ্রুপ আলোচনায়—যেখানে তারা পরস্পরকে শোনে, নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয় এবং নানা কৌশল খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

নাটকের রূপ ও বৈশিষ্ট্য

‘অক্টেট’-এর কাহিনি প্রচলিত অর্থে ধারাবাহিক নয়। এটি অনেকটা Songs for a New World বা A Chorus Line-এর মতো গান ও অভিব্যক্তির সমন্বয়। তবে এর মূল শক্তি হলো সংগীত এবং পরিবেশনা।

জোশুয়া কুইনলানের নকশা করা সেট এবং নাথান ব্রুসের ভিডিও নকশা কানাডীয় থিয়েটার ডিজাইনে নতুন মান তৈরি করেছে। গির্জার বেসমেন্টের নকশায় আগের কাজের উপাদান ব্যবহার করা হলেও সেটি একেবারে নতুন ও চমকপ্রদ মনে হয়।

সংগীত ও পরিবেশনা

ডেভ ম্যালয়ের সুরারোপিত অ্যা ক্যাপ্পেলা সংগীত দর্শকদের টেনে নিয়ে যায় এক অদ্ভুত জগতে। কখনও সুর জটিল ও ভীতিকর, আবার কখনও কোমল ও সুন্দর। রায়ান দে সুজার সংগীত পরিচালনায় প্রতিটি গান আলাদা সত্তা তৈরি করে।

প্রদর্শনীতে বেন কার্লসনের পরিবেশিত লিটল গড গানটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানে একক কণ্ঠ ও কোরাসের মধ্যকার সূক্ষ্ম সমন্বয় নাটককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।

অভিনেতাদের মধ্যে হেইলি গিলিজ ও ড্যামিয়ান অ্যাটকিন্স বিশেষভাবে উজ্জ্বল। গিলিজ সম্প্রতি একেবারে ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় শেষ করলেও এখানে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। অন্যদিকে অ্যাটকিন্সের ক্যান্ডি ক্রাশ আসক্তির প্রকাশ দর্শকদের মুগ্ধ করে।

সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনা

তবে নাটকের কিছু অংশ কিছুটা পুরনো মনে হয়। কারণ, নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ২০১৯ সালে, মহামারির আগে। মহামারির পর আমাদের ইন্টারনেট সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা ব্যাপকভাবে বদলেছে। ফলে কিছু বিশ্লেষণ এখন আর ততটা গভীর বা নতুন বলে মনে হয় না।

কিছু যুক্তি, বিশেষত রেডিট বা শর্ট ভিডিও নিয়ে মন্তব্যগুলো বেশ সরল মনে হয়। প্রযুক্তি দ্রুত বদলায়, তাই এর সমসাময়িক সমালোচনা অনেক সময় দ্রুতই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে।

কেন দেখতে হবে

তবুও অক্টেট দেখার মতো একটি প্রযোজনা। কারণ, এখানে অভিনয়, সংগীত, নকশা এবং পরিচালনা মিলেমিশে এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। ইন্টারনেটের বিশৃঙ্খলা ও মানুষের মনস্তাত্ত্বিক চাপকে নাটকীয়ভাবে প্রকাশ করার এমন প্রচেষ্টা বিরল।

এই নাটকটি ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ডিজিটাল যুগের জীবনের জটিলতা ও ব্যঙ্গ বুঝতে চাইলে অক্টেট মঞ্চায়ন মিস করা যাবে না।