ট্রাম্পের পরামর্শ ও স্টারমারের প্রতিক্রিয়া
১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর বিষয়ে কী পরামর্শ দেবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলে “সেনাবাহিনীকে ডাকতে পারেন”। এই মন্তব্য দ্রুত ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড পত্রিকার প্রথম পাতায় চলে আসে।
তবে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বিষয়টিকে হালকা করে নেন এবং তাঁর সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে সেনা নামানোর পরিকল্পনা নেই।
জরিপে ব্রিটিশ জনমত
ব্রিটিশদের আসল মতামত জানতে দ্য ইকোনমিস্ট জরিপ সংস্থা মোর ইন কমনের সহায়তায় একটি সমীক্ষা চালায়।
ফলাফলে দেখা যায়, অর্ধেকের বেশি মানুষ মনে করেন শান্তিকালে সীমান্ত টহলের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাঁদের মতে, নৌবাহিনী ইংলিশ চ্যানেলে মোতায়েন করা হলে ছোট নৌকায় অনুপ্রবেশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
বিষয়টি রাজনৈতিক বর্ণালীর নানা অংশে সমর্থন পেয়েছে।
আইন ও বাস্তবতার সীমাবদ্ধতা
তাত্ত্বিকভাবে পার্লামেন্ট চাইলে নৌবাহিনীকে যুক্তরাজ্যের বর্ডার ফোর্সের পাঁচটি অফশোর কাটারের সহায়তায় অনুমোদন দিতে পারে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সমুদ্রে বিপদগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার করাই প্রথম কর্তব্য; শুধু ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
এর আগেও এমন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ২০২২ সালে ‘অপারেশন আইসোট্রোপ’ নামের অভিযানে নৌবাহিনী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পায়। কিন্তু ওই বছরই ছোট নৌকায় আগত অভিবাসীর সংখ্যা নতুন রেকর্ড ছুঁয়ে ৪৯,০০০-এ পৌঁছায়।
অভিবাসন প্রশ্নে জনচিন্তা বাড়ছে
সাম্প্রতিক সমীক্ষায় ৪৮% ব্রিটিশ নাগরিক জানিয়েছেন যে অভিবাসন এখন তাঁদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
এটি ২০২৩ সালের তুলনায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি।
১৯ সেপ্টেম্বর মাত্র একদিনে ১৩টি ছোট নৌকায় আরও ১,০৭২ জন অভিবাসী আসে। এর ফলে গত ৩৬৫ দিনে মোট আগমন দাঁড়ায় প্রায় ৪৫,০০০ জনে—যা এক বছর আগের তুলনায় ৫০% বেশি।
সারসংক্ষেপ
ব্রিটেনে ছোট নৌকা দিয়ে অভিবাসন প্রশ্ন ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। একদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেনা মোতায়েনের মতো কঠোর পরামর্শ দিচ্ছেন, অন্যদিকে স্টারমারের সরকার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। তবে জনমতের জরিপে দেখা যাচ্ছে, অনেক ব্রিটিশ নাগরিক নৌবাহিনী মোতায়েনকে সমর্থন করছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন ও পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রমাণ করছে, সমুদ্রপথে অভিবাসন ঠেকানো সহজ কোনো কাজ নয়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















