০৯:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, আউন্সপ্রতি ছাড়াল ৪৪০০ ডলার এনসিপি নেতাকে গুলি: নারী সঙ্গী পলাতক, ফ্ল্যাট থেকে মাদকসংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার তারেক রহমানের দেশে ফেরা সামনে রেখে শঙ্কার কথা জানালেন মির্জা আব্বাস গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ওসমান হাদির বোন পাচ্ছেন অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান তিন যুগ, তিন ফাইনাল, একই বাধা ভারত—সারফরাজের নামেই আবার পাকিস্তানের জয়গাথা সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ে জট, দেশে ফেরা থামাচ্ছেন ভারতীয় কর্মীরা অ্যাশেজ ধরে রাখলো অস্ট্রেলিয়া মাত্র এগারো দিনে, কথিত দুর্বল দলেই ইংল্যান্ডকে ধস গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনার আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী এবার বিএনপি-জামায়াত!

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৩)

কেহবা মনস্তাপে ভাগী-রণীগর্ভে প্রবেশ করে, কেহবা অনন্ত স্পর্শ করিবার আশায় নৈশান্ধকার-স্তূপ ভেদ করিয়া উঠিতে উঠিতে, নাজানি কি মর্মবেদনায় ফাটিয়া পড়ে; কেহ বা শত শত আলোকের ফুল ফুটাইয়া চতুদ্দিকে ভাসমান কমল-রাশিকে উপহাস করিতে থাকে। এই সময় তীর হইতেও নানাবিধ আতসবাজী তাহাদের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘প্রবৃত্ত হয়।

তাহাদের মধ্যে কাহারও কাহারও ভীষণ শব্দ নিবিড় মেঘাবৃত অম্বরের অনুহুঙ্কার করিয়া দর্শকবৃন্দকে চমকিত করিয়া তুলে। ভাসমান আলোকযান হইতে সুমধুর বাদ্যধ্বনি ভাগীরথীর জলোচ্ছ্বাসের সহিত মিশিয়া নীরব দিগন্তে ছড়াইয়া পড়ে। এই আলোকোৎসব দেখিবার জন্য মুর্শিদাবাদে সহস্র সহস্র লোকের সমাগম হয়। অনেক সুসজ্জিত তরণী ভাগীরথীবক্ষে ক্রীড়া করিতে থাকে।

বাতায়ন হইতে পুরসুন্দরীগণ সেই’ জ্যোতিলীলা দেখিতে থাকেন। মহাকবি কালিদাস বিলোলনেত্রভ্রমরালঙ্কত যে রমণীবদন-সরোজুের বর্ণনা করিয়াছেন, এই সময়েই তাহা সুন্দররূপেই প্রতীত হয়। অন্ধকারময়ী রজনীতে এইরূপ আলোকোৎসব যে কত মনোরম, তাহা না দেখিলে বুঝা যায় না। এই আলোকোৎসবের সাধারণ নাম ‘ব্যারা’। ব্যারা প্রতিবৎসর ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে সম্পন্ন হয়। খাজা খেজেরের স্মরণোদ্দেশে এই পর্ব্বের অনুষ্ঠান।

জ্ঞানী-ইলায়াসাকে মুসলমানেরা খেজের বলিয়া নির্দেশ করেন। খেজেরের উৎসবোপলক্ষে নদীবক্ষে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরণী ভাসাইবার রীতি থাকায় ভাগীরথীবক্ষে এইরূপ আলোকযান ভাসাইয়া দেওয়া হয়। অনেক স্থল হইতে বহুসংখ্যক কদলীবৃক্ষ ও বংশ আনীত হইয়া, আলোকযান প্রস্তুত হইয়া থাকে। যখন এই উৎসব মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত, তখন উক্ত যানের পরিমাণ দীর্ঘে ৩০০ হস্ত ও প্রস্থে ১০০ হস্ত ছিল। বর্তমান সময়ে দীর্ঘে ৮০ হস্ত ও প্রস্থে ৫০/৬০ হস্ত মাত্র হয়।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৩)

১১:০০:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

কেহবা মনস্তাপে ভাগী-রণীগর্ভে প্রবেশ করে, কেহবা অনন্ত স্পর্শ করিবার আশায় নৈশান্ধকার-স্তূপ ভেদ করিয়া উঠিতে উঠিতে, নাজানি কি মর্মবেদনায় ফাটিয়া পড়ে; কেহ বা শত শত আলোকের ফুল ফুটাইয়া চতুদ্দিকে ভাসমান কমল-রাশিকে উপহাস করিতে থাকে। এই সময় তীর হইতেও নানাবিধ আতসবাজী তাহাদের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘প্রবৃত্ত হয়।

তাহাদের মধ্যে কাহারও কাহারও ভীষণ শব্দ নিবিড় মেঘাবৃত অম্বরের অনুহুঙ্কার করিয়া দর্শকবৃন্দকে চমকিত করিয়া তুলে। ভাসমান আলোকযান হইতে সুমধুর বাদ্যধ্বনি ভাগীরথীর জলোচ্ছ্বাসের সহিত মিশিয়া নীরব দিগন্তে ছড়াইয়া পড়ে। এই আলোকোৎসব দেখিবার জন্য মুর্শিদাবাদে সহস্র সহস্র লোকের সমাগম হয়। অনেক সুসজ্জিত তরণী ভাগীরথীবক্ষে ক্রীড়া করিতে থাকে।

বাতায়ন হইতে পুরসুন্দরীগণ সেই’ জ্যোতিলীলা দেখিতে থাকেন। মহাকবি কালিদাস বিলোলনেত্রভ্রমরালঙ্কত যে রমণীবদন-সরোজুের বর্ণনা করিয়াছেন, এই সময়েই তাহা সুন্দররূপেই প্রতীত হয়। অন্ধকারময়ী রজনীতে এইরূপ আলোকোৎসব যে কত মনোরম, তাহা না দেখিলে বুঝা যায় না। এই আলোকোৎসবের সাধারণ নাম ‘ব্যারা’। ব্যারা প্রতিবৎসর ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে সম্পন্ন হয়। খাজা খেজেরের স্মরণোদ্দেশে এই পর্ব্বের অনুষ্ঠান।

জ্ঞানী-ইলায়াসাকে মুসলমানেরা খেজের বলিয়া নির্দেশ করেন। খেজেরের উৎসবোপলক্ষে নদীবক্ষে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরণী ভাসাইবার রীতি থাকায় ভাগীরথীবক্ষে এইরূপ আলোকযান ভাসাইয়া দেওয়া হয়। অনেক স্থল হইতে বহুসংখ্যক কদলীবৃক্ষ ও বংশ আনীত হইয়া, আলোকযান প্রস্তুত হইয়া থাকে। যখন এই উৎসব মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত, তখন উক্ত যানের পরিমাণ দীর্ঘে ৩০০ হস্ত ও প্রস্থে ১০০ হস্ত ছিল। বর্তমান সময়ে দীর্ঘে ৮০ হস্ত ও প্রস্থে ৫০/৬০ হস্ত মাত্র হয়।