০৩:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩১৫) ভারতের কৃষকদের জন্য নতুন আশার আলো— কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বদলে যাচ্ছে মৌসুমি বৃষ্টির পূর্বাভাস নীল উপত্যকার টমেটোর গল্পে মিশরীয় স্বাদের ইতিহাস ও নারী ঐতিহ্যের সন্ধান শত্রুর তুলনায় বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা  অধিক আঘাত দেয়  বলিউডের তারকারা এখন চায় স্ট্রিমিংয়ের লাভের শেয়ার, শুধু অগ্রিম চেক নয় মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৩) যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি ৩ শতাংশে পৌঁছালেও প্রত্যাশার নিচে, সুদহার কমাতে স্বস্তিতে ফেড অধিকাংশ শেয়ারদরের পতনে ডিএসই ও সিএসই সপ্তাহ শুরু করল লাল সূচকে শেহবাজ শরিফ ও আসিম মুনির ‘মহান মানুষ’, বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আত্মসাৎ হওয়া ৪৫০০ কোটি টাকার ফেরত দাবি—দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় গ্রাহকরা

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৩)

কেহবা মনস্তাপে ভাগী-রণীগর্ভে প্রবেশ করে, কেহবা অনন্ত স্পর্শ করিবার আশায় নৈশান্ধকার-স্তূপ ভেদ করিয়া উঠিতে উঠিতে, নাজানি কি মর্মবেদনায় ফাটিয়া পড়ে; কেহ বা শত শত আলোকের ফুল ফুটাইয়া চতুদ্দিকে ভাসমান কমল-রাশিকে উপহাস করিতে থাকে। এই সময় তীর হইতেও নানাবিধ আতসবাজী তাহাদের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘প্রবৃত্ত হয়।

তাহাদের মধ্যে কাহারও কাহারও ভীষণ শব্দ নিবিড় মেঘাবৃত অম্বরের অনুহুঙ্কার করিয়া দর্শকবৃন্দকে চমকিত করিয়া তুলে। ভাসমান আলোকযান হইতে সুমধুর বাদ্যধ্বনি ভাগীরথীর জলোচ্ছ্বাসের সহিত মিশিয়া নীরব দিগন্তে ছড়াইয়া পড়ে। এই আলোকোৎসব দেখিবার জন্য মুর্শিদাবাদে সহস্র সহস্র লোকের সমাগম হয়। অনেক সুসজ্জিত তরণী ভাগীরথীবক্ষে ক্রীড়া করিতে থাকে।

বাতায়ন হইতে পুরসুন্দরীগণ সেই’ জ্যোতিলীলা দেখিতে থাকেন। মহাকবি কালিদাস বিলোলনেত্রভ্রমরালঙ্কত যে রমণীবদন-সরোজুের বর্ণনা করিয়াছেন, এই সময়েই তাহা সুন্দররূপেই প্রতীত হয়। অন্ধকারময়ী রজনীতে এইরূপ আলোকোৎসব যে কত মনোরম, তাহা না দেখিলে বুঝা যায় না। এই আলোকোৎসবের সাধারণ নাম ‘ব্যারা’। ব্যারা প্রতিবৎসর ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে সম্পন্ন হয়। খাজা খেজেরের স্মরণোদ্দেশে এই পর্ব্বের অনুষ্ঠান।

জ্ঞানী-ইলায়াসাকে মুসলমানেরা খেজের বলিয়া নির্দেশ করেন। খেজেরের উৎসবোপলক্ষে নদীবক্ষে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরণী ভাসাইবার রীতি থাকায় ভাগীরথীবক্ষে এইরূপ আলোকযান ভাসাইয়া দেওয়া হয়। অনেক স্থল হইতে বহুসংখ্যক কদলীবৃক্ষ ও বংশ আনীত হইয়া, আলোকযান প্রস্তুত হইয়া থাকে। যখন এই উৎসব মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত, তখন উক্ত যানের পরিমাণ দীর্ঘে ৩০০ হস্ত ও প্রস্থে ১০০ হস্ত ছিল। বর্তমান সময়ে দীর্ঘে ৮০ হস্ত ও প্রস্থে ৫০/৬০ হস্ত মাত্র হয়।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩১৫)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৩)

১১:০০:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

কেহবা মনস্তাপে ভাগী-রণীগর্ভে প্রবেশ করে, কেহবা অনন্ত স্পর্শ করিবার আশায় নৈশান্ধকার-স্তূপ ভেদ করিয়া উঠিতে উঠিতে, নাজানি কি মর্মবেদনায় ফাটিয়া পড়ে; কেহ বা শত শত আলোকের ফুল ফুটাইয়া চতুদ্দিকে ভাসমান কমল-রাশিকে উপহাস করিতে থাকে। এই সময় তীর হইতেও নানাবিধ আতসবাজী তাহাদের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘প্রবৃত্ত হয়।

তাহাদের মধ্যে কাহারও কাহারও ভীষণ শব্দ নিবিড় মেঘাবৃত অম্বরের অনুহুঙ্কার করিয়া দর্শকবৃন্দকে চমকিত করিয়া তুলে। ভাসমান আলোকযান হইতে সুমধুর বাদ্যধ্বনি ভাগীরথীর জলোচ্ছ্বাসের সহিত মিশিয়া নীরব দিগন্তে ছড়াইয়া পড়ে। এই আলোকোৎসব দেখিবার জন্য মুর্শিদাবাদে সহস্র সহস্র লোকের সমাগম হয়। অনেক সুসজ্জিত তরণী ভাগীরথীবক্ষে ক্রীড়া করিতে থাকে।

বাতায়ন হইতে পুরসুন্দরীগণ সেই’ জ্যোতিলীলা দেখিতে থাকেন। মহাকবি কালিদাস বিলোলনেত্রভ্রমরালঙ্কত যে রমণীবদন-সরোজুের বর্ণনা করিয়াছেন, এই সময়েই তাহা সুন্দররূপেই প্রতীত হয়। অন্ধকারময়ী রজনীতে এইরূপ আলোকোৎসব যে কত মনোরম, তাহা না দেখিলে বুঝা যায় না। এই আলোকোৎসবের সাধারণ নাম ‘ব্যারা’। ব্যারা প্রতিবৎসর ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে সম্পন্ন হয়। খাজা খেজেরের স্মরণোদ্দেশে এই পর্ব্বের অনুষ্ঠান।

জ্ঞানী-ইলায়াসাকে মুসলমানেরা খেজের বলিয়া নির্দেশ করেন। খেজেরের উৎসবোপলক্ষে নদীবক্ষে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরণী ভাসাইবার রীতি থাকায় ভাগীরথীবক্ষে এইরূপ আলোকযান ভাসাইয়া দেওয়া হয়। অনেক স্থল হইতে বহুসংখ্যক কদলীবৃক্ষ ও বংশ আনীত হইয়া, আলোকযান প্রস্তুত হইয়া থাকে। যখন এই উৎসব মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত, তখন উক্ত যানের পরিমাণ দীর্ঘে ৩০০ হস্ত ও প্রস্থে ১০০ হস্ত ছিল। বর্তমান সময়ে দীর্ঘে ৮০ হস্ত ও প্রস্থে ৫০/৬০ হস্ত মাত্র হয়।