ট্রাম্পের পরিকল্পিত বক্তব্য
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি মার্কিন সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর শীর্ষ জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের উদ্দেশে বলবেন, তারা দেশের অমূল্য সম্পদ এবং তাদের আরও শক্তিশালী, দৃঢ় ও সহানুভূতিশীল হতে হবে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জেনারেলদের বলতে চাই আমরা তাদের ভালোবাসি, তারা সম্মানিত নেতৃত্ব। তাদের শক্ত, বুদ্ধিমান এবং সহানুভূতিশীল হতে হবে। এটাই আসল মনোবল, এর আগে কেউ এটা করেনি।’
কোয়ান্টিকোতে বিরল সমাবেশ
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত শীর্ষ মার্কিন সামরিক নেতৃত্বকে ভার্জিনিয়ার কোয়ান্টিকোতে একটি বৈঠকে আহ্বান করেছেন। এটি এক স্থানে সামরিক নেতৃত্বের বিরল সমাবেশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই বৈঠক মেরিন কর্পস বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
হেগসেথের এজেন্ডা ও উদ্বেগ
হেগসেথ তার বক্তব্যে ‘যোদ্ধার নীতি’ বা ‘ওয়ারিয়র এথোস’-এর ওপর জোর দিতে চান। প্রায় প্রতিটি বক্তব্যেই তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য এই মানসিকতাকে অপরিহার্য বলে তুলে ধরেন। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের উপস্থিতি হয়তো হেগসেথের পরিকল্পনাকে আড়াল করে দিতে পারে।
বিশ্বজুড়ে মার্কিন উপস্থিতি
মার্কিন সেনারা বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে। এসব স্থানে দুই থেকে চার তারকা জেনারেল ও অ্যাডমিরালরা দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন
এ মাসের শুরুতে ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘যুদ্ধ মন্ত্রণালয়’ ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শান্তি রক্ষার ভূমিকা জোরালো করতে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স’ নাম রাখা হয়েছিল, এবার সেটিকে আবার পুরনো নামে ফিরিয়ে আনা হলো।
হেগসেথের বিতর্কিত পরিবর্তন
সাবেক ফক্স নিউজ উপস্থাপক হেগসেথ দ্রুততার সঙ্গে মন্ত্রণালয়কে পুনর্গঠন করছেন। তিনি একাধিক জেনারেল ও অ্যাডমিরালকে অপসারণ করেছেন এবং ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্ডা বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছেন। একই সঙ্গে বৈচিত্র্যভিত্তিক কর্মসূচিগুলোকে বৈষম্যমূলক বলে বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছেন।
খরচ ও প্রশ্ন
অধিকাংশ শীর্ষ কর্মকর্তাকে সরকারি সামরিক বিমান ব্যবহার করে মেরিল্যান্ডের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে আনা হবে। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, এত বড় আয়োজন ভার্চুয়ালি করা যেত না কেন। শুধুমাত্র পরিবহন ও নিরাপত্তা ব্যয়ে এই বৈঠকের খরচ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কোয়ান্টিকোর এই সমাবেশকে ঘিরে ট্রাম্প ও হেগসেথ উভয়ের রাজনৈতিক ও সামরিক বার্তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে ট্রাম্পের উপস্থিতি তার ‘যুদ্ধ মন্ত্রণালয়’ ঘোষণার ধারাবাহিকতায় সামরিক নেতৃত্বের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।