০৩:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

সীমান্ত পেরোনো দুই রেল প্রকল্পের ঘোষণা, আসাম-বাংলা হয়ে ভুটানে ট্রেন চলবে

দুটি সীমান্ত পেরোনো রেল প্রকল্পের ঘোষণা

ভারত সরকার ভুটানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে দুটি সীমান্ত পেরোনো রেল প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত থেকে ভুটানে রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। সোমবার এ ঘোষণা দেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

দুটি প্রকল্প হলো—

  • • আসামের কোকরাঝাড় থেকে ভুটানের গেলেপু পর্যন্ত ৬৯ কিলোমিটার লাইন, ব্যয় হবে প্রায় ৩৪৫৬ কোটি রুপি।
  • • পশ্চিমবঙ্গের বানারহাট থেকে ভুটানের সামচে পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইন, ব্যয় হবে প্রায় ৫৭৭ কোটি রুপি।

ভুটানে উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব

মন্ত্রী জানান, গেলেপু দ্রুতই “মাইন্ডফুলনেস সিটি” হিসেবে এবং সামচে একটি শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে উঠছে। ভারতের সঙ্গে ভুটানের বেশিরভাগ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ভারতীয় বন্দর দিয়েই সম্পন্ন হয়। তাই রেল যোগাযোগ বাণিজ্য ও পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Sidhant Sibal on X: "Bhutan Foreign Secretary Pema Choden and Chairman Satish  Kumar, Railway Board, Ministry of Railways sign MoU for the establishment  of railway links between Bhutan and India i.e. Gelephu

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

দিনের দ্বিতীয়ার্ধে রেলওয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান সতীশ কুমার এবং ভুটানের পররাষ্ট্রসচিব আউম পেমা ছোদেন এ বিষয়ে আন্তঃসরকারি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

প্রকল্পের অবকাঠামো ও সময়সীমা

  • • কোকরাঝাড়-গেলেপু লাইনে থাকবে ৬টি স্টেশন, ২টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু, ২৯টি বড় সেতু, ৬৫টি ছোট সেতু, ২টি গুডস শেড, ১টি ফ্লাইওভার এবং ৩৯টি আন্ডারপাস। কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৪ বছর।
  • • বানারহাট-সামচে লাইনে থাকবে ২টি স্টেশন, ১টি বড় সেতু, ২৪টি ছোট সেতু, ১টি ওভারপাস ও ৩৭টি আন্ডারপাস। এ কাজ শেষ হবে ৩ বছরে।

গেলেপু লাইনের মধ্যে ভুটানে পড়বে ২.৩৯ কিমি আর ভারতে ৬৬.৬৬ কিমি। সামচে লাইনের মধ্যে ভুটানে পড়বে ২.১৩ কিমি এবং ভারতে ১৭.৪২ কিমি।

অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে প্রভাব

রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব বলেন, এই দুই প্রকল্প যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সুবিধা দেবে, পাশাপাশি নতুন অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। দুটি লাইনই বিদ্যুতায়িত হবে এবং আধুনিক ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তৈরি করা হবে, যার মধ্যে বান্দে ভারত ট্রেনও রয়েছে। উন্নত সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।

Foreign secretary Vikram Misri to visit Bangladesh on December 9: MEA |  Latest News India

কৌশলগত গুরুত্ব

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, প্রকল্পটি দুই দেশের সামগ্রিক সংযোগ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে। গেলেপু হচ্ছে “গেলেপু মাইন্ডফুলনেস সিটি”-র কেন্দ্রবিন্দু, যা ভুটানের দক্ষিণাঞ্চলে এক অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। আসাম সীমান্তে হওয়ায় প্রকল্পের সুফল গোটা অঞ্চলেই পড়বে।

অন্যদিকে সামচে যেহেতু একটি শিল্পকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে, তাই এখান থেকে ভারতের বাজারে রপ্তানি হবে ডলোমাইট, ফেরো-সিলিকন, কোয়ার্টজাইট এবং চুনাপাথর।

অর্থায়ন কাঠামো

মিশ্রি জানান, ভারতের রেল মন্ত্রণালয় প্রকল্পের ভারতীয় অংশের অর্থায়ন করবে। ভুটানের অংশে ব্যয়ভার বহন করা হবে ভারতের সহায়তায় ভুটানের ১৩তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

সীমান্ত পেরোনো দুই রেল প্রকল্পের ঘোষণা, আসাম-বাংলা হয়ে ভুটানে ট্রেন চলবে

০৬:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

দুটি সীমান্ত পেরোনো রেল প্রকল্পের ঘোষণা

ভারত সরকার ভুটানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে দুটি সীমান্ত পেরোনো রেল প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত থেকে ভুটানে রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। সোমবার এ ঘোষণা দেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

দুটি প্রকল্প হলো—

  • • আসামের কোকরাঝাড় থেকে ভুটানের গেলেপু পর্যন্ত ৬৯ কিলোমিটার লাইন, ব্যয় হবে প্রায় ৩৪৫৬ কোটি রুপি।
  • • পশ্চিমবঙ্গের বানারহাট থেকে ভুটানের সামচে পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইন, ব্যয় হবে প্রায় ৫৭৭ কোটি রুপি।

ভুটানে উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব

মন্ত্রী জানান, গেলেপু দ্রুতই “মাইন্ডফুলনেস সিটি” হিসেবে এবং সামচে একটি শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে উঠছে। ভারতের সঙ্গে ভুটানের বেশিরভাগ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ভারতীয় বন্দর দিয়েই সম্পন্ন হয়। তাই রেল যোগাযোগ বাণিজ্য ও পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Sidhant Sibal on X: "Bhutan Foreign Secretary Pema Choden and Chairman Satish  Kumar, Railway Board, Ministry of Railways sign MoU for the establishment  of railway links between Bhutan and India i.e. Gelephu

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

দিনের দ্বিতীয়ার্ধে রেলওয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান সতীশ কুমার এবং ভুটানের পররাষ্ট্রসচিব আউম পেমা ছোদেন এ বিষয়ে আন্তঃসরকারি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

প্রকল্পের অবকাঠামো ও সময়সীমা

  • • কোকরাঝাড়-গেলেপু লাইনে থাকবে ৬টি স্টেশন, ২টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু, ২৯টি বড় সেতু, ৬৫টি ছোট সেতু, ২টি গুডস শেড, ১টি ফ্লাইওভার এবং ৩৯টি আন্ডারপাস। কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৪ বছর।
  • • বানারহাট-সামচে লাইনে থাকবে ২টি স্টেশন, ১টি বড় সেতু, ২৪টি ছোট সেতু, ১টি ওভারপাস ও ৩৭টি আন্ডারপাস। এ কাজ শেষ হবে ৩ বছরে।

গেলেপু লাইনের মধ্যে ভুটানে পড়বে ২.৩৯ কিমি আর ভারতে ৬৬.৬৬ কিমি। সামচে লাইনের মধ্যে ভুটানে পড়বে ২.১৩ কিমি এবং ভারতে ১৭.৪২ কিমি।

অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে প্রভাব

রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব বলেন, এই দুই প্রকল্প যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সুবিধা দেবে, পাশাপাশি নতুন অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। দুটি লাইনই বিদ্যুতায়িত হবে এবং আধুনিক ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তৈরি করা হবে, যার মধ্যে বান্দে ভারত ট্রেনও রয়েছে। উন্নত সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।

Foreign secretary Vikram Misri to visit Bangladesh on December 9: MEA |  Latest News India

কৌশলগত গুরুত্ব

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, প্রকল্পটি দুই দেশের সামগ্রিক সংযোগ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে। গেলেপু হচ্ছে “গেলেপু মাইন্ডফুলনেস সিটি”-র কেন্দ্রবিন্দু, যা ভুটানের দক্ষিণাঞ্চলে এক অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। আসাম সীমান্তে হওয়ায় প্রকল্পের সুফল গোটা অঞ্চলেই পড়বে।

অন্যদিকে সামচে যেহেতু একটি শিল্পকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে, তাই এখান থেকে ভারতের বাজারে রপ্তানি হবে ডলোমাইট, ফেরো-সিলিকন, কোয়ার্টজাইট এবং চুনাপাথর।

অর্থায়ন কাঠামো

মিশ্রি জানান, ভারতের রেল মন্ত্রণালয় প্রকল্পের ভারতীয় অংশের অর্থায়ন করবে। ভুটানের অংশে ব্যয়ভার বহন করা হবে ভারতের সহায়তায় ভুটানের ১৩তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায়।