এশিয়া কাপ ট্রফি বিতর্ক ও বিক্রম সূদের মন্তব্য
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভি এশিয়া কাপের ট্রফি নিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশের পর তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ভারতের প্রাক্তন গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র’)-এর প্রধান বিক্রম সূদ পাকিস্তানকে ‘বানানা রিপাবলিক’ আখ্যা দেন।
তিনি বলেন, ‘‘এটা হাস্যকর। পৃথিবীর অন্য কোথাও এমন ঘটনা ঘটতে পারে না। এটা কেবল একটি বানানা রিপাবলিকের প্রতিক্রিয়া। আর দুর্ভাগ্যবশত, এটাই আমাদের প্রতিবেশী—একটি পারমাণবিক শক্তিধর বানানা রিপাবলিক।’’
পাকিস্তানি সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে আক্রমণ
বিক্রম সূদ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ তোলেন যে, পাকিস্তানি সেনা নেতৃত্ব পেশাদার নয়, বরং আদর্শবাদী ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত।
সূদ সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ‘ইসলামী জিহাদিস্ট জেনারেল’ আখ্যা দিয়ে তার কথিত মন্তব্য উদ্ধৃত করেন—“হিন্দু ও মুসলিম এক সঙ্গে বাস করতে পারে না।”
তিনি তুলনা টেনে বলেন, ‘‘আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে কোনো ভারতীয় জেনারেল এ ধরনের মন্তব্য করবেন? কখনোই না। আমাদের অফিসাররা পেশাদার, কিন্তু তাদের অফিসাররা আদর্শবাদী। তাদের কাছে জয় মানে জমি না হারানো, যদিও মানুষ মারা যাক তবুও।’’
বেলুচিস্তান আন্দোলন প্রসঙ্গে সতর্কবার্তা
বেলুচিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বিক্রম সূদ বলেন, এই আন্দোলন এখন ক্রমেই গুরুতর হয়ে উঠছে। অতীতে এটি সীমিত পর্যায়ে ছিল, কিন্তু বর্তমানে মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত শ্রেণির অংশগ্রহণ এতে যোগ হয়েছে, যা আন্দোলনকে দীর্ঘমেয়াদে আরও শক্তিশালী করছে।
তিনি বলেন, ‘‘বেলুচিস্তান বহুদিন ধরেই সমস্যা। আগে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বা শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তাতে ভূমিকা রাখত না। এখন পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। এর ফলে আন্দোলন এখন অনেক বেশি বিপজ্জনক এবং গুরুতর।’’
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ভারতের তোপ
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) ৬০তম অধিবেশনের ৩৪তম বৈঠকে ভারত পাকিস্তানকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে। ভারতীয় কূটনীতিক মোহাম্মদ হুসেইন জেনেভায় দেওয়া বক্তব্যে বলেন, পাকিস্তান নিজের ভেতরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ঢাকতে অন্যদের সমালোচনা করে।
তিনি বলেন, ‘‘এটা ভীষণ বিদ্রূপাত্মক যে পাকিস্তানের মতো একটি দেশ মানবাধিকার নিয়ে অন্যদের উপদেশ দেওয়ার চেষ্টা করে। নিজেদের দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা উচিত, প্রচার চালানো নয়।’’
খাইবার পাখতুনখোয়ায় বিস্ফোরণে নিহত ২৪ জন
ভারতের এই সমালোচনার প্রেক্ষাপটে খাইবার পাখতুনখোয়ায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়। স্থানীয় পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানি তালেবানের একটি কম্পাউন্ডে বিস্ফোরক সামগ্রী ফেটে গিয়ে অন্তত ২৪ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও ছিল। এতে বহু মানুষ আহত হন।
এই ঘটনাকে সামনে রেখে ভারত আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের ভেতরে চলমান মানবাধিকার সংকটকে আবারও উত্থাপন করে।