অক্টোবর থেকে নতুন যাত্রা
পাঁচ বছর পর ভারত ও চীন আবারও সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে। আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে ইন্ডিগো কলকাতা-গুয়াংজু রুটে দৈনিক ফ্লাইট চালাবে। বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কর্তৃপক্ষের মতে, এই উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্ককে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করতে সহায়ক হবে।
আলোচনার সূত্রপাত
২০২০ সালের পর থেকে ভারত-চীনের সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ ছিল। কোভিড-১৯ মহামারি ও পরবর্তী সীমান্ত সংঘাতের কারণে এই সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার কাজান শহরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে নতুনভাবে আলোচনা শুরু হয়।
এরপর এ বছরের শুরু থেকে দুই দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একাধিক বৈঠক করে এবং বিমান চলাচল চুক্তি পুনর্বিবেচনা করে।
সরকারি অবস্থান
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সব ধরনের কারিগরি ও বাণিজ্যিক শর্ত পূরণের পর ২০২৫ সালের অক্টোবরের শেষ নাগাদ ফ্লাইট চালু হবে। শীতকালীন সময়সূচি অনুযায়ী নির্ধারিত রুটে ভারত ও চীনের এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তি দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এয়ারলাইন্সের ভূমিকা
সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় ইন্ডিগো এবং চীনের চায়না ইস্টার্ন প্রথমে ফ্লাইট চালু করবে। বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছিল, কারণ এটি অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের জন্য অপরিহার্য।
ইন্ডিগো জানিয়েছে, ২৬ অক্টোবর থেকে কলকাতা-গুয়াংজু রুটে দৈনিক ফ্লাইট চালু হবে। পরবর্তীতে দিল্লি-গুয়াংজু রুটও চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এসব রুটে এয়ারবাস A320neo ব্যবহার করা হবে।
ইন্ডিগোর বক্তব্য
ইন্ডিগোর প্রধান নির্বাহী পিটার এলবার্স বলেন, “ভারত থেকে চীনে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে প্রথম সারির এয়ারলাইন্স হিসেবে ভূমিকা রাখতে পেরে আমরা গর্বিত। এর ফলে মানুষ, পণ্য ও ধারণার অবাধ আদান-প্রদান আবারও সম্ভব হবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।”
সম্পর্কের প্রেক্ষাপট
২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় ও চীনা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্ক ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় নেমে আসে। উভয়পক্ষ প্রায় ৫০ হাজার সেনা সীমান্তে মোতায়েন করেছিল। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দেমচক ও দেপসাং এলাকায় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সমঝোতা হয়।
এর আগে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, এয়ার চায়না, চায়না সাউদার্ন ও চায়না ইস্টার্ন ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করত।