বেসবলে টাকার প্রভাব
মেজর লিগ বেসবলে অর্থ খরচ ও সাফল্যের মধ্যে স্পষ্ট ফারাক চোখে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্স যেখানে ওয়ার্ল্ড সিরিজ জয়ের পর ৪৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, সেখানে সিনসিনাটি রেডস তাদের মৌসুমের দলে ব্যয় করেছে মাত্র ১১৯ মিলিয়ন ডলার। অথচ দুটো দলই প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে।
অবশ্য, সম্ভাবনার পাল্লা সবসময় বেশি টাকাওয়ালা দলগুলোর দিকে ঝুঁকেছে, যেমনটা গত অক্টোবরেও হয়েছিল।
ডজার্স বনাম ব্রুয়ার্স: ভিন্ন পদ্ধতি, একই সাফল্য
ডজার্সের ম্যানেজার ডেভ রবার্টস বলেছেন, “সবাই জানে এই ডিভিশন লস অ্যাঞ্জেলেসের মধ্য দিয়েই যায়।” অন্যদিকে, মিলওয়াকি ব্রুয়ার্সের ম্যানেজার প্যাট মারফি তাঁর দলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “যখন কেউ বিশ্বাস করেনি, তখন তোমরা বারবার ছোট ছোট কাজগুলো করে দেখিয়েছ।”
যদিও আর্থিকভাবে ডজার্স ব্রুয়ার্সের বহু গুণ বেশি ব্যয় করেছে, দুটো দলই গত পাঁচ মৌসুমে চারবার করে ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। পার্থক্যটা শুধু অর্থব্যয়ে—ডজার্স যেখানে বিলিয়ন ডলার ঢেলেছে, ব্রুয়ার্স সেখানে লিগে ২৩তম স্থানে থেকেও সেরা রেকর্ড করেছে।
টাকা ও প্লে-অফের সমীকরণ
বড় লিগের নির্বাহীরা প্রায়ই বলেন, “টাকা চ্যাম্পিয়নশিপ কিনতে পারে না।” তবে তা প্লে-অফের পথে অনেক দূর এগিয়ে দেয়।
- • ১২টি প্লে-অফ দলের মধ্যে ৬টির পে-রোল শীর্ষ দশে।
- • ব্রুয়ার্স (১১৭ মিলিয়ন), রেডস (১১৯ মিলিয়ন) ও ক্লিভল্যান্ড গার্ডিয়ান্স (১০১ মিলিয়ন) ব্যয় তালিকার নিচে থেকেও সুযোগ পেয়েছে।
- • অন্যদিকে, নিউইয়র্ক মেটস ও হিউস্টন অ্যাস্ট্রোস, যারা বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে, তারা বাদ পড়েছে।
গত ছয় মৌসুমের মধ্যে পাঁচবারই শীর্ষ দশ ব্যয়ের দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। শেষবার নিম্ন ব্যয়ের কোনো দল (ফ্লোরিডা মার্লিনস) শিরোপা জিতেছিল ২০০৩ সালে।
অর্থনৈতিক বৈষম্য ও শ্রমিক সংকটের হুমকি
লিগ কমিশনার রব ম্যানফ্রেড স্বীকার করেছেন যে রাজস্ব বৈষম্য তাঁর সবচেয়ে বড় উদ্বেগ। ইতিমধ্যেই দল-মালিক ও খেলোয়াড় ইউনিয়নের মধ্যে নতুন করে শ্রম বিরোধ দেখা দিতে পারে।
- • মালিকরা বেতনসীমা (salary cap) চাইছে।
- • খেলোয়াড়রা এর তীব্র বিরোধিতা করছে এবং চান খরচ করা দলকে যেন পুরস্কৃত করা হয়, শাস্তি দেওয়া নয়।
২০২৫ মৌসুমে বিলাসী করসীমা ছিল ২৪১ মিলিয়ন ডলার। এই সীমা অতিক্রম করা ৮ দলের মধ্যে ৬টি প্লে-অফে উঠেছে। সবচেয়ে বড় কর দিতে হচ্ছে ডজার্সকে — ১৫০.৭ মিলিয়ন ডলার, যা অনেক দলের পুরো পে-রোলের চেয়েও বেশি।
বড় খরচ, বড় সাফল্য — কিন্তু ব্যতিক্রমও আছে
- • ইয়াঙ্কিস, ব্লু জেস ও ফিলিস রেকর্ড বাজেট নিয়ে প্লে-অফে ফিরেছে।
- • মেটস বিপুল অর্থ খরচ করেও ভরাডুবি ঘটিয়েছে।
- • রেডস তবুও কম খরচে আনন্দ খুঁজে পেয়েছে, ২০১৩ সালের পর প্রথমবার পূর্ণ মৌসুম শেষে প্লে-অফে উঠেছে।
এদিকে অনেক ছোট বাজারের দল যেমন ট্যাম্পা বে রেজ ও অ্যাথলেটিকস ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে
মালিকদের মধ্যে স্থানীয় টেলিভিশন স্বত্ব একত্রে বিক্রির প্রস্তাব রয়েছে, তবে ডজার্স ও ইয়াঙ্কিসের মতো দলগুলো এতে অনাগ্রহী। অন্যদিকে, শ্রম চুক্তি শেষ হওয়ার পর আবারও লকআউটের আশঙ্কা জোরালো।
মৌসুমের সার্বিক চিত্র দেখায় — সবচেয়ে ভালো রেকর্ড করেছে ছোট বাজারের ব্রুয়ার্স। কিন্তু বড় বাজেটের ডজার্স, ইয়াঙ্কিস, ফিলিস ও ব্লু জেস রাও প্লে-অফে আছে। ফলে বেতনসীমা নিয়ে বিতর্ক শিগগিরই থামবে না।