ইরিত্রিয়ার সংকট: এক দারুণ বিপদ
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ যে ধরনের আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাতে ইরিত্রিয়া এক ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। ইরিত্রিয়ার একনায়ক, ইসাইয়াস আফওয়ার্কি, ১৯৯১ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। ৮০ বছর বয়সী আফওয়ার্কি এখনও তার শাসনের বিরুদ্ধে কোনো পরিবর্তন আনেননি। তার শাসনব্যবস্থা ইরিত্রিয়াকে পিছিয়ে দিয়েছে এবং দেশটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে গোপনীয় একনায়কতন্ত্রের মধ্যে পড়েছে। ইরিত্রিয়া এক সময় আফ্রিকার অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ ছিল, তবে বর্তমানে মৌলিক পণ্য, যেমন সাবান বা বোতলজাত পানি, আমদানি করতে হয়। এর ফলে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, এক ধরনের জবরদস্তি সামরিক নিয়োগ ব্যবস্থার কারণে, যা জাতিসংঘ মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ইথিওপিয়ার আগ্রাসন এবং বন্দর দখল
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ ইরিত্রিয়ার “আসাব” বন্দর দখল করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বন্দরটি পুনরুদ্ধারে তিনি যেকোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত। নতুন মিসাইল, যুদ্ধবিমান এবং ড্রোন নিয়ে ইথিওপিয়া একটি নতুন আক্রমণাত্মক সামরিক বাহিনী প্রস্তুত করেছে। এতে ইথিওপিয়া ইরিত্রিয়ার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরিত্রিয়ার প্রতিরোধ ও সমর্থন
ইরিত্রিয়ার জনগণ ইথিওপিয়ার পুনরুদ্ধারের চিন্তা গ্রহণ করবে না। যদিও ইসাইয়াস আফওয়ার্কি অত্যন্ত বিতর্কিত, তবুও তার সরকার যে ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলছে, তা অনেক শক্তিশালী। দেশটি মিসর এবং সুদান থেকে সমর্থন পেতে পারে, এবং তিগ্রে মুক্তি ফ্রন্টের (TPLF) সমর্থনও আদায় করা সম্ভব হতে পারে।
তিগ্রে ও ইরিত্রিয়ার সম্পর্কের পরিবর্তন
ইথিওপিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ইসাইয়াস আফওয়ার্কি এবং TPLF একটি সামরিক জোট তৈরি করেছে। তিগ্রে অঞ্চলের কিছু নেতা মনে করেন, তাদের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমঝোতা হতে পারে, যেখানে ইরিত্রিয়া ও তিগ্রে একত্রিত হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে পারে। যদিও এটি বাস্তবসম্মত নয়, তবে ঐতিহাসিকভাবে এই ধরনের প্রশ্ন উঠে আসছে।
ভবিষ্যৎ আশঙ্কা
ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার মধ্যে এই সংকটের ইতিহাস দীর্ঘকাল ধরে চলেছে, এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। রাজনৈতিক এবং সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই অঞ্চলে বিপদের ঝুঁকি অব্যাহত রয়েছে।