০৮:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

সানা তাকিৎচি: জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন

সানা তাকিৎচি: জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে

জাপানের শাসক দল, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), তাদের নেতৃত্বে কঠোর রক্ষণশীল সানা তাকিৎচিকে নির্বাচন করেছে। এই পদে জয়লাভের মাধ্যমে তিনি জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। ৬৪ বছর বয়সী তাকিৎচি, যিনি প্রাক্তন অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

এলডিপির চ্যালেঞ্জ

এলডিপি দীর্ঘদিন ধরে জাপানে ক্ষমতায় রয়েছে, তবে বর্তমান পরিস্থিতি দলের জন্য একটি সংকট সৃষ্টি করেছে। দলের জনপ্রিয়তা কমে গেছে, বিশেষ করে যুবক ভোটারদের কাছে। তাকিৎচি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, মডারেট শিনজিরো কোইজুমিকে পরাজিত করেছেন, যিনি দলের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী নেতা হতে চেয়েছিলেন।

তাকিৎচির রাজনৈতিক অবস্থান

Right-wing Sanae Takaichi set to be Japan's first female premier

তাকিৎচি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র “অ্যাবিনোমিকস” অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সমর্থক, জাপানের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য আক্রমণাত্মক ব্যয়ের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। এর ফলে দেশটির ঋণ পরিমাণ আরো বাড়বে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।

তাকিৎচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি নতুন বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা ট্রাম্পের শুল্ক কমানোর বদলে জাপানের সরকারী অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ করবে।

প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া

তাকিৎচির জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, যেমন তিনি নিয়মিত ইয়াসুকুনি মন্দিরে যান, যা কিছু এশীয় দেশগুলির কাছে জাপানের যুদ্ধকালীন সামরিক মনোভাবের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনে তার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তবে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-টে তাকিৎচির নির্বাচনে স্বাগত জানিয়েছেন এবং উভয় দেশের সম্পর্ক গভীর করার আশা প্রকাশ করেছেন।

Takaichi on Track to Become Japan's First Female Prime Minister - Bloomberg

জাতিগত ও সামাজিক বিষয়ে অবস্থান

তাকিৎচি জাপানের সমাজে আরও ঐতিহ্যবাদী এবং রক্ষণশীল অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তার কর্মসূচি, বিশেষত অভিবাসী এবং বিদেশি পর্যটকদের প্রতি তার কঠোর মনোভাব, বিদেশীদের নিয়ে সতর্ক বার্তা প্রদান করছে।

নতুন দিগন্তে জাপান

তাকিৎচি বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তিনি আন্তর্জাতিক সফর বাড়াবেন এবং “জাপান ফিরে এসেছে” এমন বার্তা ছড়িয়ে দেবেন। তবে, কিছু সমর্থক তাকে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন, যা জাপানের পুরুষপ্রধান রাজনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।

এভাবে, সানা তাকিৎচির নির্বাচনের মাধ্যমে জাপানে একটি নতুন রাজনৈতিক যুগ শুরু হতে যাচ্ছে, যা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানা তাকিৎচি: জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন

০৪:৫০:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

সানা তাকিৎচি: জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে

জাপানের শাসক দল, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), তাদের নেতৃত্বে কঠোর রক্ষণশীল সানা তাকিৎচিকে নির্বাচন করেছে। এই পদে জয়লাভের মাধ্যমে তিনি জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। ৬৪ বছর বয়সী তাকিৎচি, যিনি প্রাক্তন অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

এলডিপির চ্যালেঞ্জ

এলডিপি দীর্ঘদিন ধরে জাপানে ক্ষমতায় রয়েছে, তবে বর্তমান পরিস্থিতি দলের জন্য একটি সংকট সৃষ্টি করেছে। দলের জনপ্রিয়তা কমে গেছে, বিশেষ করে যুবক ভোটারদের কাছে। তাকিৎচি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, মডারেট শিনজিরো কোইজুমিকে পরাজিত করেছেন, যিনি দলের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী নেতা হতে চেয়েছিলেন।

তাকিৎচির রাজনৈতিক অবস্থান

Right-wing Sanae Takaichi set to be Japan's first female premier

তাকিৎচি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র “অ্যাবিনোমিকস” অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সমর্থক, জাপানের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য আক্রমণাত্মক ব্যয়ের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। এর ফলে দেশটির ঋণ পরিমাণ আরো বাড়বে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।

তাকিৎচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি নতুন বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা ট্রাম্পের শুল্ক কমানোর বদলে জাপানের সরকারী অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ করবে।

প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া

তাকিৎচির জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, যেমন তিনি নিয়মিত ইয়াসুকুনি মন্দিরে যান, যা কিছু এশীয় দেশগুলির কাছে জাপানের যুদ্ধকালীন সামরিক মনোভাবের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনে তার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তবে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-টে তাকিৎচির নির্বাচনে স্বাগত জানিয়েছেন এবং উভয় দেশের সম্পর্ক গভীর করার আশা প্রকাশ করেছেন।

Takaichi on Track to Become Japan's First Female Prime Minister - Bloomberg

জাতিগত ও সামাজিক বিষয়ে অবস্থান

তাকিৎচি জাপানের সমাজে আরও ঐতিহ্যবাদী এবং রক্ষণশীল অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তার কর্মসূচি, বিশেষত অভিবাসী এবং বিদেশি পর্যটকদের প্রতি তার কঠোর মনোভাব, বিদেশীদের নিয়ে সতর্ক বার্তা প্রদান করছে।

নতুন দিগন্তে জাপান

তাকিৎচি বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তিনি আন্তর্জাতিক সফর বাড়াবেন এবং “জাপান ফিরে এসেছে” এমন বার্তা ছড়িয়ে দেবেন। তবে, কিছু সমর্থক তাকে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন, যা জাপানের পুরুষপ্রধান রাজনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।

এভাবে, সানা তাকিৎচির নির্বাচনের মাধ্যমে জাপানে একটি নতুন রাজনৈতিক যুগ শুরু হতে যাচ্ছে, যা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।