মৌসুমে ওঠানামার পরও শীর্ষে ইয়াঙ্কিস ও ডজার্স
নিউইয়র্ক ইয়াঙ্কিস ও লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্স—মেজর লিগ বেসবলের দুই ঐতিহ্যবাহী দল—এই মৌসুমে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। ডজার্সকে ভুগিয়েছে একের পর এক ইনজুরি, তারকা মুকি বেটসের দীর্ঘ সময়ের খারাপ ফর্ম এবং ব্যয়বহুল নতুন খেলোয়াড়দের প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স না পাওয়া। অন্যদিকে ইয়াঙ্কিসের সমস্যার তালিকায় ছিল বুলপেন ভেঙে পড়া, প্রাথমিক কৌশলগত ভুল এবং অসঙ্গত খেলা।
এমন পারফরম্যান্সে প্রতিদ্বন্দ্বী ভক্তদের আশা ছিল, প্লে-অফে দুই দল ব্যর্থ হবে। কিন্তু ইতিহাস বলছে ভিন্ন কিছু: ইয়াঙ্কিস ও ডজার্স আবারও বিশ্ব সিরিজে মুখোমুখি হওয়ার মতো অবস্থায় রয়েছে।
কেন তাদের পক্ষে হিসাব বলছে
কারণটি সরল—তাদের হোম রান সংখ্যা। ইয়াঙ্কিস এই মৌসুমে সবচেয়ে বেশি হোম রান করেছে, আর ডজার্স রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, গত দশ বছরে যেসব দল শিরোপা জিতেছে, তাদের প্রায় সবাই হোম রানে শীর্ষ তালিকায় ছিল। গত পাঁচ চ্যাম্পিয়ন দলের সবাই এমএলবির শীর্ষ চার দলের মধ্যে ছিল হোম রান সংখ্যায়।

এর মানে, শুধু ইয়াঙ্কিস আর ডজার্স নয়, বরং সিয়াটল মেরিনার্সের জন্যও সম্ভাবনা উজ্জ্বল, কারণ তারা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। শিকাগো কাভস, ফিলাডেলফিয়া ফিলিজ ও ডেট্রয়েট টাইগারসও শীর্ষ ১০–এ জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু এমএলবির সেরা রেকর্ডধারী মিলওয়াকি ব্রিউয়ার্স হোম রানে রয়েছে ২২তম স্থানে। আরও খারাপ অবস্থা সান ডিয়েগো প্যাড্রেসের, যাদের লাইনআপে তারকা খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও তারা প্রায় সবার নিচের দিকে।
হোম রান বনাম ছোট খেলা: কোনটা কার্যকর?
ইয়াঙ্কিস ম্যানেজার অ্যারন বুন বলেছেন, “যতবার সম্ভব বেসে পৌঁছাতে হবে, আর কয়েকটা বল যদি গ্যালারিতে যায়, তবে দল এগিয়ে যাবে।” প্লে-অফে ছোট ছোট রান নিয়ে এগোনোর কৌশল অনেক সময় আলোচিত হয়। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, হোম রানই আসল অস্ত্র।
গত এক দশকে নিয়মিত মৌসুমে যে দল বেশি হোম রান করেছে, তারা জিতেছে ৭৬.৫ শতাংশ ম্যাচ। কিন্তু প্লে-অফে এ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ শতাংশ। কোনো সিরিজে বেশি হোম রান করা দলের জয়ের সম্ভাবনা দাঁড়ায় প্রায় ৮০ শতাংশে।
প্লে-অফে হোম রানের বাড়তি গুরুত্ব
প্লে-অফে সাধারণত সেরা পিচাররা খেলে, ফলে ব্যাটিং কঠিন হয়ে যায়। ২০১৫ সালের পর থেকে নিয়মিত মৌসুমে গড় ব্যাটিং গড় ছিল .২৪৯, কিন্তু প্লে-অফে নেমে এসেছে .২২৯–এ। একইভাবে গড় রানও কমেছে।
ফলে হোম রানের ওজন বেড়ে যায়। ২০১৫ সালের পর থেকে প্লে-
অফে হওয়া সব রানের ৪৭ শতাংশ এসেছে হোম রান থেকে, যেখানে নিয়মিত মৌসুমে তা ছিল ৪১ শতাংশ। তাই অ্যারন জাজ, শোহেই ওতানি বা ক্যাল র্যালির মতো খেলোয়াড়রা এক আঘাতে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম।
শক্তির সমীকরণ: ইয়াঙ্কিস, ডজার্স, মেরিনার্স
ইয়াঙ্কিসের হয়ে সাতজন খেলোয়াড় ২০–এর বেশি হোম রান করেছেন, যা এমএলবিতে সর্বাধিক। ডজার্সের হয়ে অন্তত ১০ জন খেলোয়াড় ১০–এর বেশি হোম রান করেছেন, যার মধ্যে শোহেই ওতানি করেছেন ৫৫টি।
মেরিনার্সও নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে। মৌসুমের প্রথমার্ধে তারা ছিল ষষ্ঠ স্থানে, কিন্তু ট্রেড উইন্ডোতে ইউজেনিও সুয়ারেজ ও জশ নেলারকে দলে ভিড়িয়ে তারা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। দলের প্রেসিডেন্ট জেরি ডিপোটো বলেন, “আমাদের পরিচয়—আমরা হোম রান করি, আমরা দ্রুতগতির, আমরা বেস চুরি করি—আর আমরা বল গ্যালারিতে পাঠাই।”

সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















