০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
পেন্টাগনের হেগসেথের অনুমোদন, মার্কিন নৌবাহিনীর পরবর্তী প্রজন্মের ফাইটার বিমান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৩১) ১৯ বছরে দৃষ্টিসেবায় ব্র্যাকের অগ্রযাত্রা: সারা দেশে পৌঁছেছে ১ কোটি ৭৭ লাখ মানুষ টানা তিন দিনে শেয়ারবাজারে পতন, কমেছে লেনদেনের পরিমাণ গাজা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক উদ্ধার: যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও জর্ডানের যৌথ অপারেশন ঢাবি ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগে হোস্টেল ম্যানেজার গ্রেফতার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রিকেট কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনায় বিসিবি চট্টগ্রামে হেফাজত নেতার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু: ন্যায়বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ‘অপহৃত’: ফ্লোটিলায় আটক ফটোগ্রাফার শহিদুল আলম সরকারি হস্তক্ষেপ, ই-ভোটিং বিতর্ক ও ক্লাব বয়কটে নতুন সংকটে ঘরোয়া ক্রিকেট

 ধর্ষণ মামলার হাজারো ডিএনএ ‘ম্যাচ’ কার্যকর হয় না: নতুন নির্দেশনা থাকলেও মিল হারিয়ে যায়, ফাইলবন্দি থাকে বা উপেক্ষিত হয়

ডিএনএ ‘ম্যাচ’ ধর্ষণ মামলায় শক্ত প্রমাণ হলেও, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বহু সংস্থায় নোটিফিকেশন হারিয়ে যাওয়া, জনবল ঘাটতি, ধীরগতি ও দুর্বল জবাবদিহির কারণে এগুলোর বড় অংশই তদন্তে রূপ পায় না—ফলে সন্দেহভাজনরা দীর্ঘদিন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে এবং ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়।

ধর্ষণকাণ্ডে সংগৃহীত পরীক্ষা-নিরীক্ষার (সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট কিট) ডিএনএ নমুনা অপরাধীদের শনাক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে। জাতীয় ডাটাবেসে (কোডিস) পাওয়া ডিএনএ ‘ম্যাচ’ অপরাধীর নাম বা সংশ্লিষ্ট অন্য অপরাধের সঙ্গে সংযোগ দেখাতে পারলেও, রাজ্য ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো সময়মতো জানলে এবং ব্যবস্থা নিলে তবেই তা ফল দেয়। এক বছর আগে প্রকাশিত অনুসন্ধানের পর মার্কিন বিচার বিভাগ সংস্থাগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে; কিন্তু বাস্তবে বহু ‘ম্যাচ’ এখনো হারিয়ে যাচ্ছে, শেলফে পড়ে থাকছে বা সম্পূর্ণই নজর এড়াচ্ছে—ফলে মামলার অগ্রগতি থমকে আছে।

পটভূমি: অনুদান আছে, ফল নেই

২০১৫ সাল থেকে যৌন সহিংসতার কিট পরীক্ষায় সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় অনুদান কর্মসূচি চালু হলেও বহু সংস্থায় পুরনো সমস্যাই রয়ে গেছে—অসংখ্য কিট অনপরীক্ষিত, পুলিশ/প্রসিকিউশনের খাপছাড়া পর্যালোচনা, আর ভুক্তভোগীদের নিজের শরীর থেকে সংগৃহীত প্রমাণের খোঁজখবর না দেওয়া। সারাদেশে কাজ করা বেসরকারি ফরেনসিক ল্যাবগুলো মাসে হাজারো কেস সামলায়; তবু কেস অগ্রগতির জায়গায় বড় ফাঁক থেকেই যায়।

নতুন নির্দেশনা: কী করতে বলছে বিচার বিভাগ

• লিখিত নীতিমালা: পূর্বে অনপরীক্ষিত কিট থেকে পাওয়া ‘ম্যাচ’ এলে কোন বিভাগ কী করবে—আশা, দায়িত্ব ও ভূমিকা লিখে নীতিমালা করতে বলা হয়েছে।
• ডিজিটাল নোটিফিকেশন: ‘ম্যাচ’ সম্পর্কে জানানো হবে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবস্থায় এবং তা কেস ফাইলে থাকবে; শুধু ডাকযোগে বা ব্যক্তিগত ইমেইলে পাঠিয়ে হারিয়ে ফেলা যাবে না।

Senator Beth Mizell of Louisiana, shown on the senate floor in Baton Rouge in this file photo, wants police and prosecutors to follow up on DNA matches from previously untested rape kits.
• সময়সীমা নির্ধারণ: কেসে ডিটেকটিভ নিয়োগ, তদন্ত শুরু এবং কাজ না হলে ঊর্ধ্বতনদের স্বয়ংক্রিয় ইমেইল সতর্কবার্তার সময়সীমা ঠিক করার কথা বলা হয়েছে।
• বহুস্তরীয় জবাবদিহি: সতর্কবার্তা—বহুস্তরীয় জবাবদিহি না থাকলে কোডিস ‘হিট’ অনায়াসে মিস হয়ে যেতে পারে, বরাদ্দ না পেতে পারে বা ফাইলবন্দি থেকে যেতে পারে।

কেন ‘ম্যাচ’ কাজে লাগছে না

রিপোর্টের মতে, হাজারো কেসের ডিএনএ ‘হিট’ এখনো শেলফে, উপেক্ষিত বা পুরোপুরি নজরের বাইরে। নোটিফিকেশন হারিয়ে যাওয়া, জনবল ঘাটতি, কর্তৃত্বসীমা নিয়ে ধীরগতি বা তদন্ত-জট—সব মিলিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ আটকে যায়। ফলে ডিএনএ-চিহ্নিত সন্দেহভাজনরা দীর্ঘদিন ধরাই পড়ে না।

কেস স্টাডি: লুইজিয়ানার চিত্র

যৌন সহিংসতা ও হত্যাসহ অন্তত ২,৪০০ অপরাধে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ থেকে গেছে, তবু ধরা পড়েনি—এমন তথ্য রাজ্য পুলিশ ক্রাইম ল্যাবের এক কর্মকর্তার ইমেইলে আইনপ্রণেতাদের জানানো হয়। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ পার্শ্ববর্তী একটি বড় কাউন্টি তাদের সংখ্যা জানায়নি। ফলো-আপ না-থাকার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি, প্রশাসনিক-অধিক্ষেত্রগত বিলম্ব ও তদন্তের ব্যাকলগ। রাজ্যের এক সিনেটর বলেন, কিটের প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ গঠনই ন্যায়ের প্রথম ধাপ; পুলিশ ও প্রসিকিউটরদের আরও ভালো করতে হবে।

দণ্ডিতের হার অত্যন্ত কম

Rapes go unsolved because DNA test results are lost in the mail

বিভিন্ন প্রাপকের ওপর করা বিশ্লেষণে দেখা গেছে—জাতীয় ডাটাবেসে ডিএনএ ‘ম্যাচ’ থাকা ধর্ষণ মামলার সন্দেহভাজনদের ১০ শতাংশেরও কম শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। অর্থাৎ ‘ম্যাচ’ পেলেও তা মামলার বাস্তব অগ্রগতিতে খুব কমই রূপান্তরিত হচ্ছে।

অনুদান থাকলেও বাধ্যবাধকতা শিথিল

যে কেন্দ্রীয় অনুদান (সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট কিট ইনিশিয়েটিভ) দেওয়া হয়, গ্রহীতা সংস্থাগুলোর তা খরচ করার বাধ্যবাধকতা নেই—কিট অনপরীক্ষিত রয়ে গেলেও এবং অপরাধীরা মুক্ত থাকলেও। কোথাও কোথাও অনুদান ফেরতও গেছে। পরীক্ষা, ভুক্তভোগীকে জানানো বা তদন্ত—কোনো ক্ষেত্রেই স্পষ্ট বাধ্যতামূলক মাপকাঠি ধরা নেই। সরকার গবেষণা সংস্থার মাধ্যমে ‘সেরা অনুশীলন’ ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে—কোথায় ঘাটতি, কীভাবে ঠিক হবে—এসব নিয়ে নির্দেশিকা থাকলেও মাঠপর্যায়ে তা বাস্তবায়নের কড়া শর্ত বা শাস্তিমূলক ধারা অনুপস্থিত।

ভুক্তভোগীকে না-জানানোর প্রবণতা

আগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডিএনএ ‘ম্যাচ’ হলেও বহু সংস্থা ভুক্তভোগীদের জানান না। ৪২টি নীতি-নথির মধ্যে মাত্র অল্প কয়েকটিতে প্রায় সবাইকে জানানোর সুপারিশ আছে; বেশ কয়েকটি নীতিতে বলা—তদন্ত/মোকদ্দমা চালানোর সম্ভাবনা দেখলেই কেবল জানানো হবে। বিশ্লেষিত কিছু সংস্থায় পরীক্ষার ফল শেয়ার করার হার খুব কম: কোথাও প্রতি ২টি কিটে ১ জনকে জানানো হলেও, অনেক জায়গায় ১৫টি কিটে ১ জন, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ৪৩টি কিটে ১ জনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। কিছু পুলিশ বিভাগ বলেছে—ডিএনএ পরীক্ষায় সন্দেহভাজনের নাম পেলেও মামলা না এগোনোর সিদ্ধান্তে ভুক্তভোগীকে জানানো হয়নি, যেন পুনরায় মানসিক আঘাত না লাগে। নতুন ফেডারেল নির্দেশনা বলছে—সংস্থার নিজস্ব প্রোটোকল অনুযায়ী ‘ম্যাচ’-এর খবর জানাও; তবে প্রোটোকল কী হবে—তা নির্দিষ্ট করে দেয়নি। জানাতে হলে কেন তা তদন্তে প্রাসঙ্গিক—সহজ ভাষায় বোঝাতে এবং পুরো প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীকে সহায়তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

মানবিক মুখ: কিম বার্গম্যানের অভিজ্ঞতা

Local law-enforcement agencies to receive funding to expand storage of sexual-assault kits | The Seattle Times

কলেজ পার্টিতে অচেতন হয়ে পড়ার পর ২০০৫ সালে কিম বার্গম্যান হাসপাতালে কিট করান; পুলিশ বা হাসপাতাল—কারও কাছ থেকেই তিনি আর কোনো খবর পাননি। বহু বছর পর তিনি জানতে পারেন—তার কিট পরীক্ষা হয়েছিল, ফল নেগেটিভ; কিন্তু তাকেও তা জানানো হয়নি। তার মতে, ফল যাই হোক, জানানো উচিত ছিল—কারণ সেটি কাউন্সেলিং বা সহায়তার সুযোগ তৈরি করতে পারত। ডিএনএ ‘হিট’ না-থাকলেই যে কিছু ঘটেনি—এমন নয়; আর যৌন সহিংসতায় অনেক অপরাধী একবারে থেমে থাকে না। তাই সম্ভাব্য যেকোনো পদক্ষেপ—রেজিস্ট্রিতে তোলা থেকে শুরু করে আইনগত ব্যবস্থা—যা করা সম্ভব, তা করা দরকার।

সমাধানের পথ: কী করা প্রয়োজন

• বাধ্যতামূলক মানদণ্ড: কিট পরীক্ষা, ফল নোটিফিকেশন ও তদন্তের জন্য স্পষ্ট জাতীয় মাপকাঠি এবং না-মানলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
• ট্র্যাকিং ও স্বচ্ছতা: ডিজিটাল কেস ট্র্যাকিং, টাইমলাইন, এবং ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের স্বয়ংক্রিয় নজরদারি।
• ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক যোগাযোগ: ফল যাই হোক, ভুক্তভোগীকে জানানো—সহায়তা, কাউন্সেলিং ও নিরাপত্তা-পরিকল্পনা সহ।
• সক্ষমতা বৃদ্ধি: জনবল, প্রশিক্ষণ, ফরেনসিক ল্যাব-ক্ষমতা ও আন্তঃসংস্থাগত সমন্বয় বাড়ানো।
• ডেটা-চালিত জবাবদিহি: কোন ‘ম্যাচ’ কবে এসেছে, কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—এর স্বচ্ছ ড্যাশবোর্ড ও নিয়মিত অডিট।

উপসংহার

ডিএনএ ‘ম্যাচ’ ধর্ষণ মামলার শক্তিশালী প্রমাণ হলেও, মাঠপর্যায়ে জবাবদিহি ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা না থাকলে এর কার্যকারিতা হারিয়ে যায়। নীতিমালা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড, সময়সীমা, ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক নোটিফিকেশন এবং শক্ত ট্র্যাকিং না আনা পর্যন্ত হাজারো ‘হিট’ কাগজেই আটকে থাকবে—আর ন্যায়বিচার হবে বিলম্বিত।

#ধর্ষণ_মামলা #ডিএনএ #কোডিস #যৌনসহিংসতা #ফরেনসিক #জবাবদিহি #যুক্তরাষ্ট্র #ভুক্তভোগী_অধিকার #তদন্ত #আইনশৃঙ্খলা

জনপ্রিয় সংবাদ

পেন্টাগনের হেগসেথের অনুমোদন, মার্কিন নৌবাহিনীর পরবর্তী প্রজন্মের ফাইটার বিমান

 ধর্ষণ মামলার হাজারো ডিএনএ ‘ম্যাচ’ কার্যকর হয় না: নতুন নির্দেশনা থাকলেও মিল হারিয়ে যায়, ফাইলবন্দি থাকে বা উপেক্ষিত হয়

০৬:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

ডিএনএ ‘ম্যাচ’ ধর্ষণ মামলায় শক্ত প্রমাণ হলেও, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বহু সংস্থায় নোটিফিকেশন হারিয়ে যাওয়া, জনবল ঘাটতি, ধীরগতি ও দুর্বল জবাবদিহির কারণে এগুলোর বড় অংশই তদন্তে রূপ পায় না—ফলে সন্দেহভাজনরা দীর্ঘদিন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে এবং ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়।

ধর্ষণকাণ্ডে সংগৃহীত পরীক্ষা-নিরীক্ষার (সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট কিট) ডিএনএ নমুনা অপরাধীদের শনাক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে। জাতীয় ডাটাবেসে (কোডিস) পাওয়া ডিএনএ ‘ম্যাচ’ অপরাধীর নাম বা সংশ্লিষ্ট অন্য অপরাধের সঙ্গে সংযোগ দেখাতে পারলেও, রাজ্য ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো সময়মতো জানলে এবং ব্যবস্থা নিলে তবেই তা ফল দেয়। এক বছর আগে প্রকাশিত অনুসন্ধানের পর মার্কিন বিচার বিভাগ সংস্থাগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে; কিন্তু বাস্তবে বহু ‘ম্যাচ’ এখনো হারিয়ে যাচ্ছে, শেলফে পড়ে থাকছে বা সম্পূর্ণই নজর এড়াচ্ছে—ফলে মামলার অগ্রগতি থমকে আছে।

পটভূমি: অনুদান আছে, ফল নেই

২০১৫ সাল থেকে যৌন সহিংসতার কিট পরীক্ষায় সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় অনুদান কর্মসূচি চালু হলেও বহু সংস্থায় পুরনো সমস্যাই রয়ে গেছে—অসংখ্য কিট অনপরীক্ষিত, পুলিশ/প্রসিকিউশনের খাপছাড়া পর্যালোচনা, আর ভুক্তভোগীদের নিজের শরীর থেকে সংগৃহীত প্রমাণের খোঁজখবর না দেওয়া। সারাদেশে কাজ করা বেসরকারি ফরেনসিক ল্যাবগুলো মাসে হাজারো কেস সামলায়; তবু কেস অগ্রগতির জায়গায় বড় ফাঁক থেকেই যায়।

নতুন নির্দেশনা: কী করতে বলছে বিচার বিভাগ

• লিখিত নীতিমালা: পূর্বে অনপরীক্ষিত কিট থেকে পাওয়া ‘ম্যাচ’ এলে কোন বিভাগ কী করবে—আশা, দায়িত্ব ও ভূমিকা লিখে নীতিমালা করতে বলা হয়েছে।
• ডিজিটাল নোটিফিকেশন: ‘ম্যাচ’ সম্পর্কে জানানো হবে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবস্থায় এবং তা কেস ফাইলে থাকবে; শুধু ডাকযোগে বা ব্যক্তিগত ইমেইলে পাঠিয়ে হারিয়ে ফেলা যাবে না।

Senator Beth Mizell of Louisiana, shown on the senate floor in Baton Rouge in this file photo, wants police and prosecutors to follow up on DNA matches from previously untested rape kits.
• সময়সীমা নির্ধারণ: কেসে ডিটেকটিভ নিয়োগ, তদন্ত শুরু এবং কাজ না হলে ঊর্ধ্বতনদের স্বয়ংক্রিয় ইমেইল সতর্কবার্তার সময়সীমা ঠিক করার কথা বলা হয়েছে।
• বহুস্তরীয় জবাবদিহি: সতর্কবার্তা—বহুস্তরীয় জবাবদিহি না থাকলে কোডিস ‘হিট’ অনায়াসে মিস হয়ে যেতে পারে, বরাদ্দ না পেতে পারে বা ফাইলবন্দি থেকে যেতে পারে।

কেন ‘ম্যাচ’ কাজে লাগছে না

রিপোর্টের মতে, হাজারো কেসের ডিএনএ ‘হিট’ এখনো শেলফে, উপেক্ষিত বা পুরোপুরি নজরের বাইরে। নোটিফিকেশন হারিয়ে যাওয়া, জনবল ঘাটতি, কর্তৃত্বসীমা নিয়ে ধীরগতি বা তদন্ত-জট—সব মিলিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ আটকে যায়। ফলে ডিএনএ-চিহ্নিত সন্দেহভাজনরা দীর্ঘদিন ধরাই পড়ে না।

কেস স্টাডি: লুইজিয়ানার চিত্র

যৌন সহিংসতা ও হত্যাসহ অন্তত ২,৪০০ অপরাধে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ থেকে গেছে, তবু ধরা পড়েনি—এমন তথ্য রাজ্য পুলিশ ক্রাইম ল্যাবের এক কর্মকর্তার ইমেইলে আইনপ্রণেতাদের জানানো হয়। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ পার্শ্ববর্তী একটি বড় কাউন্টি তাদের সংখ্যা জানায়নি। ফলো-আপ না-থাকার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি, প্রশাসনিক-অধিক্ষেত্রগত বিলম্ব ও তদন্তের ব্যাকলগ। রাজ্যের এক সিনেটর বলেন, কিটের প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ গঠনই ন্যায়ের প্রথম ধাপ; পুলিশ ও প্রসিকিউটরদের আরও ভালো করতে হবে।

দণ্ডিতের হার অত্যন্ত কম

Rapes go unsolved because DNA test results are lost in the mail

বিভিন্ন প্রাপকের ওপর করা বিশ্লেষণে দেখা গেছে—জাতীয় ডাটাবেসে ডিএনএ ‘ম্যাচ’ থাকা ধর্ষণ মামলার সন্দেহভাজনদের ১০ শতাংশেরও কম শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। অর্থাৎ ‘ম্যাচ’ পেলেও তা মামলার বাস্তব অগ্রগতিতে খুব কমই রূপান্তরিত হচ্ছে।

অনুদান থাকলেও বাধ্যবাধকতা শিথিল

যে কেন্দ্রীয় অনুদান (সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট কিট ইনিশিয়েটিভ) দেওয়া হয়, গ্রহীতা সংস্থাগুলোর তা খরচ করার বাধ্যবাধকতা নেই—কিট অনপরীক্ষিত রয়ে গেলেও এবং অপরাধীরা মুক্ত থাকলেও। কোথাও কোথাও অনুদান ফেরতও গেছে। পরীক্ষা, ভুক্তভোগীকে জানানো বা তদন্ত—কোনো ক্ষেত্রেই স্পষ্ট বাধ্যতামূলক মাপকাঠি ধরা নেই। সরকার গবেষণা সংস্থার মাধ্যমে ‘সেরা অনুশীলন’ ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে—কোথায় ঘাটতি, কীভাবে ঠিক হবে—এসব নিয়ে নির্দেশিকা থাকলেও মাঠপর্যায়ে তা বাস্তবায়নের কড়া শর্ত বা শাস্তিমূলক ধারা অনুপস্থিত।

ভুক্তভোগীকে না-জানানোর প্রবণতা

আগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডিএনএ ‘ম্যাচ’ হলেও বহু সংস্থা ভুক্তভোগীদের জানান না। ৪২টি নীতি-নথির মধ্যে মাত্র অল্প কয়েকটিতে প্রায় সবাইকে জানানোর সুপারিশ আছে; বেশ কয়েকটি নীতিতে বলা—তদন্ত/মোকদ্দমা চালানোর সম্ভাবনা দেখলেই কেবল জানানো হবে। বিশ্লেষিত কিছু সংস্থায় পরীক্ষার ফল শেয়ার করার হার খুব কম: কোথাও প্রতি ২টি কিটে ১ জনকে জানানো হলেও, অনেক জায়গায় ১৫টি কিটে ১ জন, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ৪৩টি কিটে ১ জনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। কিছু পুলিশ বিভাগ বলেছে—ডিএনএ পরীক্ষায় সন্দেহভাজনের নাম পেলেও মামলা না এগোনোর সিদ্ধান্তে ভুক্তভোগীকে জানানো হয়নি, যেন পুনরায় মানসিক আঘাত না লাগে। নতুন ফেডারেল নির্দেশনা বলছে—সংস্থার নিজস্ব প্রোটোকল অনুযায়ী ‘ম্যাচ’-এর খবর জানাও; তবে প্রোটোকল কী হবে—তা নির্দিষ্ট করে দেয়নি। জানাতে হলে কেন তা তদন্তে প্রাসঙ্গিক—সহজ ভাষায় বোঝাতে এবং পুরো প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীকে সহায়তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

মানবিক মুখ: কিম বার্গম্যানের অভিজ্ঞতা

Local law-enforcement agencies to receive funding to expand storage of sexual-assault kits | The Seattle Times

কলেজ পার্টিতে অচেতন হয়ে পড়ার পর ২০০৫ সালে কিম বার্গম্যান হাসপাতালে কিট করান; পুলিশ বা হাসপাতাল—কারও কাছ থেকেই তিনি আর কোনো খবর পাননি। বহু বছর পর তিনি জানতে পারেন—তার কিট পরীক্ষা হয়েছিল, ফল নেগেটিভ; কিন্তু তাকেও তা জানানো হয়নি। তার মতে, ফল যাই হোক, জানানো উচিত ছিল—কারণ সেটি কাউন্সেলিং বা সহায়তার সুযোগ তৈরি করতে পারত। ডিএনএ ‘হিট’ না-থাকলেই যে কিছু ঘটেনি—এমন নয়; আর যৌন সহিংসতায় অনেক অপরাধী একবারে থেমে থাকে না। তাই সম্ভাব্য যেকোনো পদক্ষেপ—রেজিস্ট্রিতে তোলা থেকে শুরু করে আইনগত ব্যবস্থা—যা করা সম্ভব, তা করা দরকার।

সমাধানের পথ: কী করা প্রয়োজন

• বাধ্যতামূলক মানদণ্ড: কিট পরীক্ষা, ফল নোটিফিকেশন ও তদন্তের জন্য স্পষ্ট জাতীয় মাপকাঠি এবং না-মানলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
• ট্র্যাকিং ও স্বচ্ছতা: ডিজিটাল কেস ট্র্যাকিং, টাইমলাইন, এবং ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের স্বয়ংক্রিয় নজরদারি।
• ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক যোগাযোগ: ফল যাই হোক, ভুক্তভোগীকে জানানো—সহায়তা, কাউন্সেলিং ও নিরাপত্তা-পরিকল্পনা সহ।
• সক্ষমতা বৃদ্ধি: জনবল, প্রশিক্ষণ, ফরেনসিক ল্যাব-ক্ষমতা ও আন্তঃসংস্থাগত সমন্বয় বাড়ানো।
• ডেটা-চালিত জবাবদিহি: কোন ‘ম্যাচ’ কবে এসেছে, কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—এর স্বচ্ছ ড্যাশবোর্ড ও নিয়মিত অডিট।

উপসংহার

ডিএনএ ‘ম্যাচ’ ধর্ষণ মামলার শক্তিশালী প্রমাণ হলেও, মাঠপর্যায়ে জবাবদিহি ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা না থাকলে এর কার্যকারিতা হারিয়ে যায়। নীতিমালা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড, সময়সীমা, ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক নোটিফিকেশন এবং শক্ত ট্র্যাকিং না আনা পর্যন্ত হাজারো ‘হিট’ কাগজেই আটকে থাকবে—আর ন্যায়বিচার হবে বিলম্বিত।

#ধর্ষণ_মামলা #ডিএনএ #কোডিস #যৌনসহিংসতা #ফরেনসিক #জবাবদিহি #যুক্তরাষ্ট্র #ভুক্তভোগী_অধিকার #তদন্ত #আইনশৃঙ্খলা